“এই তো জীবনের নিয়ম!”
“এইতো জীবনের নিয়ম” নাটক : নানা রঙের দিন |
ক) জীবনের নিয়ম কী?
খ) এখানে বক্তার মানসিকতার পরিচয় দাও।অথবা,
এখানে বক্তার কোন মানসিকতার পরিচয় পাওয়া যায়?
ক) জীবনের নিয়ম কী?
নাট্যকার অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা নানা রঙের দিন নাটক থেকে উদ্ধৃত অংশটি নেয়া হয়েছে। এই অংশের বক্তা নাটকের মূল চরিত্র রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়।৬৮ বছর বয়সী রজনীকান্ত জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বুঝেছেন জীবনের সত্য কী? বুঝেছেন জীবন চলে কিছু নির্দিষ্ট প্রাকৃতিক নিয়মের বন্ধনে আবদ্ধ থেকে, যেখানে আছে জন্ম, যৌবন, জরা, ও মৃত্যুর এক অমোঘ ঘেরাটোপ। জীবনকে ঘিরে থাকা এই নিয়মের বন্ধনকেই রজনীকান্ত ‘জীবনের নিয়ম’ বলে অভিহিত করেছেন।
খ) এখানে বক্তার মানসিকতার পরিচয় দাও।
অথবা,
এখানে বক্তার কোন মানসিকতার পরিচয় পাওয়া যায়?
রজনীকান্ত বুঝেছেন জীবনের সত্য কী? জেনেছেন জীবনকে ঘিরে থাকা নিয়মের অমোঘ বন্ধনকে। জীবন চলে এই নির্দিষ্ট নিয়মের বন্ধনে আবদ্ধ থেকে। এই নিয়মকে খন্ডানোর ক্ষমতা কারও নেই। তিনি বুঝেছেন, জন্ম, যৌবন, জরা এবং মৃত্যু স্বাভাবিক নিয়মেই মানুষের জীবনে আসে। একে অতিক্রম করা যায় না। কোন প্রতিভাই এই নিয়মকে ভেঙে এগোতে পারে না।
তিনি বুঝেছেন, এই কারণেই তিনি আর আগের মতো কোন চরিত্রকে আত্তীকরণ করতে পারেন না, পারেন না তাকে ফুটিয়ে তুলতে। আগের মত তাই কোন মূল চরিত্রে তাঁকে আর মানায় না। কিন্তু দেহের বয়স বাড়লেও মনের বয়স তো মানুষের বাড়ে না। রজনীকান্তের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। তাঁর মনের জোর অপরিসীম। এই মনের জোরেই কখনো কখনো তাঁর মনে হয়েছে প্রতিভা বয়সের ভারে নষ্ট হয়ে যায় না।
কিন্তু বিশ্বাস আর বাস্তবতা এক নয়। তাই তার সর্বশেষ উপলব্ধি,
তিনি বুঝেছেন, এই কারণেই তিনি আর আগের মতো কোন চরিত্রকে আত্তীকরণ করতে পারেন না, পারেন না তাকে ফুটিয়ে তুলতে। আগের মত তাই কোন মূল চরিত্রে তাঁকে আর মানায় না। কিন্তু দেহের বয়স বাড়লেও মনের বয়স তো মানুষের বাড়ে না। রজনীকান্তের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। তাঁর মনের জোর অপরিসীম। এই মনের জোরেই কখনো কখনো তাঁর মনে হয়েছে প্রতিভা বয়সের ভারে নষ্ট হয়ে যায় না।
কিন্তু বিশ্বাস আর বাস্তবতা এক নয়। তাই তার সর্বশেষ উপলব্ধি,
শিল্পকে যে-মানুষ ভালোবেসেছে—তার বার্ধক্য নেই কালিনাথ, একাকীত্ব নেই, রোগ নেই, মৃত্যুভয়ের উপর সে হাসতে হাসতে ডাকাতি করতে পারে—
অর্থাৎ শিল্পই শিল্পীকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে, মানুষের মধ্যে, শিল্পীর মৃত্যুর পরেও।
জীবন সায়াহ্নে এসে রজনীকান্ত যেন, কবি মধুসূদন দত্তের সেই অমোঘ বাণীকে জীবনের সার ভেবে নেন :জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা কবে,অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়, জীবনকে ঘিরে থাকা এই নিয়মের বন্ধনকেই ‘জীবনের নিয়ম’ বলে মেনে নিয়েছেন।
চিরস্থির কবে নীর, হায় রে জীবন-নদে?
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন