‘মৃত্যুর ছলনা ও মিথ্যা আশ্বাসের প্রতারণা যে বুঝিতে পারে সে-ই শান্তির অক্ষয় অধিকার লাভ করে।’ - ২০১৭
‘রূপনারানের কূলে’ কবিতা অনুসরণে মন্তব্যটির সার্থকতা বিচার কর।
🔘 কবির নতুন চেতনার জন্ম :
কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবনের শেষ প্রান্তে এসে এক নতুন চেতনায় জাগ্রত হয়েছেন। জীবন মৃত্যুর স্বরূপ সম্বন্ধে তাঁর ভাবনা এই সময় পূর্ণতা পেয়েছে। সেই পূর্ণতার প্রতিচ্ছবি রয়েছে ‘রূপনারানের কূলে’ কবিতার সম্পূর্ণ স্তবক জুড়ে।
🔘 সার্থকতা বিচার :
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের রক্তাক্ত পরিস্থিতিতে কবি নতুন করে আবিষ্কার করেছেন নিজেকে এবং এই বিশ্ব জগতকে। তাই বলেছেন,রক্তের অক্ষরে দেখিলাম
আপনার রূপ,
চিনিলাম আপনারে
দেখেছেন জগৎজুড়ে মৃত্যুর বিভীষিকা, আর মিথ্যা আশ্বাস কীভাবে জগৎ ও জীবনকে বিভীষিকাময় করে তোলে। তাই তার কাছে মৃত্যু আসলে ছলনাময়ী, মিথ্যা আশ্বাসে সে প্রতিনিয়ত প্রতারণা করে চলেছে মানুষকে। তার কাছে সময় অসময় বলে যেন কিছু নেই। কখন, কীভাবে, কেন আসবে, সে জানায় না কখনও। ফলে এক অনিশ্চিত জীবনের কিনারায় দাঁড়িয়ে মানুষকে যন্ত্রণাকাতর হয়ে থাকতে হয়।
কিন্তু জীবনসায়ান্হে কবি উপলব্ধি করেছেন, এ জগত স্বপ্ন নয়, কঠিন বাস্তব, এবং চিরসত্য। এই কঠিন সত্যকে ভালবাসলে মানুষকে মৃত্যুর ছলনা ও মিথ্যা আশ্বাসের দ্বারা প্রতারিত হতে হয় না। কারণ,
সে কখনো করে না বঞ্চনা
কবি তাই বলছেন, আমৃত্যু দুঃখের তপস্যাই হল এ জীবন। এটাই সেই দারুন সত্য, যা মানুষকে লাভ করতে হয়, জীবনের দেনা শোধ করার জন্য। যে পারে, সে-ই ‘শান্তির অক্ষয় অধিকার লাভ করে’।
🔘 উপসংহার :
সুতরাং উদ্ধৃত মন্তব্যটি কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘রূপনারানের কূলে’ কবিতার পরিপ্রেক্ষিতে সার্থক হয়ে উঠেছে।
------শেষ-----
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন