সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

শীতের দুঃস্বপ্নের মতো

“শীতের দুঃস্বপ্নের মতো।”

    ক) কার এমন মনে হয়েছে?

    খ) এমন মনে হওয়ার কারণ কী?

    গ) কবি কীভাবে এই দুঃস্বপ্ন থেকে মুক্তি পেতে চেয়েছিলেন?

    ঘ) তিনি কী সত্যিই মুক্তি পেয়েছিলেন ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতা অবলম্বনে লেখো।

    ক) কার মনে হয়েছে :

    নাগরিক কবি সমর সেনের লেখা ‘কয়েকটি কবিতা’ নামাঙ্কিত কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘মহুয়ার দেশ’ নামক কবিতা থেকে উদ্ধৃত অংশটি গৃহীত হয়েছে। এই কবিতায় বর্ণিত নগর জীবনের বিষাক্ত ধোঁয়ায় ঘেরা নগর জীবনের ধূসর পরিবেশ কবির কাছে ‘শীতের দুঃর স্বপ্নের মতো’ বলে মনে হয়েছে।

    খ) এমন মনে হওয়ার কারণ :

    মায়ের সঙ্গে সন্তানের যেমন নাড়ীর সম্পর্ক, প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক ঠিক তেমনি। মায়ের দেহ রস থেকেই সন্তান যেমন মাতৃগর্ভে পুষ্ট হয়, মানুষ তেমনি প্রকৃতির গর্ভে বেড়ে ওঠে এক নিরাপদ বলয়ের মধ্যে থেকে। কিন্তু মায়ের গর্ভের মতো এই প্রকৃতি যদি অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে, তবে মানুষের জন্য তা দুঃস্বপ্নের মত হয়ে দাঁড়ায়।

    অষ্টাদশ শতাব্দীতে ঘটে যাওয়া ইউরোপীয় শিল্পবিপ্লব পুঁজিবাদী সমাজের কাছে মুনাফা লোটার হাতিয়ার হয়ে ওঠে। ফলে শিল্প উন্নয়নের দানবীয় চেহারা ছড়িয়ে পড়ে পৃথিবীময়। শিল্পের হাত ধরে দুর্বার গতিতে বেড়ে ওঠে নগরায়ন। ফলে শিল্প কারখানার ধুলো ও ধোঁয়ায় নগরের পরিবেশ বিষাক্ত হয়ে ওঠে। শীতকালে এই দূষণ ভয়ানক চেহারা নেয়। এই বিষাক্ত ধুলো ও ধোঁয়া শীতের শিশিরকে আশ্রয় করে ধোঁয়াশায় রূপ নেয় এবং তাতেই ভরে যায় চতুর্দিক। কবির কথায়,
    ধোঁয়ার বঙ্কিম নিঃশ্বাস ঘুরে ফিরে ঘরে আসে
    শহর জুড়ে ছড়িয়ে পড়া সেই ‘ধোঁয়ার বঙ্কিম নিঃশ্বাসে’ কবির যেন দম বন্ধ হয়ে আসে। শহর জীবনকে দুঃস্বপ্নের মতো মনে হয়। আর এ কারণেই কবির কাছে এই পরিবেশ ‘শীতের দুঃস্বপ্নের মতো’ বলে মনে হয়েছে।

    গ) এই দুঃস্বপ্ন থেকে কীভাবে মুক্তি :

    নাগরিক কবি এই দুঃস্বপ্ন থেকে মুক্তি পেতে চেয়েছেন। খুঁজেছেন সেই অরণ্যভূমি, যেখানে কবির সারা দিনের ক্লান্তির উপরে ঝরে পড়বে মহুয়া-ফুল এবং নেমে আসবে মহুয়ার গন্ধ। কবির বিশ্বাস ছিল ‘মেঘ-মদির মহুয়ার দেশ’ তাঁর এই স্বপ্নকে সাকার করে তুলবে। পথের দু'ধারে ছায়া ফেলে থাকা দেবদারু বৃক্ষের রহস্যময় শক্তির ছোঁয়ায় আর দূর সমুদ্রের দীর্ঘশ্বাসের মতো মায়াবী সুর রাত্রের নির্জন নিঃসঙ্গতাকে আলোড়িত করার মাধ্যমে এই দুঃস্বপ্ন থেকে মুক্তি আসবে।

    তাই নগর সভ্যতার নাগপাশ থেকে বেরিয়ে অনেক অনেক দূরে মেঘ-মদির মহুয়ার দেশের মহুয়ার ফুল ও গন্ধে নিজেকে ডুবিয়ে দিয়ে ‘ধোঁয়ার বঙ্কিম নিঃশ্বাস’ ঘিরে থাকা দুঃস্বপ্নের ঘর থেকে তিনি মুক্তি পেতে চেয়েছিলেন।

    ঘ) সত্যিই মুক্তি পেয়েছিলেন?

    মহুয়ার দেশে পৌঁছে কবি উপলব্ধি করেছেন এখানকার অরণ্য-জীবনেও লেগেছে বিপর্যয়ের ঢেউ। ধনতান্ত্রিক অর্থ-ব্যবস্থার আগ্রাসনে সেখানকার আদিম সমাজব্যবস্থা আজ প্রায় ধ্বংস হতে বসেছে। অনিন্দ্য সুন্দর প্রাকৃতিক শোভার বক্ষ চিরে নিবিড় অন্ধকারে তাই মাঝে মাঝেই ভেসে আসছে কয়লা খনির ‘গভীর’ ও ‘বিশাল’ শব্দ যা কবির কাছে অসহ্য লাগছে।

    আবার শিশির ভেজা সবুজ সকালে উঠে তিনি বিস্মিত নয়নে দেখছেন, ধুলোর কলঙ্ক মাখা রাতজাগা শ্রমিকের দুঃস্বপ্ন পীড়িত, ক্লান্ত ও অবসন্ন মুখ নিয়ে মহুয়ার দেশ আজ ভারাক্রান্ত। কবির কথায়,
    অবসন্ন মানুষের শরীরে দেখি ধুলোর কলঙ্ক,
    ঘুমহীন তাদের চোখে হানা দেয়
    কীসের ক্লান্ত দুঃস্বপ্ন।
    এভাবে কবিতার প্রথম স্তবকে কবির রোমান্টিক ভাবনায় ‘মেঘ-মদির মহুয়ার দেশ’ নাগরিক জীবনের যান্ত্রিকতা ও একঘেয়েমি থেকে মুক্তির স্বপ্ন দেখলেও, অচিরেই (দ্বিতীয় স্তবকে) তাঁর আশা ভঙ্গ হয়। কারণ, মহুয়ার দেশ কবির রোমান্টিক ভাবনার আড়ালে থাকা ‘অসহ্য নিবিড় অন্ধকারে’ ভরা এক দুঃস্বপ্নের দেশ হয়ে ধরা দেয়।
    ------------xx-----------

    📢 এই কবিতার আরও প্রশ্ন ও উত্তর এখানে

    মন্তব্যসমূহ

    বাংলা বই : দ্বাদশ শ্রেণি - সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর

    মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    প্রবন্ধ রচনা : মাইকেল মধুসূদন দত্ত ভূমিকা: মাইকেল মধুসূদন দত্ত একাধারে একজন মহাকবি, নাট্যকার, বাংলাভাষার সনেট প্রবর্তক ও অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক। ১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি যশোর জেলার কপোতাক্ষ নদের তীরে সাগরদাঁড়ি গ্রামে, এক জমিদার বংশে তাঁর জন্ম। পিতা রাজনারায়ণ দত্ত ছিলেন কলকাতার একজন প্রতিষ্ঠিত উকিল। মায়ের নাম জাহ্নবী দেবী। শিক্ষাজীবন : মধুসূদন দত্ত শিক্ষা গ্রহণ পর্ব শুরু হয় মায়ের তত্ত্বাবধানে সাগরদাঁড়ির পাঠশালায়। পরে সাত বছর বয়সে কলকাতা আসেন এবং খিদিরপুর স্কুলে দুবছর পড়ার পর ১৮৩৩ সালে হিন্দু কলেজে ভর্তি হন। সেখানে তিনি বাংলা, সংস্কৃত ও ফারসি ভাষা শেখেন।  এখানে তাঁর সহপাঠী ছিলেন ভূদেব মুখোপাধ্যায়, রাজেন্দ্রলাল মিত্র, রাজনারায়ণ বসু, গৌরদাস বসাক প্রমুখ, যাঁরা পরবর্তী জীবনে স্বস্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। কলেজের পরীক্ষায় তিনি বরাবর বৃত্তি পেতেন। এ সময় নারীশিক্ষা বিষয়ে প্রবন্ধ রচনা করে তিনি স্বর্ণপদক লাভ করেন। এ সময় থেকেই তিনি স্বপ্ন দেখতেন বিলেত যাওয়ার। তাঁর ধারণা ছিল বিলেতে যেতে পারলেই বড় কবি হওয়া যাবে।  এই উদ্দেশ্যেই ১৮৪৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি তিনি খ্রিস্ট...

    প্রবন্ধ : ভগিনী নিবেদিতা

    ভগিনী নিবেদিতা ভূমিকা : ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে ভগিনী নিবেদিতার নাম। পৈত্রিক সূত্রে তিনি ছিলেন স্কচ। আধুনিক ভারতবর্ষের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মনীষী ও ধর্মনেতা স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি ভারতবর্ষে আসেন। ব্রহ্মচর্যে দীক্ষা নেন। ভারতে সমাজ সেবা ও নারী শিক্ষার প্রসারেও নিবেদিতার ভূমিকা ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। জন্ম ও বংশ পরিচয় : ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দের ২৮ অক্টোবর উত্তর আয়ারল্যান্ডের ডানগ্যানন শহরে মার্গারেট এলিজাবেথ নোবেল জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর বাবা স্যামুয়েল রিচমন্ড নোবেল ছিলেন ধর্মযাজক। মায়ের নাম মেরি ইসাবেলা। মাত্র দশ বছর বয়সে মার্গারেটের বাবা মারা যান। তারপর তাঁর দাদামশাই তথা আয়ারল্যান্ডের বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী হ্যামিলটন তাঁকে লালনপালন করেন। শিক্ষাজীবন : মার্গারেট লন্ডনের চার্চ বোর্ডিং স্কুলে পড়াশোনা করেছিলেন। এরপর হ্যালিফ্যাক্স কলেজে তিনি ও তাঁর বোন মেরি পড়াশোনা করেছিলেন। কর্মজীবন : ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে, সতেরো বছর বয়সে শিক্ষাজীবন শেষ করে মার্গারেট শিক্ষিকার পেশা গ্রহণ করেন। দু’বছরের জন্যে কেসউইকের একটি প্রাইভেট স্কুলে পড়ান। এরপরে একে ...

    কবিতা 'মহুয়ার দেশ' - কবি সমর সেন

    কবিতা : মহুয়ার দেশ কবিতা : 'মহুয়ার দেশ কবি : সমর সেন ১ মাঝে মাঝে সন্ধার জলস্রোতে পলাশ সূর্য দেয় এঁকে গলিত সোনার মতো উজ্জ্বল আলোর স্তম্ভ, আর আগুন লাগে জলের অন্ধকারে ধূসর ফেনায়। সেই উজ্জ্বল স্তব্ধতায় ধোঁয়ার বঙ্কিম নিঃশ্বাস ঘুরে ফিরে ঘরে আসে শীতের দুঃস্বপ্নের মতো। অনেক, অনেক দূরে আছে মেঘ-মদির মহুয়ার দেশ, সমস্তক্ষণ সেখানে পথের দুধারে ছায়া ফেলে দেবদারুর দীর্ঘ রহস্য, আর দূর সমুদ্রের দীর্ঘশ্বাস রাত্রের নির্জন নিঃসঙ্গতাকে আলোড়িত করে। আমার ক্লান্তির উপরে ঝরুক মহুয়া-ফুল নামুক মহুয়ার গন্ধ।                                             ২                                             এখানে অসহ্য, নিবিড় অন্ধকারে                                    ...

    বাংলা বই : দ্বাদশ শ্রেণি । প্রশ্ন ও উত্তর

    বাংলা বই - দ্বাদশ শ্রেণি উচ্চমাধ্যমিক 'বাংলা বই'য়ে👨তোমাকে স্বাগত 💁 তোমার প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তরটি পেতে ওপরের মেনু বারের বিষয় মেনুতে ক্লিক করো । গল্পের প্রশ্ন চাইলে ‘ গল্পের  প্রশ্ন’  ট্যাবে , কবিতার প্রশ্ন চাইলে ‘ কবিতার প্রশ্ন’ ট্যাবে ক্লিক করো ।  এভাবে প্রয়োজনীয় বিষয়ের  ট্যাবে  ক্লিক করে প্রশ্নের পাতায় যাও। সেখানে দেওয়া নির্দেশিকা অনুযায়ী প্রশ্ন ও উত্তর খোঁজ। অথবা নিচের প্রয়োজনীয় লিঙ্কে ক্লিক করো। সকলের জন্য শুভকামনা রইল। বিভিন্ন প্রশ্ন ও উত্তর পেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করো। ১)  দ্বাদশ শ্রেণির গল্প 👉   প্রশ্ন ও উত্তর ২)  দ্বাদশ শ্রেণির কবিতা 👉   প্রশ্ন ও উত্তর ৩)  দ্বাদশ শ্রেণির নাটক 👉   প্রশ্ন ও উত্তর ৪)  আন্তরজাতিক কবিতা ও ভারতীয় গল্প 👉   প্রশ্ন ও উত্তর ৫)  দ্বাদশ শ্রেণির পূর্নাঙ্গ সহায়ক গ্রন্থ  👉  প্রশ্ন ও উত্তর ৬)  দ্বাদশ শ্রেণির শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতির ইতিহাস 👉   প্রশ্ন ও উত্তর ৭)  দ্বাদশ শ্রেণির ভাষা বিভাগ 👉   প্রশ্ন ও উত্তর   ৮)  দ্বাদ...

    ভারতের জাতীয় সংহতি ও বিছিন্নতাবাদ

    ভারতের জাতীয় সংহতি ও বিছিন্নতাবাদ নানা ভাষা, নানা মত, নানা পরিধান, বিবিধের মাঝে দেখ মিলন মহান্ — অতুল প্রসাদ সেন  ভূমিকা : জাতীয় সংহতি হল একটি দেশের নাগরিকদের মধ্যে একটি সাধারণ পরিচয় সম্পর্কে সচেতনতা। এর অর্থ হল, আমাদের মধ্যে জাতি, ধর্ম, বর্ণ এবং ভাষাগত পার্থক্য থাকলেও, আমরা এই সত্যকে স্বীকার করি যে, আমরা সবাই এক। এটি কেবল একটি জাতীয় অনুভূতি নয়, এটা সেই চেতনা যা সমস্ত উপভাষা ও বিশ্বাসের মানুষকে একই প্রচেষ্টায় একত্রিত করে। জাতীয় একীকরণের সংজ্ঞা: ডাঃ এস. রাধাকৃষ্ণ বলেছেন, national integration cannot be made by bricks and mortar, mould and hammer, but it quietly grows in people’s minds through education.1️⃣ এইচ এ গণি সংজ্ঞায়িত করেছেন, “National integration is a socio-psychological and educational process through which a feeling of unity and harmony develops in the hearts of the people and a sense of common citizenship or feeling of loyalty to the nation is fostered among them”2️⃣ এককথায়, জাতীয় সংহতির ধারণার মধ্যে রয়েছে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং মনস্তাত্ত্...

    নানা রঙের দিন নাটকের মঞ্চ সজ্জার বিবরণ ও নাটকটির নামকরণের সার্থকতা

    ‘নানা রঙের দিন’ নাটকের সূচনায় মঞ্চসজ্জার যে বর্ণনা আছে তা নিজের ভাষায় লেখো। নাটকটির নামকরণ কতখানি সার্থক তা আলোচনা করো। — ২০২০ নানা রঙের দিন নাটকের মঞ্চ সজ্জার বিবরণ ও নাটকটির নামকরণের সার্থকতা ভূমিকা : রুশ নাট্যকর অন্তন চেখভের ‘সোয়ান সং’ একাঙ্ক নাটক অবলম্বনে অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় রচনা করেন ‘নানা রঙের দিন’ নামক একটি নাটক। এই নাটকের শুরুতে নাটকটির অভিনয়ের জন্য একটি মঞ্চ সাজ্যার বিবরণ পাওয়া যায়। মঞ্চ সজ্জার বিবরণ : এই নাটক অভিনয়ের জন্য যে মঞ্চসজ্জার বিবরণ পাওয়া যায় তার পরিসর অত্যন্ত সীমাবদ্ধ ও ক্ষুদ্র। পেশাদারী থিয়েটারের ফাঁকা মঞ্চের পিছনের দিকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে একটি মাত্র দৃশ্যপট। যেখানে রয়েছে রাতে অভিনীত নাটকের জিনিসপত্র আর যন্ত্রপাতি, মঞ্চের মাঝে রয়েছে একটি উল্টানোর টুল, আর চারিদিকে রাত্রির গাঢ় অন্ধকার। আর রয়েছে একটি মোমবাতি হাতে হাসিমুখে রজনীকান্ত নামক চরিত্রের মঞ্চে উপস্থিতি। নামকরণের সার্থকতা : প্রশ্নের এই অংশের উত্তরের জন্য নিচের প্রশ্নটির উত্তর দেখাও। এবং সংক্ষেপে লেখার চেষ্টা করো। 👁️‍🗨️  ‘নানা রঙের দিন’ নাটকটির নামকরণের তাৎপর্য আলোচনা করো ।

    নিখিলের চরিত্র বিশ্লেষণ

    নিখিলের চরিত্র বিশ্লেষণ  নিখিলের চরিত্র বিশ্লেষণ 'কে বাঁচায়, কে বাঁচে' গল্প অবলম্বনে নিখিল চরিত্রের বিশ্লেষণ করো। নিখিলের চরিত্র বিশ্লেষণ সূচনা : মার্কসবাদী কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’ গল্পে নিখিল একজন সহযোগী চরিত্র। সম্পর্কে কেন্দ্রীয় চরিত্র মৃত্যুঞ্জয়ের সহকর্মী ও বন্ধু। কথকের বর্ণনায় সে একজন ‘রোগা, তীক্ষ্ণবুদ্ধি এবং একটু অলস প্রকৃতির লোক’। বন্ধু বৎসল মানুষ : তবে নিখিল অত্যন্ত বন্ধুবৎসল মানুষ। তাই সে মৃত্যুঞ্জয়কে বারবার বোঝানোর চেষ্টা করে তার ভাবনায় অসঙ্গতি কোথায়। শুধু তাই নয়, নানাভাবে সে মৃত্যুঞ্জয় ও তার পরিবারের পাশে থাকে, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। আন্তরিক ও মানবিক : নিখিল আবেগ অনুভূতিহীন মানুষ নয়। নিরন্ন মানুষের অসহায় মৃত্যু এবং কিছু না করতে পারার যন্ত্রণায় যখন মৃত্যুঞ্জয়ের চোখ ছল ছল করে ওঠে, তখন নিখিলের মনটাও খারাপ হয়ে যায়। মানুষের প্রতি আন্তরিকতা ও মানবিক মূল্যবোধের কারণেই সে প্রতি মাসে তিন জায়গায় নিয়মিত অর্থ সাহায্যও পাঠায়। যুক্তিবাদী চিন্তা: তবে নিখিল অত্যন্ত যুক্তিবাদী। সে জানে, রিলিফ মানে আসলে একজন...

    মৃত্যুঞ্জয়ের চরিত্র বিশ্লেষণ

    মৃত্যুঞ্জয়ের চরিত্র বিশ্লেষণ ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’ গল্পের নায়ক মৃত্যুঞ্জয় এর চরিত্র আলোচনা কর মৃত্যুঞ্জয়ের চরিত্র বিশ্লেষণ মৃত্যুঞ্জয়ের চরিত্র বিশ্লেষণ 👉 ভূমিকা : সমাজ সচেতন কথা সাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ছোটগল্প ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’। ১৯৪৩ সালের ভয়ংকর দুর্ভিক্ষের পটভূমিতে দাঁড়িয়ে তিনি রচনা করেছেন এই গল্প। গল্পের প্রধান চরিত্র মৃত্যুঞ্জয়ের চোখ দিয়ে এঁকেছেন একের পর এক দৃশ্যপট। এই দৃশ্যপটগুলো বিশ্লেষণ করলেই ধরা পড়ে মৃত্যুঞ্জয় চরিত্রের প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্যের স্বরূপ। 👉  মৃত্যুঞ্জয়ের চরিত্র 👉 মানব দরদী মন : শহর কলকাতায় অফিস যাওয়ার পথে হঠাৎই একদিন মৃত্যুঞ্জয় ‘অনাহারে মৃত্যুর দৃশ্য’ প্রত্যক্ষ করে। মানুষের এই মৃত্যুবরণ তার দরদি মনের গভীরে তৈরি করে অপূরণীয় ক্ষত। শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে সে। 👉 পরোপকারী ইচ্ছা শক্তি : এদিকে, কীভাবে এই মৃত্যুকে প্রতিরোধ করা যাবে, সেই ভাবনায় তার হৃদয়মন ব্যাকুল হয়ে ওঠে, খাওয়া-ঘুম ছুটে যায়। সিদ্ধান্ত নেয়, নিজের সর্বস্ব দিয়ে এই মৃত্যুর বিরুদ্ধে সে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। 👉 আবেগপ্রবণ : মৃত্যুঞ্জয়ের মন...

    ছোটগল্প হিসেবে 'কে বাঁচায়, কে বাঁচে' গল্পটির সার্থকতা বিচার

    ছোটগল্প হিসেবে 'কে বাঁচায়, কে বাঁচে' গল্পটির সার্থকতা বিচার : ছোটগল্প হিসাবে ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’ কতটা সার্থক ছোটগল্প হিসেবে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'কে বাঁচায়, কে বাঁচে' গল্পটি কতটা সার্থক হয়েছে আলোচনা করো। ছোটগল্প হিসাবে ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’ কতটা সার্থক 👉 ভূমিকা : ছোটো প্রাণ, ছোটো ব্যথা, ছোটো ছোটো দুঃখকথা নিতান্ত সহজ সরল, ........ অন্তরে অতৃপ্তি রবে সাঙ্গ করি মনে হবে শেষ হয়ে হইল না শেষ। কথাগুলো বলেছিলেন বাংলা ছোটগল্পের সার্থক রূপকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । কবিতার ছন্দে বলা এই অংশতেই রয়েছে সার্থক ছোটগল্পের বৈশিষ্ট্যে র যথাযথ বিবরণ। এডগার অ্যালান পো -এর মতে, যে গল্প অর্ধ থেকে এক বা দুই ঘণ্টার মধ্যে এক নিশ্বাসে পড়ে শেষ করা যায়, তাকে ছোটগল্প বলে। ছোটগল্পে জীবনের সামগ্রিক দিকটি উপন্যাসের মতো বিস্তারিতভাবে বর্ণিত না হয়ে, তার খণ্ডাংশ নিয়ে পরিবেশিত হয়। এজন্য ছোটগল্প যথাসম্ভব বাহুল্যবর্জিত, রসঘন ও নিবিড় হয়ে থাকে। সংগত কারণেই এতে চরিত্রের সংখ্যা হয় খুবই সীমিত। ছোটগল্পের প্রারম্ভ ও প্রাক্কাল সাধারণত এবং খানিকটা নাটকীয়ভাবেই শুরু হয়। 👉   ছোটগল্পের বৈশ...

    শিকার। কবিতা - কবি জীবনানন্দ দাশ

    কবিতা। শিকার - কবি জীবনানন্দ দাশ ভোর; আকাশের রং ঘাসফড়িঙের দেহের মতো কোমল নীল : চারিদিকের পেয়ারা ও নোনার গাছ টিয়ার পালকের মতো সবুজ। একটি তারা এখনও আকাশে রয়েছে : পাড়াগাঁর বাসরঘরে সব চেয়ে গোধূলিমদির মেয়েটির মতো; কিংবা মিশরের মানুষী তার বুকের থেকে যে-মুক্তা                আমার নীল মদের গেলাসে রেখেছিলো হাজার হাজার বছর আগে এক রাতে তেমনি — তেমনি একটি তারা আকাশে জ্বলছে এখনও। হিমের রাতে শরীর ‘উম্’ রাখবার জন্য দেশোয়ালীরা                  সারারাত মাঠে আগুন জ্বেলেছে— মোরগ ফুলের মতো লাল আগুন; শুকনো অশ্বত্থপাতা দুমড়ে এখনও আগুন জ্বলছে তাদের; সূর্যের আলোয় তার রং কুঙ্কুমের মতো নেই আর; হ’য়ে গেছে রোগা শালিকের হৃদয়ের বিবর্ণ ইচ্ছার মতো। সকালের আলোয় টলমল শিশিরে চারিদিকের বন ও আকাশ                          ময়ূরের সবুজ নীল ডানার মতো ঝিলমিল করছে। ভোর; সারারাত চিতাবাঘিনীর হাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে বাঁচিয়ে নক্ষত্রহীন, মেহগনির মতো অন্ধকারে সুন্দরীর বন থ...