সবুজের প্রতি মানুষের চাহিদা চিরন্তন” - এই উক্তির আলোকে ‘আমি দেখি’ কবিতাটি আলোচনা করো।
মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির যে সম্পর্ক, তা আসলে সন্তানের সঙ্গে মায়ের সম্পর্কের মতো। এক্ষেত্রে, একের থেকে অপরকে বিচ্ছিন্ন রাখা যেমন নিয়ম-বিরুদ্ধ, তেমনই হঠকারী। একারণেই সবুজের প্রতি মানুষের চাহিদা চিরন্তন সত্য হয়ে উঠেছে। ‘আমি দেখি’ কবিতায় কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় এই চিরন্তন সত্যকেই প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন।প্রকৃতপক্ষে, সবুজ বৃক্ষ তথা প্রকৃতির মধ্যেই কবি খুঁজে পেয়েছেন মানবাত্মার সুখ ও সমৃদ্ধির মূল চাবিকাঠি। কারণ, সবুজ গাছ আর ফসলের সবুজ আমাদের পরিবেশকে শুধু অনিন্দ্য সুন্দর করে তোলে না, তারা পুষ্টি যুগিয়ে জীবনকেও করে তোলে নীরোগ ও কর্মক্ষম। সবুজের প্রতি মানুষের এই চাহিদাকে সামনে রেখেই তিনি লিখেছেন ‘আমি দেখি’ কবিতাটি :
আমার দরকার শুধু গাছ দেখাসেই সঙ্গে তিনি যার পর নেই হতাশও হয়েছেন। কারণ, তিনি দেখেছেন, কখনও প্রয়োজনে, আবার কখনও প্রলোভনে, মানুষ শহরকে সবুজ-শূন্য করে ফেলছেন, যা তিনি চান না। তার কথায়,
গাছ দেখে যাওয়া
গাছের সবুজটুকু শরীরে দরকার
আরোগ্যের জন্য ওই সবুজের ভীষণ দরকার
শহরের অসুখ হাঁ করে কেবল সবুজ খায়আসলে, সবুজের সঙ্গে মানুষের এই চিরন্তন সম্পর্কের কারণেই, তিনি হয়ে উঠেছেন একজন প্রকৃতি প্রেমিক, চেয়েছেন, শহর জুড়ে শুরু হোক, ‘সবুজের অভিযান’। তাই দেখতে পাই, এই কবিতায় তিনি যেন ‘যাত্রাপালার বিবেকে’র ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছেন। আবেদন রাখছেন,
সবুজের অনটন ঘটে...
চোখ তো সবুজ চায়
দেহ চায় সবুজ বাগান
গাছ আনো, বাগানে বসাও।
সবুজের প্রতি মানুষের এই চিরন্তন চাহিদার কারণেই কবি শহর জোড়া সবুজ বাগান দেখতে চেয়েছেন। মূলত একারণেই, তিনি প্রকৃতির প্রেমে ব্যাকুল হয়ে এই কবিতার শুরুতেই নাগরিক জীবনের কাছে আকুল আবেদন রাখছেন :
গাছগুলো তুলে আনো, বাগানে বসাও
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন