“ময়ূর ছাড়া কার্তিক আসবে নাকি?”
খ) যার সম্পর্কে এ কথা বলা হয়েছে, তার চেহারার বর্ণনা দাও।
খ) লোকটি কোথায় কেন এসেছে লেখো।
ক) কে, কার সম্পর্কে এই মন্তব্য করেছেন?
উদ্ধৃত অংশটি কথাকার মহাশ্বেতা দেবী তাঁর ‘ভাত’ নামক ছোটগল্পে লিপিবদ্ধ করেছেন। এই গল্পে বড়ো বাড়ির বড়ো পিসিমা বাড়ির বড় বউকে উৎসব নাইয়া নামের কাজের লোকের পরিচয় দিতে গিয়ে এই মন্তব্য করেছেন।
খ) যার সম্পর্কে এ কথা বলা হয়েছে, তার চেহারার বর্ণনা দাও।
এই গল্পে বর্ণিত উৎসব নাইয়ার চেহারার যে বর্ণনা কথাকার মহাশ্বেতা দেবী বাড়ির বড় বউয়ের চোখ দিয়ে এঁকেছেন, তা বেশ অদ্ভুত এবং সন্দেহজনক। বড় বউয়ের বর্ণনায়, ‘কীরকম যেন উগ্র চাহনি। আর কোমর পর্যন্ত ময়লা লুঙ্গিটা অত্যন্ত ছোট। চেহারাটা বুনো বুনো।’ আসলে বন্যার কবলে পরিবার পরিজন হারিয়ে ক্ষুধার্ত উৎসব খাবারের খোঁজে কলকাতায় এসেছে। দীর্ঘদিন অনাহারে থাকার কারণে তার শরীর জীর্ণ হয়েছে। চেহারায় ফুটে উঠেছে অনাহারী এক করুণ অথচ উগ্র রূপ, যা বড় বাড়ির বড় বউয়ের ‘ভালো লাগেনি’।
গ) লোকটি কোথায় এবং কেন এসেছে লেখো।
গল্পের প্রধান চরিত্র উৎসব নাইয়া সুন্দরবনের বাদা অঞ্চলের বাসিন্দা। অনিশ্চিত কৃষিকাজ, বাদা-বনের গুগলি আর গেঁড়ি এবং কচু, সুশনো প্রভৃতি শাকের উপর নির্ভর করে তার জীবন জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। কিন্তু সেবার প্রকৃতির ভয়ংকর আক্রোশে মাতলা নদী উত্তাল হয়ে ওঠে এবং দুর্যোগের রাতে তার মাটির বাড়িঘর-সহ গোটা পরিবার নদীর গর্ভে তলিয়ে যায়। স্বজন হারানোর শোকে খিদে ভুলে পাগল-প্রায় হয়ে বউ ছেলেমেয়েদের খুঁজে ফেরে সে। কিন্তু যখন তার সম্বিত ফেরে, তখন সরকারি লঙ্গরখানা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে উৎসব নাইয়া খাবারের খোঁজে বাধ্য হয়ে কলকাতায় আসে। গ্রাম সম্পর্কের বোন বাসিনীর মনিবের বাড়িতে পেট ভরে ভাত খাওয়ার আশায় কাজ নিতে আসে। তার ভাবনায়, খাদ্যাভাবে সে প্রেতে পরিণত হয়েছে। দুবেলা পেট ভরে খেয়ে সে আবার মানুষ হয়ে ফুটবে এবং পরিবার পরিজনের দুঃখে আবারও প্রাণ খুলে কাঁদবে।
মূলত দুবেলা পেট ভরে দুটো ভাতের আশায় উৎসব নাইয়া কলকাতায় বাসেনীর মনিবের বাড়িতে এসেছিল।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন