“কঠিনেরে ভালোবাসিলাম”
ক) কবি কঠিনেরে কেন ভালোবেসেছিলেন?
খ) কবি কীভাবে ‘কঠিনেরে’ ভালবেসেছিলেন?
গ) এই ভালোবাসা কবির জীবনে কী প্রাপ্তি এনেছিল?
ঘ) কঠোর দুঃখের তপস্যা করে কবি কীভাবে আত্মস্বরূপ দেখতে পেয়েছেন তা কবিতা অনুসরণে লেখ।
অথবা,
রূপনারানের কূলে কবিতায় কবি রবীন্দ্রনাথ জীবন সায়াহ্নে উপনীত হয়ে যা উপলব্ধি করেছেন, তা নিজের ভাষায় লেখো।
ক) কবি কেন ভালোবেসেছিলেন :
জীবনবাদী কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘শেষ লেখা’ কাব্যগ্রন্থের ১১ সংখ্যক কবিতা ‘রূপনারানের কূলে’। এই কবিতায় কবি জীবনের অমোঘ সত্যকে বা আত্ম স্বরূপ উপলব্ধি করার জন্য ‘কঠিনেরে’ ভালোবেসে ছিলেন।খ) কবি কীভাবে ভালবেসেছিলেন :
জীবন সায়াহ্নে উপনীত হয়ে কবি উপলব্ধি করেছিলেন,জানিলাম এ জগতব্যক্তি জীবনে কবি দুঃসহ আঘাতে বারবার ক্ষতবিক্ষত হয়েছেন। কবির কথায়,
স্বপ্ন নয়।
চিনিলাম আপনারেএভাবে তিনি উপলব্ধি করেছেন, জীবনের একটি অনিবার্য দিক হলো ব্যর্থতা। এই ব্যর্থতাকে সম্বল করেই সত্য উপলব্ধির পথে পাড়ি জামাতে হয়। এ পথ কঠিন ও বন্ধুর। কঠিন ও বন্ধুর পথকে ভালো না বাসতে পারলে জগৎ ও জীবনের প্রকৃত সত্যের সন্ধান পাওয়া যায় না। কবি তাই ‘কঠিন’ সত্যকে ভালোবাসার আলিঙ্গনে আবদ্ধ করে ‘দারুণ’ সত্যকে লাভ করতে চেয়েছিলেন। কবির কথায়,
আঘাতে আঘাতে
বেদনায় বেদনায়;
কঠিনেরে ভালোবাসিলাম
সে কখনো করেনা বঞ্চনা।
এভাবে এবং এই তাগিদেই তিনি ‘কঠিনেরে’ ভালোবেসে ফেলেছিলেন।
গ) ভালোবাসার প্রাপ্তি কী :
এভাবে ‘কঠিনেরে’ ভালবেসে কবি স্বপ্নের জগৎ থেকে ফিরে এসেছিলেন মাটি ও মানুষের টানে। উপলব্ধি করেছিলেন, নিজের স্বরূপ যা প্রকৃতপক্ষে মানব চেতনার যথাযথ রূপ। উপলব্ধি করেছিলেন, কঠোর সত্যের মুখোমুখি দাঁড়ানোর মধ্য দিয়ে মানব জীবন সার্থকতা লাভ করে। কবির কথায়, আমৃত্যু দুঃখের তপস্যাই হল এ জীবন। এই দুঃখের তপস্যার মধ্য দিয়েই ’সত্যের দারুণ মূল্য লাভ’ করা যায়।
আলোচ্য কবিতায়, কবি এভাবে ‘কঠিনেরে ভালোবেসে’ ‘অমৃত্যুর দুঃখের তপস্যার’ মাধ্যমে ‘সত্যের দারুণ মূল্য’ লাভ করেছিলেন। এবং ‘রূপনারানের কূলে’ জেগে উঠে বুঝেছিলেন ‘এ জগত স্বপ্ন নয়’। এভাবে জীবন সায়াহ্নে এসে জীবনের প্রকৃত স্বরূপটি উপলব্ধি পারাই হল কবির কঠিনেরে ভালোবাসার প্রাপ্তি।
ঘ) জীবন সায়াহ্নে কবির উপলব্ধি :
এই প্রশ্নের উত্তর লিখতে ‘ক’ ও ‘খ’ এর উত্তর একসাথে লিখতে হবে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন