সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

প্রবন্ধ রচনা লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

ভারতের জাতীয় সংহতি ও বিছিন্নতাবাদ

ভারতের জাতীয় সংহতি ও বিছিন্নতাবাদ নানা ভাষা, নানা মত, নানা পরিধান, বিবিধের মাঝে দেখ মিলন মহান্ — অতুল প্রসাদ সেন  ভূমিকা : জাতীয় সংহতি হল একটি দেশের নাগরিকদের মধ্যে একটি সাধারণ পরিচয় সম্পর্কে সচেতনতা। এর অর্থ হল, আমাদের মধ্যে জাতি, ধর্ম, বর্ণ এবং ভাষাগত পার্থক্য থাকলেও, আমরা এই সত্যকে স্বীকার করি যে, আমরা সবাই এক। এটি কেবল একটি জাতীয় অনুভূতি নয়, এটা সেই চেতনা যা সমস্ত উপভাষা ও বিশ্বাসের মানুষকে একই প্রচেষ্টায় একত্রিত করে। জাতীয় একীকরণের সংজ্ঞা: ডাঃ এস. রাধাকৃষ্ণ বলেছেন, national integration cannot be made by bricks and mortar, mould and hammer, but it quietly grows in people’s minds through education.1️⃣ এইচ এ গণি সংজ্ঞায়িত করেছেন, “National integration is a socio-psychological and educational process through which a feeling of unity and harmony develops in the hearts of the people and a sense of common citizenship or feeling of loyalty to the nation is fostered among them”2️⃣ এককথায়, জাতীয় সংহতির ধারণার মধ্যে রয়েছে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং মনস্তাত্ত্বিক

বাংলার ঋতুরঙ্গ বা বাংলা ঋতু বৈচিত্র্য

 বাংলার ঋতুরঙ্গ বা ঋতু বৈচিত্র্য বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাই না আর। — জীবনানন্দ দাস ভূমিকা : ঋতুবৈচিত্র্যের বর্ণিল উপস্থিতিতে বাংলাদেশের প্রকৃতি পরিপূর্ণ। সুজলা-সুফলা-শস্য-শ্যামলা এই বাংলার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল এর বৈচিত্র্যময় ঋতুরূপ। ভিন্ন ভিন্ন রূপ-রস-গন্ধ নিয়ে পর্যায়ক্রমে ছয়টি ঋতু ঘুরে ফিরে আসে এই বাংলায়। প্রতিটি ঋতুই স্বতন্ত্র সৌন্দর্যে অপরূপা। বাংলা প্রকৃতির এই অপরূপ রূপে মুগ্ধ হয়ে জীবনানন্দ দাশ একে ‘ রূপসী বাংলা ’ বলে অভিহিত করেছেন। ঋতু বৈচিত্রের কারণ : বাংলাদেশ  কর্কটক্রান্তি রেখার ওপর অবস্থিত। এখানকার আবহাওয়াতে তাই নিরক্ষীয় প্রভাব দেখা যায়। এখানেই রয়েছে বাংলার ঋতু বৈচিত্রের মূল চাবিকাঠি।  নভেম্বর হতে মার্চ পর্যন্ত এখানে হালকা শীত অনুভূত হয়। মার্চ হতে জুন মাস পর্যন্ত গ্রীষ্মকাল চলে। জুন হতে অক্টোবর পর্যন্ত চলে বর্ষা মৌসুম। এসময় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে হয় প্রচুর বৃষ্টিপাত। ছয় ঋতুর ‘রূপসী বাংলা’ : বাংলার এই ছটি ঋতু যেন বিনি সুতোয় গাঁথা মালার মতো। এই মেলায় পর পর গাঁথা আছে গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও ঋতুরাজ বসন্ত। প্রতি দুই মাস অন্তর

প্রবন্ধ : ভগিনী নিবেদিতা

ভগিনী নিবেদিতা ভূমিকা : ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে ভগিনী নিবেদিতার নাম। পৈত্রিক সূত্রে তিনি ছিলেন স্কচ। আধুনিক ভারতবর্ষের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মনীষী ও ধর্মনেতা স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি ভারতবর্ষে আসেন। ব্রহ্মচর্যে দীক্ষা নেন। ভারতে সমাজ সেবা ও নারী শিক্ষার প্রসারেও নিবেদিতার ভূমিকা ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। জন্ম ও বংশ পরিচয় : ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দের ২৮ অক্টোবর উত্তর আয়ারল্যান্ডের ডানগ্যানন শহরে মার্গারেট এলিজাবেথ নোবেল জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর বাবা স্যামুয়েল রিচমন্ড নোবেল ছিলেন ধর্মযাজক। মায়ের নাম মেরি ইসাবেলা। মাত্র দশ বছর বয়সে মার্গারেটের বাবা মারা যান। তারপর তাঁর দাদামশাই তথা আয়ারল্যান্ডের বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী হ্যামিলটন তাঁকে লালনপালন করেন। শিক্ষাজীবন : মার্গারেট লন্ডনের চার্চ বোর্ডিং স্কুলে পড়াশোনা করেছিলেন। এরপর হ্যালিফ্যাক্স কলেজে তিনি ও তাঁর বোন মেরি পড়াশোনা করেছিলেন। কর্মজীবন : ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে, সতেরো বছর বয়সে শিক্ষাজীবন শেষ করে মার্গারেট শিক্ষিকার পেশা গ্রহণ করেন। দু’বছরের জন্যে কেসউইকের একটি প্রাইভেট স্কুলে পড়ান। এরপরে একে

ছাত্র জীবনে সৌজন্য ও শিষ্টাচার

ছাত্র জীবনের সৌজন্য ও শিষ্টাচার মানব জীবনে শিষ্টাচার, ভদ্রতা ও সৌজন্যবোধের গুরুত্ব ও তাৎপর্য ভদ্রতা আত্মীয়তার চেয়ে কিছু কম এবং সামাজিকতার চেয়ে কিছু বেশি। - ইন্দিরাদেবী চৌধুরাণী ভূমিকা? ইংরেজীতে যাকে বলে Etiquette; good manners; formality; বাংলায় তাকেই বলে শিষ্টাচার। মানবজীবনের অত্যাবশ্যক গুণাবলির অন্যতম হল এই সৌজন্য ও শিষ্টাচার। দেহের সৌন্দর্ৎ বৃদ্ধি পায় যেমন অলঙ্কারে, তেমনি আত্মার সৌন্দর্য বাড়ে শিষ্টাচারে। অলঙ্কার বাইরের সামগ্রী আর শিষ্টাচার অন্তরের। এবং সৌজন্যবোধ হলো তার মার্জিত প্রাত্যহিক জীবনচর্চা। সৌজন্য ও শিষ্টাচারের বৈশিষ্ট্য : ১) জীবনবিকাশে র ক্ষেত্রে শিষ্টাচার, ভদ্রতা ও সৌজন্যবোধ অপরিহার্য । চলনে-বলনে, আচরণে, পোশাক-পরিচ্ছদে এবং ব্যক্তিত্ব, আভিজাত্য ও চারিত্রিক দীপ্তি প্রকাশেও এই গুণগুলো ক্রিয়াশীল থাকা জরুরি। ২) ঘরে বাইরে সর্বত্র শিষ্ট ও সৌজন্যমূলক আচরণ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তাই ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে শিষ্টাচার হল একটি অপরিহার্য চারিত্রিক সম্পদ এবং ব্যক্তিগত ও সামাজিক ঐশ্বর্য । ৩) শিষ্টাচার বা সৌজন্যবোধ নিজের অসুবিধা সত্ত্বেয় পরের সুবিধা করে দিতে উৎসুক থাকে। শুধুমাত্র  আত্মস

অরণ্য, অরণ্যপ্রাণী সংরক্ষণ, ও মানব জীবন

 অরণ্য, অরণ্যপ্রাণী সংরক্ষণ, ও মানব জীবন দাও ফিরে সে অরণ্য, লও এ নগর, লও যত লৌহ লৌষ্ট্র কাষ্ঠ ও প্রস্তর হে নবসভ্যতা! - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভূমিকা : ৩ মার্চ বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস। ২০১৩ সালের ২০ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৬৮তম অধিবেশনে ৩ মার্চকে বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস হিসাবে ঘোষণা করা হয়। ২০২৩ সালের  প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘পৃথিবীর অস্তিত্বের জন্য প্রাণীকুল বাঁচাই’। বিশ্বের বন্যপ্রাণী ও উদ্ভিদকুলের প্রতি জনসচেতনতা বৃদ্ধি করাই হল এই দিবসের মূল লক্ষ্য। অরণ্য ও মানব জীবন : সৃষ্টির শুরু থেকেই অরণ্য ছিল মানুষের পরম আত্মীয়, অকৃত্রিম বন্ধু । অরণ্যই দিয়েছে মানুষকে বেঁচে থাকার রসদ। নানা রকম ফলমূল সহ পরিবেশে অক্সিজেন সরবরাহ করে, বাতাসে জলীয় বাষ্প প্রদান ও কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে মানব জীবনকে দিয়েছে সুরক্ষা। শুধু তাই নয়, অনেক জীবের বাসস্থানরূপেও কাজ করে আসছে এই অরণ্য। তাই গাছ কাটা হলে, পরিবেশের ভারসাম্যের পাশাপাশি বাস্তুতন্ত্রও ব্যাহত হয়। সুতরাং অরণ্য ধ্বংস মানেই বাতাসে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাসের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায়। আর এর অবশ্যম্ভাবী পরিণতি হল পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি। এছাড়াও বন্যা,খরা

বিজ্ঞান, বিজ্ঞানমনস্কতা ও কুসংস্কার

 বিজ্ঞান, বিজ্ঞানমনস্কতা ও কুসংস্কার যুক্তিতে মেলায় মুক্তি, বিশ্বাসে বহুদূর — আলী হোসেন    বিজ্ঞান কী? ল্যাটিন শব্দ ‘সায়েন্টিয়া’ থেকে ইংরেজি ‘সায়েন্স’ শব্দটি এসেছে, যার অর্থ হচ্ছে জ্ঞান। বাংলা ভাষায় ‘বিজ্ঞান’ শব্দটির অর্থ ‘বিশেষ জ্ঞান’। প্রকৃত অর্থে, বিজ্ঞান হল প্রকৃতি সম্পর্কিত বিশেষ জ্ঞান, যা পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে পাওয়া যায়। যার ভিত্তিতে প্রাকৃতিক ঘটনাকে ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ করা যায়। এবং যা প্রয়োগ করে কোনো বিষয় সম্পর্কে প্রকৃত সত্যে পৌঁছানো যায়। বিজ্ঞানমনস্কতা কী? বিজ্ঞানমনস্কতা হল এক বিশেষ মানসিকতা যা প্রচলিত বিশ্বাসকে সরিয়ে রেখে মানুষকে যুক্তি, বুদ্ধি ও তথ্য দিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করে প্রকৃত সত্যে পৌঁছাতে উৎসাহিত করে। সত্যে পৌঁছানোর এই পদ্ধতিকে বলে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি।  বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানমনস্কতার উৎপত্তি : মানব সভ্যতার সূচনা লগ্ন থেকেই কিছু মানুষ পার্থিব নানা জটিল সমস্যার সমাধানকল্পে বিশ্বাসের পরিবর্তে কার্যকারণ সম্পর্ককে আশ্রয় করে। অর্থাৎ প্রকৃতিকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রাকৃতিক ঘটনাবলীর ব্যাখ্যা খোঁজার চেষ্টা করে। এদের হাত ধরেই জন্ম

রচনা : মৃণাল সেন

প্রবন্ধ রচনা : মৃণাল সেন ভূমিকা : মৃণাল সেন ছিলেন প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক, চিত্রনাট্যকার ও লেখক। সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে এক বন্ধনীতে উচ্চারিত হতো তার নামও। জন্ম ও শিক্ষাজীবন :  মৃণাল সেন ১৯২৩ সালের ১৪ মে বাংলাদেশের ফরিদপুরে জন্ম । এখানেই তিনি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করেন। এর পর তিনি কলকাতায় চলে আসেন। পদার্থবিদ্যা নিয়ে স্কটিশ চার্চ কলেজে পড়াশোনা করেন এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। প্রাথমিক কর্ম :  কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে তিনি সাংবাদিকতা, ওষুধ বিপণনকারী হিসাবে কাজ শুরু করেন। চল্লিশের দশকে মৃণাল সেন ইন্ডিয়ান পিপলস থিয়েটার অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে যুক্ত হন। এরপর চলচ্চিত্রে শব্দকুশলী হিসেবেও কাজ শুরু করেন। রাজনৈতিক দর্শন :  আজীবন বামপন্থায় বিশ্বাসী মৃণাল সেন দীর্ঘদিন কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়ার সাংস্কৃতিক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরে রাষ্ট্রপতির মনোনীত সদস্য হিসেবে ভারতের পার্লামেন্টের সদস্য হন। ছবি পরিচালনা : বাংলা, ওড়ইয়আ, হিন্দি এবং তেলেগু ভাষায় চলচ্চিত্র পরিচালনা করে তিনি বহুভাষিক চিত্র পরিচালক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। ব

পরিবেশ দূষণের কারণ ও তার প্রতিকার

পরিবেশ দূষণের কারণ ও তার প্রতিকার পরিবেশ দূষণ ঃ প্রাকৃতিক কারণে অথবা মানুষের কার্যকলাপে উদ্ভূত দূষিত পদার্থ পরিবেশকে বিষময় করে তোলে। পরিবেশের প্রাকৃতিক উপাদান, যেমন মাটি, পানি, বায়ু ইত্যাদির ভৌত, রাসায়নিক ও জৈব পরিবর্তন ঘটে যা জীবজগতের উপর ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করে। এটিকে পরিবেশ দূষণ বলে।  পরিবেশ দূষণের কারণ ঃ ১। জনসংখ্যা বৃদ্ধি  :  ক্রমাগত জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে বনজঙ্গল কেটে বসতবাড়ি তৈরি করা হয়। ফলে বৃষ্টিপাত কমে, স্যানিটেশন ব্যবস্থাকে কলুষিত হয়, অধিক খাদ্য উৎপাদন করতে অধিক কীটনাশক ও সার ব্যবহার করতে হয়। ফলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হয়। ২। নগরায়ন : নগরায়নের ফলে কলকারখানা ও গাড়ি বাড়ছে। ফলে কালো ধোঁয়া বায়ু দূষণের সৃষ্টি করছে। গাড়ির হর্ণ থেকে শব্দ দূষণ হচ্ছে। আবার নদীর পানিতে কলকারখানার আবর্জনা মিশে নদীর পানি দূষিত হচ্ছে। কাজের আশায়  শহরে এলে বস্তি গড়ে উঠে। এই বস্তিতে বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন সমস্যা ও ময়লা-আবর্জনা ফেলার অব্যবস্থা ও সচেতনতার অভাব পরিবেশ দূষণ ঘটাচ্ছে।  ৩। জলবায়ু পরিবর্তনে সৃষ্ট সমস্যা  : সমগ্র বিশ্বে জলবায়ুর পরিবর্তনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হচ্ছে। ক

মাইকেল মধুসূদন দত্ত

প্রবন্ধ রচনা : মাইকেল মধুসূদন দত্ত ভূমিকা: মাইকেল মধুসূদন দত্ত একাধারে একজন মহাকবি, নাট্যকার, বাংলাভাষার সনেট প্রবর্তক ও অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক। ১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি যশোর জেলার কপোতাক্ষ নদের তীরে সাগরদাঁড়ি গ্রামে, এক জমিদার বংশে তাঁর জন্ম। পিতা রাজনারায়ণ দত্ত ছিলেন কলকাতার একজন প্রতিষ্ঠিত উকিল। মায়ের নাম জাহ্নবী দেবী। শিক্ষাজীবন : মধুসূদন দত্ত শিক্ষা গ্রহণ পর্ব শুরু হয় মায়ের তত্ত্বাবধানে সাগরদাঁড়ির পাঠশালায়। পরে সাত বছর বয়সে কলকাতা আসেন এবং খিদিরপুর স্কুলে দুবছর পড়ার পর ১৮৩৩ সালে হিন্দু কলেজে ভর্তি হন। সেখানে তিনি বাংলা, সংস্কৃত ও ফারসি ভাষা শেখেন।  এখানে তাঁর সহপাঠী ছিলেন ভূদেব মুখোপাধ্যায়, রাজেন্দ্রলাল মিত্র, রাজনারায়ণ বসু, গৌরদাস বসাক প্রমুখ, যাঁরা পরবর্তী জীবনে স্বস্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। কলেজের পরীক্ষায় তিনি বরাবর বৃত্তি পেতেন। এ সময় নারীশিক্ষা বিষয়ে প্রবন্ধ রচনা করে তিনি স্বর্ণপদক লাভ করেন। এ সময় থেকেই তিনি স্বপ্ন দেখতেন বিলেত যাওয়ার। তাঁর ধারণা ছিল বিলেতে যেতে পারলেই বড় কবি হওয়া যাবে।  এই উদ্দেশ্যেই ১৮৪৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি তিনি খ্রিস্ট ধর্ম গ্র

দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান

দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান Table Of Contents “বিজ্ঞানই সভ্যতার উন্নতির মাপকাঠি। বিজ্ঞানের অগ্রগতি মানেই সমাজের অগ্রগতি।”–আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় ভূমিকা : সভ্যতার আদি লগ্নে মানুষ ছিল অরণ্যচারী ও গুহাবাসী। কালক্রমে তার বুদ্ধির বিকাশ ঘটলো। বুদ্ধি জন্ম দিল চেতনার। এই চেতনার আলোয় উদ্ভাসিত হলো মানবসমাজ। ফলে মানুষ ক্রমে দুরন্ত নদীকে বশ করলো, হার মানালো দুস্তর সমুদ্র ও অনন্ত মহাকাশকে। গড়ে উঠলো মানব সভ্যতার সুরম্য ইমারত। এই গঠনকার্যে যার প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ অবদান রয়েছে, তা হল বিজ্ঞান ও মানুষের বিজ্ঞান চেতনা। বিজ্ঞান কী বিজ্ঞান হলো বিশেষ জ্ঞান বা বিমূর্ত জ্ঞান, বিভিন্ন প্রযুক্তির মধ্যে যার বাস্তব রূপায়ণ ঘটে। উন্নত সভ্যতার মূল চাবিকাঠিই হল বিজ্ঞান। বিজ্ঞানের জয়যাত্রা : যে দিন থেকে মানুষ আগুনের ব্যবহার শিখেছে, চাকা আবিষ্কার করেছে, সেদিন থেকেই শুরু হয়েছে বিজ্ঞানের জয়যাত্রা। শিল্পবিপ্লবের সময়কালে বাষ্পশক্তির আবিষ্কার এই জয়যাত্রাকে করেছে তরান্বিত। এরপর আবিষ্কার হল বিদ্যুৎশক্তি। বিজ্ঞানলক্ষ্মীর সর্বশেষ দুটি শক্তিবর হল পারমাণবিক শক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। এই সব মহার্ঘ্যদানে বলীয়ান