সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

এই পবিত্রতার নামাবলীটা সেদিন হঠাৎই ফাঁস হয়ে গেল...

“এই পবিত্রতার নামাবলীটা সেদিন হঠাৎই ফাঁস হয়ে গেল...”

ক) সেদিন বলতে কোন দিনের কথা বলা হয়েছে?
খ) সেদিন কী ফাঁস হয়ে গিয়েছিল?
অথবা,
‘পবিত্রতার নামাবলিটা’ কী?
অথবা,
বক্তার এই মন্তব্যের কারণ আলোচনা করো।
গ) তা কোন দিন কিভাবে ফাঁস হয়ে গেল?
অথবা,
এই পবিত্রতার নামাবলিটা কোন্ দিন কীভাবে রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের সামনে ফাঁস হয়ে গিয়েছিল?
ঘ) ‘নানা রঙের দিন’ নাটক অবলম্বনে মন্তব্যটি তাৎপর্য লেখো।
অথবা,
এই মন্তব্যের মাধ্যমে রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় কী বুঝিয়েছেন আলোচনা করো।

ক) ‘সেদিন’ বলতে কোন্ দিনের কথা বলা হয়েছে?

প্রথম জীবনে রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় নাট্যাভিনয়ে দারুন পারদর্শিতা দেখিয়েছিলেন। সেই অভিনয়ে মুগ্ধ হয়ে একটি বড় লোকের সুন্দরী মেয়ে তাঁর প্রেমে পড়ে। একসময় রজনীকান্ত তার প্রেমিকাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু মেয়েটি শর্ত দেয়, অভিনয় ছাড়লেই কেবল সে তাঁকে বিয়ে করতে পারবে। কারণ, তার মতে, অভিনেতার সঙ্গে প্রেমর সম্পর্ক করা যায় কিন্তু বিয়ে করে সেই সম্পর্কে সামাজিক সম্মান দেয়া যায় না। সেদিন রাতেই একটি ‘বাজে হাসির বই’-এ অভিনয় করতে করতে তাঁর চোখ খুলে যায়। তিনি উপলব্ধি করেন নাট্যাভিনয় কোন পবিত্র শিল্প নয়। ‘সেদিন’ বলতে এই দিনের কথা বলা হয়েছে।

খ) সেদিন কী ফাঁস হয়ে গিয়েছিল?

অথবা,

‘পবিত্রতার নামাবলিটা’ কী?

অথবা,

বক্তার এই মন্তব্যের কারণ আলোচনা করো।

রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় একজন শিল্প প্রেমিক শিল্পী। শিল্পকে ভালোবেসেই তিনি পেয়েছেন খ্যাতি, পেয়েছেন সম্মান। এমন কি জীবনে এসেছে প্রেমও। কিন্তু সেই প্রেমকে পরিণতি দেওয়ার প্রশ্নেই বাধে গোল। তার প্রেমিকা শর্ত দেয়, বিয়ে করতে হলে অভিনয় ছাড়তে হবে। 

সেই সঙ্গে তিনি উপলব্ধি করেন, সমাজে একজন অভিনেতার মর্যাদা ঠিক কতটা। মানুষ অভিনেতার অভিনয় দেখে হাততালি দিতে পারে, প্রশংসা করতে পারে, মেডেলও দিতে পারে; এমনকি তার সঙ্গে প্রেমও করতে পারে। কিন্তু সামাজিক সম্মানের অংশীদার করতে পারে না। সেদিন রাত্রেই একটি বাজে হাসির নাটক করতে গিয়ে এই সত্য তার মধ্যে আরও গভীর ভাবে গেঁথে যায়। তিনি বুঝতে পারেন, সমাজ একজন অভিনেতাকে জোকার, ক্লাউন কিম্বা ভাঁড়ের চোখে দেখতেই পছন্দ করে, মানুষের মনোরঞ্জনই যার একমাত্র কাজ। কোন সামাজিক সম্মান বা স্বীকৃতি এই কাজের বিনিময়ে পাওয়ার কোন সুযোগ নেই। সেই রাতের এই উপলব্ধির কারণেই রজনীকান্ত বুঝেছিলেন, নাট্যাভিনয় কোন পবিত্র শিল্প নয়। যারা তা বলে, হয় তারা মিথ্যুক, না হয় গাধা। বাস্তবতার এই পরিহাসকে তিনি ‘পবিত্রতার নামাবলি’ বলে অভিহিত করেছেন।

গ) তা কোন দিন কিভাবে ফাঁস হয়ে গেল?

অথবা,

এই পবিত্রতার নামাবলিটা কোন্ দিন কীভাবে রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের সামনে ফাঁস হয়ে গিয়েছিল?

রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় একজন শিল্প প্রেমিক শিল্পী। শিল্পকে ভালোবেসেই তিনি পেয়েছেন খ্যাতি, পেয়েছেন সম্মান। এমন কি জীবনে এসেছে প্রেমও। কিন্তু সেই প্রেমকে পরিণতি দেওয়ার প্রশ্নেই বাধে গোল। তার প্রেমিকা শর্ত দেয়, বিয়ে করতে হলে অভিনয় ছাড়তে হবে। 

কিন্তু জীবনের প্রথম ভালবাসাকে ছেড়ে তিনি দ্বিতীয় ভালবাসায় ডুবে গিয়ে তিনি বাঁচাতে চাননি। ফলে প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যায়। সেই সঙ্গে তিনি উপলব্ধি করেন, সমাজে একজন অভিনেতার মর্যাদা ঠিক কতটা। মানুষ অভিনেতার অভিনয় দেখে হাততালি দিতে পারে, প্রশংসা করতে পারে, মেডেলও দিতে পারে; এমনকি তার সঙ্গে প্রেমও করতে পারে। কিন্তু সামাজিক সম্মানের অংশীদার করতে পারে না। সেদিন রাত্রেই একটি বাজে হাসির নাটক করতে গিয়ে এই সত্য তার মধ্যে আরও গভীর ভাবে গেঁথে যায়। তিনি বুঝতে পারেন, সমাজ একজন অভিনেতাকে জোকার, ক্লাউন কিম্বা ভাঁড়ের চোখে দেখতেই পছন্দ করে সমাজ, মানুষের মনোরঞ্জনই যার একমাত্র কাজ। কোন সামাজিক সম্মান বা স্বীকৃতি এই কাজের বিনিময়ে পাওয়ার কোন সুযোগ নেই। সেই রাতের এই উপলব্ধির কারণেই রজনীকান্ত বুঝেছিলেন, নাট্যাভিনয় কোন পবিত্র শিল্প নয়। যারা তা বলে, হয় তারা মিথ্যুক, না হয় গাধা। বাস্তবতার এই পরিহাসকে তিনি ‘পবিত্রতার নামাবলি’ বলে অভিহিত করেছেন। এবং এভাবেই সেদিন তা  ফাঁস হয়ে গিয়েছিল।

ঘ) ‘নানা রঙের দিন’ নাটক অবলম্বনে মন্তব্যটি তাৎপর্য লেখো।

অথবা,

এই মন্তব্যের মাধ্যমে রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় কী বুঝিয়েছেন আলোচনা করো।

প্রথম নাট্যচর্চা ও নাট্যশিল্পের অবির্ভাব প্রাচীন গ্রিসের নগররাষ্ট্র এথেন্সে, আনুমানিক খ্রিষ্টপূর্ব ৫০০ থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ৪০০ এর মধ্যবর্তী কোন সময়ে। সেই সময় থেকেই নাট্যাভিনয় কেবল বিনোদনের উপাদান নয়, তা পবিত্র শিল্প হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। অজিতের বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা নাটক ‘নানা রঙের দিন’- এর প্রধান চরিত্র রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ও প্রথম জীবন থেকেই নাট্যাভিনয়কে এভাবেই দেখে আসছেন। কিন্তু একসময় এই অভিনয় না ছাড়ার কারণেই তাঁর প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যায়। কারণ প্রেমিকার কাছে তার যশ ও খ্যাতির কোন সামাজিক মূল্য ছিল না। অর্থই ছিল তার কাছে প্রধান। পরিণতিতে এই সম্পর্ক ভেঙে যায়। রজনীকান্ত এই সময় উপলব্ধি করেন ‘নাট্যাভিনয় একটি পবিত্র শিল্প’ —এই কথার কোন বস্তুগত মূল্য নেই। আর তাই তিনি নাট্যাভিনয় সম্পর্কিত পবিত্রতার ধারণাকে ‘পবিত্রতার নামাবলী’ বলে অভিহিত করেছেন এবং তাকে ‘বাজে কথা’ বলে অভিহিত করেছেন।

সেই সঙ্গে তিনি এও উপলব্ধি করেন, সমাজে একজন অভিনেতার মর্যাদা ঠিক কতটা। মানুষ অভিনেতার অভিনয় দেখে হাততালি দিতে পারে, প্রশংসা করতে পারে, মেডেলও দিতে পারে; এমনকি তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়তে পারে। কিন্তু সামাজিক সম্মানের অংশীদার করতে পারে না। সেদিন রাত্রেই একটি ‘বাজে হাসির নাটক’ করতে গিয়ে এই সত্য তার মধ্যে আরও গভীরভাবে গেঁথে যায়।

তিনি বুঝতে পারেন, সমাজ একজন অভিনেতাকে জোকার, ক্লাউন কিম্বা ভাঁড়ের চোখে দেখতেই বেশি পছন্দ করে; মানুষের মনোরঞ্জনই যার একমাত্র কাজ। কোন সামাজিক সম্মান বা স্বীকৃতি এই কাজের বিনিময়ে পাওয়ার কোন সুযোগ নেই। এই উপলব্ধির কারণেই রজনীকান্ত বলেছিলেন, নাট্যাভিনয় কোন পবিত্র শিল্প নয়। যারা তা বলে, হয় তারা মিথ্যুক, না হয় গাধা।

উদ্ধৃত অংশের বিষয়ে এটাই ছিল বক্তার বক্তব্যের মূল তাৎপর্য।
---------xx--------

মন্তব্যসমূহ

বাংলা বই : দ্বাদশ শ্রেণি - সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর

মাইকেল মধুসূদন দত্ত

প্রবন্ধ রচনা : মাইকেল মধুসূদন দত্ত ভূমিকা: মাইকেল মধুসূদন দত্ত একাধারে একজন মহাকবি, নাট্যকার, বাংলাভাষার সনেট প্রবর্তক ও অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক। ১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি যশোর জেলার কপোতাক্ষ নদের তীরে সাগরদাঁড়ি গ্রামে, এক জমিদার বংশে তাঁর জন্ম। পিতা রাজনারায়ণ দত্ত ছিলেন কলকাতার একজন প্রতিষ্ঠিত উকিল। মায়ের নাম জাহ্নবী দেবী। শিক্ষাজীবন : মধুসূদন দত্ত শিক্ষা গ্রহণ পর্ব শুরু হয় মায়ের তত্ত্বাবধানে সাগরদাঁড়ির পাঠশালায়। পরে সাত বছর বয়সে কলকাতা আসেন এবং খিদিরপুর স্কুলে দুবছর পড়ার পর ১৮৩৩ সালে হিন্দু কলেজে ভর্তি হন। সেখানে তিনি বাংলা, সংস্কৃত ও ফারসি ভাষা শেখেন।  এখানে তাঁর সহপাঠী ছিলেন ভূদেব মুখোপাধ্যায়, রাজেন্দ্রলাল মিত্র, রাজনারায়ণ বসু, গৌরদাস বসাক প্রমুখ, যাঁরা পরবর্তী জীবনে স্বস্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। কলেজের পরীক্ষায় তিনি বরাবর বৃত্তি পেতেন। এ সময় নারীশিক্ষা বিষয়ে প্রবন্ধ রচনা করে তিনি স্বর্ণপদক লাভ করেন। এ সময় থেকেই তিনি স্বপ্ন দেখতেন বিলেত যাওয়ার। তাঁর ধারণা ছিল বিলেতে যেতে পারলেই বড় কবি হওয়া যাবে।  এই উদ্দেশ্যেই ১৮৪৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি তিনি খ্রিস্ট...

বাংলা বই : দ্বাদশ শ্রেণি । প্রশ্ন ও উত্তর

বাংলা বই - দ্বাদশ শ্রেণি উচ্চমাধ্যমিক 'বাংলা বই'য়ে👨তোমাকে স্বাগত 💁 তোমার প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তরটি পেতে ওপরের মেনু বারের বিষয় মেনুতে ক্লিক করো । গল্পের প্রশ্ন চাইলে ‘ গল্পের  প্রশ্ন’  ট্যাবে , কবিতার প্রশ্ন চাইলে ‘ কবিতার প্রশ্ন’ ট্যাবে ক্লিক করো ।  এভাবে প্রয়োজনীয় বিষয়ের  ট্যাবে  ক্লিক করে প্রশ্নের পাতায় যাও। সেখানে দেওয়া নির্দেশিকা অনুযায়ী প্রশ্ন ও উত্তর খোঁজ। অথবা নিচের প্রয়োজনীয় লিঙ্কে ক্লিক করো। সকলের জন্য শুভকামনা রইল। বিভিন্ন প্রশ্ন ও উত্তর পেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করো। ১)  দ্বাদশ শ্রেণির গল্প 👉   প্রশ্ন ও উত্তর ২)  দ্বাদশ শ্রেণির কবিতা 👉   প্রশ্ন ও উত্তর ৩)  দ্বাদশ শ্রেণির নাটক 👉   প্রশ্ন ও উত্তর ৪)  আন্তরজাতিক কবিতা ও ভারতীয় গল্প 👉   প্রশ্ন ও উত্তর ৫)  দ্বাদশ শ্রেণির পূর্নাঙ্গ সহায়ক গ্রন্থ  👉  প্রশ্ন ও উত্তর ৬)  দ্বাদশ শ্রেণির শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতির ইতিহাস 👉   প্রশ্ন ও উত্তর ৭)  দ্বাদশ শ্রেণির ভাষা বিভাগ 👉   প্রশ্ন ও উত্তর   ৮)  দ্বাদ...

ভারতের জাতীয় সংহতি ও বিছিন্নতাবাদ

ভারতের জাতীয় সংহতি ও বিছিন্নতাবাদ নানা ভাষা, নানা মত, নানা পরিধান, বিবিধের মাঝে দেখ মিলন মহান্ — অতুল প্রসাদ সেন  ভূমিকা : জাতীয় সংহতি হল একটি দেশের নাগরিকদের মধ্যে একটি সাধারণ পরিচয় সম্পর্কে সচেতনতা। এর অর্থ হল, আমাদের মধ্যে জাতি, ধর্ম, বর্ণ এবং ভাষাগত পার্থক্য থাকলেও, আমরা এই সত্যকে স্বীকার করি যে, আমরা সবাই এক। এটি কেবল একটি জাতীয় অনুভূতি নয়, এটা সেই চেতনা যা সমস্ত উপভাষা ও বিশ্বাসের মানুষকে একই প্রচেষ্টায় একত্রিত করে। জাতীয় একীকরণের সংজ্ঞা: ডাঃ এস. রাধাকৃষ্ণ বলেছেন, national integration cannot be made by bricks and mortar, mould and hammer, but it quietly grows in people’s minds through education.1️⃣ এইচ এ গণি সংজ্ঞায়িত করেছেন, “National integration is a socio-psychological and educational process through which a feeling of unity and harmony develops in the hearts of the people and a sense of common citizenship or feeling of loyalty to the nation is fostered among them”2️⃣ এককথায়, জাতীয় সংহতির ধারণার মধ্যে রয়েছে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং মনস্তাত্ত্...

বাংলার ঋতুরঙ্গ বা বাংলা ঋতু বৈচিত্র্য

 বাংলার ঋতুরঙ্গ বা ঋতু বৈচিত্র্য বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাই না আর। — জীবনানন্দ দাস ভূমিকা : ঋতুবৈচিত্র্যের বর্ণিল উপস্থিতিতে বাংলাদেশের প্রকৃতি পরিপূর্ণ। সুজলা-সুফলা-শস্য-শ্যামলা এই বাংলার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল এর বৈচিত্র্যময় ঋতুরূপ। ভিন্ন ভিন্ন রূপ-রস-গন্ধ নিয়ে পর্যায়ক্রমে ছয়টি ঋতু ঘুরে ফিরে আসে এই বাংলায়। প্রতিটি ঋতুই স্বতন্ত্র সৌন্দর্যে অপরূপা। বাংলা প্রকৃতির এই অপরূপ রূপে মুগ্ধ হয়ে জীবনানন্দ দাশ একে ‘ রূপসী বাংলা ’ বলে অভিহিত করেছেন। ঋতু বৈচিত্রের কারণ : বাংলাদেশ  কর্কটক্রান্তি রেখার ওপর অবস্থিত। এখানকার আবহাওয়াতে তাই নিরক্ষীয় প্রভাব দেখা যায়। এখানেই রয়েছে বাংলার ঋতু বৈচিত্রের মূল চাবিকাঠি।  নভেম্বর হতে মার্চ পর্যন্ত এখানে হালকা শীত অনুভূত হয়। মার্চ হতে জুন মাস পর্যন্ত গ্রীষ্মকাল চলে। জুন হতে অক্টোবর পর্যন্ত চলে বর্ষা মৌসুম। এসময় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে হয় প্রচুর বৃষ্টিপাত। ছয় ঋতুর ‘রূপসী বাংলা’ : বাংলার এই ছটি ঋতু যেন বিনি সুতোয় গাঁথা মালার মতো। এই মেলায় পর পর গাঁথা আছে গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও ঋতুরাজ বসন্ত। প্রতি ...

কবিতা 'মহুয়ার দেশ' - কবি সমর সেন

কবিতা : মহুয়ার দেশ কবিতা : 'মহুয়ার দেশ কবি : সমর সেন ১ মাঝে মাঝে সন্ধার জলস্রোতে পলাশ সূর্য দেয় এঁকে গলিত সোনার মতো উজ্জ্বল আলোর স্তম্ভ, আর আগুন লাগে জলের অন্ধকারে ধূসর ফেনায়। সেই উজ্জ্বল স্তব্ধতায় ধোঁয়ার বঙ্কিম নিঃশ্বাস ঘুরে ফিরে ঘরে আসে শীতের দুঃস্বপ্নের মতো। অনেক, অনেক দূরে আছে মেঘ-মদির মহুয়ার দেশ, সমস্তক্ষণ সেখানে পথের দুধারে ছায়া ফেলে দেবদারুর দীর্ঘ রহস্য, আর দূর সমুদ্রের দীর্ঘশ্বাস রাত্রের নির্জন নিঃসঙ্গতাকে আলোড়িত করে। আমার ক্লান্তির উপরে ঝরুক মহুয়া-ফুল নামুক মহুয়ার গন্ধ।                                             ২                                             এখানে অসহ্য, নিবিড় অন্ধকারে                                    ...

রচনা : মৃণাল সেন

প্রবন্ধ রচনা : মৃণাল সেন ভূমিকা : মৃণাল সেন ছিলেন প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক, চিত্রনাট্যকার ও লেখক। সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে এক বন্ধনীতে উচ্চারিত হতো তার নামও। জন্ম ও শিক্ষাজীবন :  মৃণাল সেন ১৯২৩ সালের ১৪ মে বাংলাদেশের ফরিদপুরে জন্ম । এখানেই তিনি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করেন। এর পর তিনি কলকাতায় চলে আসেন। পদার্থবিদ্যা নিয়ে স্কটিশ চার্চ কলেজে পড়াশোনা করেন এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। প্রাথমিক কর্ম :  কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে তিনি সাংবাদিকতা, ওষুধ বিপণনকারী হিসাবে কাজ শুরু করেন। চল্লিশের দশকে মৃণাল সেন ইন্ডিয়ান পিপলস থিয়েটার অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে যুক্ত হন। এরপর চলচ্চিত্রে শব্দকুশলী হিসেবেও কাজ শুরু করেন। রাজনৈতিক দর্শন :  আজীবন বামপন্থায় বিশ্বাসী মৃণাল সেন দীর্ঘদিন কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়ার সাংস্কৃতিক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরে রাষ্ট্রপতির মনোনীত সদস্য হিসেবে ভারতের পার্লামেন্টের সদস্য হন। ছবি পরিচালনা : বাংলা, ওড়ইয়আ, হিন্দি এবং তেলেগু ভাষায় চলচ্চিত্র পরিচালনা করে তিনি বহুভাষিক চিত্র পরিচালক হিসেবে খ্যাতি...

প্রবন্ধ : ভগিনী নিবেদিতা

ভগিনী নিবেদিতা ভূমিকা : ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে ভগিনী নিবেদিতার নাম। পৈত্রিক সূত্রে তিনি ছিলেন স্কচ। আধুনিক ভারতবর্ষের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মনীষী ও ধর্মনেতা স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি ভারতবর্ষে আসেন। ব্রহ্মচর্যে দীক্ষা নেন। ভারতে সমাজ সেবা ও নারী শিক্ষার প্রসারেও নিবেদিতার ভূমিকা ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। জন্ম ও বংশ পরিচয় : ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দের ২৮ অক্টোবর উত্তর আয়ারল্যান্ডের ডানগ্যানন শহরে মার্গারেট এলিজাবেথ নোবেল জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর বাবা স্যামুয়েল রিচমন্ড নোবেল ছিলেন ধর্মযাজক। মায়ের নাম মেরি ইসাবেলা। মাত্র দশ বছর বয়সে মার্গারেটের বাবা মারা যান। তারপর তাঁর দাদামশাই তথা আয়ারল্যান্ডের বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী হ্যামিলটন তাঁকে লালনপালন করেন। শিক্ষাজীবন : মার্গারেট লন্ডনের চার্চ বোর্ডিং স্কুলে পড়াশোনা করেছিলেন। এরপর হ্যালিফ্যাক্স কলেজে তিনি ও তাঁর বোন মেরি পড়াশোনা করেছিলেন। কর্মজীবন : ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে, সতেরো বছর বয়সে শিক্ষাজীবন শেষ করে মার্গারেট শিক্ষিকার পেশা গ্রহণ করেন। দু’বছরের জন্যে কেসউইকের একটি প্রাইভেট স্কুলে পড়ান। এরপরে একে ...

মৃত্যুঞ্জয়ের চরিত্র বিশ্লেষণ

মৃত্যুঞ্জয়ের চরিত্র বিশ্লেষণ ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’ গল্পের নায়ক মৃত্যুঞ্জয় এর চরিত্র আলোচনা কর মৃত্যুঞ্জয়ের চরিত্র বিশ্লেষণ মৃত্যুঞ্জয়ের চরিত্র বিশ্লেষণ 👉 ভূমিকা : সমাজ সচেতন কথা সাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ছোটগল্প ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’। ১৯৪৩ সালের ভয়ংকর দুর্ভিক্ষের পটভূমিতে দাঁড়িয়ে তিনি রচনা করেছেন এই গল্প। গল্পের প্রধান চরিত্র মৃত্যুঞ্জয়ের চোখ দিয়ে এঁকেছেন একের পর এক দৃশ্যপট। এই দৃশ্যপটগুলো বিশ্লেষণ করলেই ধরা পড়ে মৃত্যুঞ্জয় চরিত্রের প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্যের স্বরূপ। 👉  মৃত্যুঞ্জয়ের চরিত্র 👉 মানব দরদী মন : শহর কলকাতায় অফিস যাওয়ার পথে হঠাৎই একদিন মৃত্যুঞ্জয় ‘অনাহারে মৃত্যুর দৃশ্য’ প্রত্যক্ষ করে। মানুষের এই মৃত্যুবরণ তার দরদি মনের গভীরে তৈরি করে অপূরণীয় ক্ষত। শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে সে। 👉 পরোপকারী ইচ্ছা শক্তি : এদিকে, কীভাবে এই মৃত্যুকে প্রতিরোধ করা যাবে, সেই ভাবনায় তার হৃদয়মন ব্যাকুল হয়ে ওঠে, খাওয়া-ঘুম ছুটে যায়। সিদ্ধান্ত নেয়, নিজের সর্বস্ব দিয়ে এই মৃত্যুর বিরুদ্ধে সে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। 👉 আবেগপ্রবণ : মৃত্যুঞ্জয়ের মন...

ছোটগল্প হিসেবে 'কে বাঁচায়, কে বাঁচে' গল্পটির সার্থকতা বিচার

ছোটগল্প হিসেবে 'কে বাঁচায়, কে বাঁচে' গল্পটির সার্থকতা বিচার : ছোটগল্প হিসাবে ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’ কতটা সার্থক ছোটগল্প হিসেবে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'কে বাঁচায়, কে বাঁচে' গল্পটি কতটা সার্থক হয়েছে আলোচনা করো। ছোটগল্প হিসাবে ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’ কতটা সার্থক 👉 ভূমিকা : ছোটো প্রাণ, ছোটো ব্যথা, ছোটো ছোটো দুঃখকথা নিতান্ত সহজ সরল, ........ অন্তরে অতৃপ্তি রবে সাঙ্গ করি মনে হবে শেষ হয়ে হইল না শেষ। কথাগুলো বলেছিলেন বাংলা ছোটগল্পের সার্থক রূপকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । কবিতার ছন্দে বলা এই অংশতেই রয়েছে সার্থক ছোটগল্পের বৈশিষ্ট্যে র যথাযথ বিবরণ। এডগার অ্যালান পো -এর মতে, যে গল্প অর্ধ থেকে এক বা দুই ঘণ্টার মধ্যে এক নিশ্বাসে পড়ে শেষ করা যায়, তাকে ছোটগল্প বলে। ছোটগল্পে জীবনের সামগ্রিক দিকটি উপন্যাসের মতো বিস্তারিতভাবে বর্ণিত না হয়ে, তার খণ্ডাংশ নিয়ে পরিবেশিত হয়। এজন্য ছোটগল্প যথাসম্ভব বাহুল্যবর্জিত, রসঘন ও নিবিড় হয়ে থাকে। সংগত কারণেই এতে চরিত্রের সংখ্যা হয় খুবই সীমিত। ছোটগল্পের প্রারম্ভ ও প্রাক্কাল সাধারণত এবং খানিকটা নাটকীয়ভাবেই শুরু হয়। 👉   ছোটগল্পের বৈশ...

নানা রঙের দিন নাটকের মঞ্চ সজ্জার বিবরণ ও নাটকটির নামকরণের সার্থকতা

‘নানা রঙের দিন’ নাটকের সূচনায় মঞ্চসজ্জার যে বর্ণনা আছে তা নিজের ভাষায় লেখো। নাটকটির নামকরণ কতখানি সার্থক তা আলোচনা করো। — ২০২০ নানা রঙের দিন নাটকের মঞ্চ সজ্জার বিবরণ ও নাটকটির নামকরণের সার্থকতা ভূমিকা : রুশ নাট্যকর অন্তন চেখভের ‘সোয়ান সং’ একাঙ্ক নাটক অবলম্বনে অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় রচনা করেন ‘নানা রঙের দিন’ নামক একটি নাটক। এই নাটকের শুরুতে নাটকটির অভিনয়ের জন্য একটি মঞ্চ সাজ্যার বিবরণ পাওয়া যায়। মঞ্চ সজ্জার বিবরণ : এই নাটক অভিনয়ের জন্য যে মঞ্চসজ্জার বিবরণ পাওয়া যায় তার পরিসর অত্যন্ত সীমাবদ্ধ ও ক্ষুদ্র। পেশাদারী থিয়েটারের ফাঁকা মঞ্চের পিছনের দিকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে একটি মাত্র দৃশ্যপট। যেখানে রয়েছে রাতে অভিনীত নাটকের জিনিসপত্র আর যন্ত্রপাতি, মঞ্চের মাঝে রয়েছে একটি উল্টানোর টুল, আর চারিদিকে রাত্রির গাঢ় অন্ধকার। আর রয়েছে একটি মোমবাতি হাতে হাসিমুখে রজনীকান্ত নামক চরিত্রের মঞ্চে উপস্থিতি। নামকরণের সার্থকতা : প্রশ্নের এই অংশের উত্তরের জন্য নিচের প্রশ্নটির উত্তর দেখাও। এবং সংক্ষেপে লেখার চেষ্টা করো। 👁️‍🗨️  ‘নানা রঙের দিন’ নাটকটির নামকরণের তাৎপর্য আলোচনা করো ।