“দু পায়ে উঠে দাঁড়াবার চেষ্টা করছে সে।”
ক) এখানে কার উঠে দাঁড়ানোর কথা বলা হয়েছে?খ) তার উঠে দাঁড়ানোর মধ্য দিয়ে লেখক আসলে কী দেখাতে চেয়েছেন?
গ) লেখক তাকে কীভাবে ভাবে সাহায্য করতে বলেছেন?
ক) এখানে কার উঠে দাঁড়ানোর কথা বলা হয়েছে?
উদ্ধৃত অংশটি নেওয়া হয়েছে লেখক সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ‘আমার বাংলা’ গ্রন্থ থেকে গৃহীত ‘হাত বাড়াও’ নামক পাঠ্য থেকে।
এই রচনায় পঞ্চাশের মন্বন্তর চলাকালীন সময়ে একজন ১২-১৩ বছরের কঙ্কালসার উলঙ্গ কিশোরের জীবন যুদ্ধের কথা রয়েছে। যার হাতের আঙুলগুলো অত্যন্ত সরু, দেখতে লোমহীন কোনো এক অজানা অদ্ভুত জন্তুর মত এবং যে জানোয়ারের মতো চার হাত পায়ে চলে। বাজারের রাস্তা থেকে চাল আর ছোলা খুটে খুটে খেয়ে বেঁচে থাকার ব্যর্থ চেষ্টা করে।
এখানে এই চার হাত পায়ে চলা কঙ্কালসার দেহবিশিষ্ট কিশোরের পুনরায় উঠে দাঁড়ানোর কথা বলা হয়েছে।
খ) তার উঠে দাঁড়ানোর মধ্য দিয়ে লেখক আসলে কী দেখাতে চেয়েছেন?
আসলে তার এই উঠে দাঁড়ানোর অর্থ হলো, পুনরায় অভাবমুক্ত হয়ে সুখী ও সমৃদ্ধ জীবনের অধিকারী হয়ে ওঠার সামর্থ্য অর্জন করা। সুতরাং তার এই উঠে দাঁড়ানোর মধ্য দিয়ে লেখক এক সমাজ বিপ্লবের কথা বলেছেন, যে বিপ্লবের হাত ধরে যাবতীয় আর্থ-সামাজিক বৈষম্য দূর হয়ে শোষণ ও বঞ্চনাহীন এক মানবীয় সমাজ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। ফলে বাংলার বুক জুড়ে সবুজ মাঠের সোনালি ফসলে চাষির গোলা ভরে উঠবে। কারখানায় কারখানায় বন্ধন মুক্ত মানুষের আন্দোলিত বাহুতে বাহু মেলানোর ফলে মিলবে শান্তি। বন্ধ হবে যুদ্ধ, রুদ্ধ হবে অনাহারে মৃত্যুর মিছিল।
এককথায় এই ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়ে লেখক এক বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন দেখাতে চেয়েছেন, যেখানে কোটি কোটি মানুষের বলিষ্ঠ হাতে গড়ে উঠবে এক স্বাধীন, সুখী, শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধশালী জীবন ব্যবস্থা।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন