“কোথাও জীবনের খোরাক, হাসির খোরাক নেই।”
খ) ‘কোথাও জীবনের খোরাক, হাসির খোরাক নেই’ বলে বক্তা মনে করেছেন কেন?
অথবা,
বক্তার এই মন্তব্যটির কারণ আলোচনা করো।
ক) বক্তা কে?
উদ্ধৃত অংশটি প্রখ্যাত নাট্যকার শম্ভু মিত্রের লেখা বিভাব নাটক থেকে নেয়া হয়েছে। এই নাটকে উদ্ধৃত অংশটির বক্তা হলেন নাট্যকার শম্ভু মিত্র নিজেই।
খ) ‘কোথাও জীবনের খোরাক, হাসির খোরাক নেই’ বলে বক্তা মনে করেছেন কেন?
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে মন্বন্তর, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, দেশ ভাগজনিত কারণে উদ্ভূত উদ্বাস্তু মানুষ সরকারের কাছে খাদ্য বস্ত্র ও বাসস্থানের দাবি তোলে। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বল্লভ ভাই প্যাটেল বাঙালিকে ‘কাঁদুনে জাত’ বলে কটাক্ষ করেন। এরই প্রেক্ষাপটে নাট্যকার শম্ভু মিত্র হাসির অনুষঙ্গে বাঙালি জীবনের কান্নার উৎস অনুসন্ধান করেন। তাই এই নাটক হাসির নয়, জীবনের নাটক
আর এই কারণেই নাটকের প্রথমেই কাল্পনিক বসার ভঙ্গির মাধ্যমে এবং পরে ‘লভ সিন’ ও ‘প্রগ্রেসিভ লভ সিন’ অভিনয় করে সার্থক হাসির নাটক মঞ্চস্থ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। তখনই নাট্যকার উপলব্ধি করেন, ঘরের মধ্যে জীবনের প্রকৃত অর্থ খুঁজে পাওয়া যাবে না।
এই কারণে, তারা হাসির খোরাক সন্ধান করতে রাস্তায় নেমে আসেন। কিন্তু সেখানেও দেখা যায় প্রতিদিনের শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের করুণ কাহিনি। বাস, ট্রাম, হাত রিক্সা ইত্যাদিকে সঙ্গী করে প্রাত্যহিক জীবনে ছুটে চলার এইসব দৃশ্যের মধ্যে কোথাও হাসির উপকরণ খুঁজে পাওয়া যায় না। আর এই কারণেই বক্তা উদ্ধৃত মন্তব্যটি করেছেন।
--------xx--------
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন