“মারতে মারতে উচ্ছবকে ওরা থানায় নিয়ে যায়।”
খ) ওরা কারা?
গ) কারা কেন তাকে থানায় নিয়ে যায়?
ক) উচ্ছোব কে?
প্রখ্যাত কথাকার মহাশ্বেতা দেবী রচিত ‘ভাত’ গল্প থেকে উদ্ধৃত অংশটি নেওয়া হয়েছে। এই গল্পের প্রধান চরিত্র উৎসব নাইয়া। সুন্দরবনের বাদাবন অঞ্চলে তার বসবাস। লেখাপড়া না জানা গ্রামীণ মানুষের উচ্চারণে উৎসব নামটা ‘উচ্ছব’ হিসেবে উচ্চারিত হয়। এই উৎসব নাইয়াই এখানে উচ্ছব নামে পরিচিত।
খ) ‘ওরা’ কারা?
‘ওরা’ বলতে, রেলস্টেশন লাগোয়া এলাকার জনসাধারণকে বোঝানো হয়েছে, যারা পরদিন সকালবেলা পিতলের ডেকচি সহ উৎসবকে চোর সাব্যস্ত করে এবং মারতে মারতে থানায় নিয়ে যায়।
খ) কারা কেন তাকে থানায় নিয়ে যায়?
ভাতের প্রতি উৎসবের অত্যধিক আসক্তি তার জীবনে আর এক বিপর্যয় ডেকে আনে। বাড়ির বড় কর্তার যজ্ঞি চলাকালীন সময় হঠাৎ মৃত্যু হলে ইতিমধ্যেই রান্না হওয়া ভাত ফেলে দেয়ার নির্দেশ আসে বড় পিসিমার কাছ থেকে। কারণ, অশৌচ বাড়ির রান্না খেলে অমঙ্গল হয়।
কিন্তু অনাহারি উৎসবের এই সিদ্ধান্ত ভালো লাগেনি। এই অবস্থায় সে অভিনব এক কৌশল অবলম্বন করে। ভাত ফেলে দেয়ার দায়িত্ব বাসিনির কাছ থেকে সে নিজের হাতে তুলে নেয়। এবং সিদ্ধান্ত করে এই ভাত নিয়ে সে নিজে খাবে এবং বাঁকিটা দেশের বাড়ি ক্যানিংয়ে নিয়ে যাবে। পরিকল্পনামাফিক সে ভাতসহ পিতলের ডেকচি নিয়ে সোজা স্টেশনে চলে আসে। এবং সেখানে বসে পরম তৃপ্তিতে ক্ষুধার্ত হাঙরের মত খাবলা খাবলা ভাত খেতে থাকে। একসময় উপসী পেটে ভাত পড়ার পরম তৃপ্তিতে সে স্টেশনেই ভাতের হাঁড়িটি জাপটে ধরে ঘুমিয়ে পড়ে। ঘুম ভাঙ্গে পরদিন সকালে।
এরপর পিতলের ডেকচি চুরির অপরাধে এলাকার লোকজন তাকে ধরে ফেলে এবং মারতে মারতে তাকে থানায় নিয়ে যায়। এভাবে ভাতের প্রতি অত্যাধিক আসক্তি তার হাজতবাসের পরিণতি ডেকে আনে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন