‘আমি দেখি’ কবিতায় নাগরিক জীবনের প্রতি কবির যে মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে তা বুঝিয়ে লেখো।
‘আমি দেখি’ কবিতায় কবি কী দেখতে চান এবং কেন দেখতে চান তা কবিতা অবলম্বনে লেখো।
অথবা,
‘আমি দেখি’ কবিতার মধ্য দিয়ে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় কোন্ বার্তা দিতে চেয়েছেন?
ভূমিকা :
কবি শঙ্খ ঘোষ শক্তি চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে লিখেছেন, “সমুদ্র, পাহাড়, প্রকৃতির সঙ্গে মিশে গিয়ে তিনি নিজেই হয়ে উঠেছিলেন প্রকৃতি”। তাই, প্রকৃতি যেমন তাঁর কাব্যজগতের অবিচ্ছেদ্য বিষয় হয়ে উঠেছিল, তেমনি তিনিও হয়ে উঠেছিলেন একজন সবুজের পিয়াসী এবং প্রকৃত প্রকৃতি প্রেমিক।
কবি কী দেখতে চান :
সেই সঙ্গে তিনি এও বুঝেছিলেন সুস্থ নগর জীবনের জন্য প্রয়োজন সবুজে মোড়া এক অনিন্দ্যসুন্দর শহর, যেখানে বুক ভরে শ্বাস নেওয়া যাবে নিশ্চিন্তে। তাই কবি তাঁর ‘আমি দেখি’ কবিতাটি জুড়ে সেটাই কামনা করেছেন। বলেছেন :
গাছের সবুজটুকু শরীরে দরকার
আরোগ্যের জন্য ওই সবুজের ভীষণ দরকার।
কবি কেন দেখতে চান :
বস্তুত, মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির যে সম্পর্ক, তা আসলে সন্তানের সঙ্গে মায়ের সম্পর্কের মতো। এখানে, একের থেকে অপরকে বিচ্ছিন্ন রাখা যেমন নিয়ম-বিরুদ্ধ, তেমনই হঠকারী। কিন্তু তিনি দেখেছেন, কখনও প্রয়োজনে, আবার কখনও প্রলোভনে, মানুষ শহরকে সবুজ-শূন্য করে ফেলছেন, যা তিনি চান না। তার কথায়,
শহরের অসুখ হাঁ করে কেবল সবুজ খায়
সবুজের অনটন ঘটে...
প্রকৃতপক্ষে, সবুজ বৃক্ষ তথা প্রকৃতির মধ্যেই তিনি খুঁজে পেয়েছেন মানবাত্মার সুখের মূল চাবিকাঠি। সে কারণেই, তিনি হয়ে উঠেছিলেন একজন প্রকৃতি প্রেমিক, চেয়েছিলেন, শহর জুড়ে শুরু হোক, ‘সবুজের অভিযান’। তাই তো দেখি এই কবিতায় তিনি যেন যাত্রাপালার বিবেকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছেন। আবেদন রাখছেন,
চোখ তো সবুজ চায়তাই :
দেহ চায় সবুজ বাগান
গাছ আনো, বাগানে বসাও।
উপসংহার :
অর্থাৎ কবি শহর জোড়া সবুজ বাগান দেখতে চেয়েছেন। মূলত একারণেই, তিনি প্রকৃতির প্রেমে ব্যাকুল হয়ে এই কবিতার শুরুতেই নাগরিক জীবনের কাছে আকুল আবেদন রাখছেন :
গাছগুলো তুলে আনো, বাগানে বসাও
আমার দরকার শুধু গাছ দেখা
গাছ দেখে যাওয়া।
-----------xx----------
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন