“সে বুঝতে পারে সব ভাত ওরা পথে ফেলে দিতে যাচ্ছে” — ২০২০
ক) ‘ওরা’ বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে?
খ) ওরা সব ভাত ফেলে দিতে যাচ্ছিল কেন?
গ) সে কে?
ঘ) বুঝতে পেরে সে কি করেছিল?
ক) ‘ওরা’ বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে?
উদ্ধৃত অংশটি প্রখ্যাত গল্পকার মহাশ্বেতা দেবী রচিত ভাত গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে। এই গল্পে উল্লিখিত ‘ওরা’ বলতে বাসিনীর মনিব বাড়ির লোকজনদের কথা বোঝানো হয়েছে।
খ) ‘ওরা’ সব ভাত ফেলে দিতে যাচ্ছিল কেন?
বড় বাড়ির বুড়োকর্তার যোগ্য চলাকালীন মৃত্যু হয়। বাড়িতে কেউ মারা গেলে প্রচলিত রীতি অনুযায়ী বাড়ির মানুষজনকে অশৌচ পালন করতে হয়। অশৌচ চলাকালীন বাড়িতে ভাত খেলে পরিবারের অমঙ্গল হয়। তাই বড় পিসিমার নির্দেশে বাড়ির সমস্ত ভাত বাসিনী ফেলে দিতে যাচ্ছিল।
গ) ‘সে’ কে?
এখানে ‘সে’ বলতে উৎসব নাইয়া ওরফে উচ্ছবকে বোঝানো হয়েছে, যে সুন্দরবনের বাদা অঞ্চল থেকে কলকাতার বড় বাড়িতে এসেছিল কাজের বিনিময়ে দুবেলা পেট ভরে ভাত খাওয়ার আশায়।
ঘ) বুঝতে পেরে সে কী করেছিল এবং কেন করেছিল?
প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে উৎসব নাইয়া দীর্ঘদিন অভুক্ত থেকেছে। আবার পরিবার হারানোর শোকে লঙ্গরখানার খিচুড়িও সে খেতে পারেনি। ফলে সে প্রচন্ড দুর্বল হয়ে পড়ে। দুবেলা দুমুঠো ভাত খাওয়ার আশায় তাই সে কলকাতায় আসে। দুর্বল শরীর নিয়েও সে প্রায় আড়াই মন কাঠ কেটে ফেলে, শুধুমাত্র ‘ভাতের হুতাশে’।
কিন্তু যজ্ঞ শেষ হওয়ার আগেই বুড়োকর্তার মৃত্যু হলে বাড়িতে অশৌচ শুরু হয়ে যায়। অশৌচ বাড়ির ভাত খাওয়া অমঙ্গল ভেবে বাড়ির বড় পিসি সমস্ত ভাত ফেলে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। উৎসব বুঝে ফেলে যে, ভাত খাওয়ার সুযোগ থেকে আজও সে বঞ্চিত হবে। একদিকে পেটের প্রচণ্ড ক্ষুধা এবং অন্যদিকে নিশ্চিত ভাত খাওয়ার সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কায় বাসিনীর হাত থেকে মোটা চালের ভাতের ডেকচিটি ছিনিয়ে নেয় এবং দৌড়ে পালায়।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন