“এই পবিত্রতার নামাবলীটা সেদিন হঠাৎই ফাঁস হয়ে গেল...”
খ) সেদিন কী ফাঁস হয়ে গিয়েছিল?
অথবা,
‘পবিত্রতার নামাবলিটা’ কী?
অথবা,
বক্তার এই মন্তব্যের কারণ আলোচনা করো।
গ) তা কোন দিন কিভাবে ফাঁস হয়ে গেল?
অথবা,
এই পবিত্রতার নামাবলিটা কোন্ দিন কীভাবে রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের সামনে ফাঁস হয়ে গিয়েছিল?
ঘ) ‘নানা রঙের দিন’ নাটক অবলম্বনে মন্তব্যটি তাৎপর্য লেখো।
অথবা,
এই মন্তব্যের মাধ্যমে রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় কী বুঝিয়েছেন আলোচনা করো।
অথবা,
এই মন্তব্যের মাধ্যমে রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় কী বুঝিয়েছেন আলোচনা করো।
ক) ‘সেদিন’ বলতে কোন্ দিনের কথা বলা হয়েছে?
প্রথম জীবনে রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় নাট্যাভিনয়ে দারুন পারদর্শিতা দেখিয়েছিলেন। সেই অভিনয়ে মুগ্ধ হয়ে একটি বড় লোকের সুন্দরী মেয়ে তাঁর প্রেমে পড়ে। একসময় রজনীকান্ত তার প্রেমিকাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু মেয়েটি শর্ত দেয়, অভিনয় ছাড়লেই কেবল সে তাঁকে বিয়ে করতে পারবে। কারণ, তার মতে, অভিনেতার সঙ্গে প্রেমর সম্পর্ক করা যায় কিন্তু বিয়ে করে সেই সম্পর্কে সামাজিক সম্মান দেয়া যায় না। সেদিন রাতেই একটি ‘বাজে হাসির বই’-এ অভিনয় করতে করতে তাঁর চোখ খুলে যায়। তিনি উপলব্ধি করেন নাট্যাভিনয় কোন পবিত্র শিল্প নয়। ‘সেদিন’ বলতে এই দিনের কথা বলা হয়েছে।
খ) সেদিন কী ফাঁস হয়ে গিয়েছিল?
অথবা,
‘পবিত্রতার নামাবলিটা’ কী?
অথবা,
বক্তার এই মন্তব্যের কারণ আলোচনা করো।
রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় একজন শিল্প প্রেমিক শিল্পী। শিল্পকে ভালোবেসেই তিনি পেয়েছেন খ্যাতি, পেয়েছেন সম্মান। এমন কি জীবনে এসেছে প্রেমও। কিন্তু সেই প্রেমকে পরিণতি দেওয়ার প্রশ্নেই বাধে গোল। তার প্রেমিকা শর্ত দেয়, বিয়ে করতে হলে অভিনয় ছাড়তে হবে।
সেই সঙ্গে তিনি উপলব্ধি করেন, সমাজে একজন অভিনেতার মর্যাদা ঠিক কতটা। মানুষ অভিনেতার অভিনয় দেখে হাততালি দিতে পারে, প্রশংসা করতে পারে, মেডেলও দিতে পারে; এমনকি তার সঙ্গে প্রেমও করতে পারে। কিন্তু সামাজিক সম্মানের অংশীদার করতে পারে না। সেদিন রাত্রেই একটি বাজে হাসির নাটক করতে গিয়ে এই সত্য তার মধ্যে আরও গভীর ভাবে গেঁথে যায়। তিনি বুঝতে পারেন, সমাজ একজন অভিনেতাকে জোকার, ক্লাউন কিম্বা ভাঁড়ের চোখে দেখতেই পছন্দ করে, মানুষের মনোরঞ্জনই যার একমাত্র কাজ। কোন সামাজিক সম্মান বা স্বীকৃতি এই কাজের বিনিময়ে পাওয়ার কোন সুযোগ নেই। সেই রাতের এই উপলব্ধির কারণেই রজনীকান্ত বুঝেছিলেন, নাট্যাভিনয় কোন পবিত্র শিল্প নয়। যারা তা বলে, হয় তারা মিথ্যুক, না হয় গাধা। বাস্তবতার এই পরিহাসকে তিনি ‘পবিত্রতার নামাবলি’ বলে অভিহিত করেছেন।
গ) তা কোন দিন কিভাবে ফাঁস হয়ে গেল?
অথবা,
এই পবিত্রতার নামাবলিটা কোন্ দিন কীভাবে রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের সামনে ফাঁস হয়ে গিয়েছিল?
রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় একজন শিল্প প্রেমিক শিল্পী। শিল্পকে ভালোবেসেই তিনি পেয়েছেন খ্যাতি, পেয়েছেন সম্মান। এমন কি জীবনে এসেছে প্রেমও। কিন্তু সেই প্রেমকে পরিণতি দেওয়ার প্রশ্নেই বাধে গোল। তার প্রেমিকা শর্ত দেয়, বিয়ে করতে হলে অভিনয় ছাড়তে হবে।
কিন্তু জীবনের প্রথম ভালবাসাকে ছেড়ে তিনি দ্বিতীয় ভালবাসায় ডুবে গিয়ে তিনি বাঁচাতে চাননি। ফলে প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যায়। সেই সঙ্গে তিনি উপলব্ধি করেন, সমাজে একজন অভিনেতার মর্যাদা ঠিক কতটা। মানুষ অভিনেতার অভিনয় দেখে হাততালি দিতে পারে, প্রশংসা করতে পারে, মেডেলও দিতে পারে; এমনকি তার সঙ্গে প্রেমও করতে পারে। কিন্তু সামাজিক সম্মানের অংশীদার করতে পারে না। সেদিন রাত্রেই একটি বাজে হাসির নাটক করতে গিয়ে এই সত্য তার মধ্যে আরও গভীর ভাবে গেঁথে যায়। তিনি বুঝতে পারেন, সমাজ একজন অভিনেতাকে জোকার, ক্লাউন কিম্বা ভাঁড়ের চোখে দেখতেই পছন্দ করে সমাজ, মানুষের মনোরঞ্জনই যার একমাত্র কাজ। কোন সামাজিক সম্মান বা স্বীকৃতি এই কাজের বিনিময়ে পাওয়ার কোন সুযোগ নেই। সেই রাতের এই উপলব্ধির কারণেই রজনীকান্ত বুঝেছিলেন, নাট্যাভিনয় কোন পবিত্র শিল্প নয়। যারা তা বলে, হয় তারা মিথ্যুক, না হয় গাধা। বাস্তবতার এই পরিহাসকে তিনি ‘পবিত্রতার নামাবলি’ বলে অভিহিত করেছেন। এবং এভাবেই সেদিন তা ফাঁস হয়ে গিয়েছিল।
ঘ) ‘নানা রঙের দিন’ নাটক অবলম্বনে মন্তব্যটি তাৎপর্য লেখো।
অথবা,
এই মন্তব্যের মাধ্যমে রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় কী বুঝিয়েছেন আলোচনা করো।
প্রথম নাট্যচর্চা ও নাট্যশিল্পের অবির্ভাব প্রাচীন গ্রিসের নগররাষ্ট্র এথেন্সে, আনুমানিক খ্রিষ্টপূর্ব ৫০০ থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ৪০০ এর মধ্যবর্তী কোন সময়ে। সেই সময় থেকেই নাট্যাভিনয় কেবল বিনোদনের উপাদান নয়, তা পবিত্র শিল্প হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। অজিতের বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা নাটক ‘নানা রঙের দিন’- এর প্রধান চরিত্র রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ও প্রথম জীবন থেকেই নাট্যাভিনয়কে এভাবেই দেখে আসছেন। কিন্তু একসময় এই অভিনয় না ছাড়ার কারণেই তাঁর প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যায়। কারণ প্রেমিকার কাছে তার যশ ও খ্যাতির কোন সামাজিক মূল্য ছিল না। অর্থই ছিল তার কাছে প্রধান। পরিণতিতে এই সম্পর্ক ভেঙে যায়। রজনীকান্ত এই সময় উপলব্ধি করেন ‘নাট্যাভিনয় একটি পবিত্র শিল্প’ —এই কথার কোন বস্তুগত মূল্য নেই। আর তাই তিনি নাট্যাভিনয় সম্পর্কিত পবিত্রতার ধারণাকে ‘পবিত্রতার নামাবলী’ বলে অভিহিত করেছেন এবং তাকে ‘বাজে কথা’ বলে অভিহিত করেছেন।
সেই সঙ্গে তিনি এও উপলব্ধি করেন, সমাজে একজন অভিনেতার মর্যাদা ঠিক কতটা। মানুষ অভিনেতার অভিনয় দেখে হাততালি দিতে পারে, প্রশংসা করতে পারে, মেডেলও দিতে পারে; এমনকি তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়তে পারে। কিন্তু সামাজিক সম্মানের অংশীদার করতে পারে না। সেদিন রাত্রেই একটি ‘বাজে হাসির নাটক’ করতে গিয়ে এই সত্য তার মধ্যে আরও গভীরভাবে গেঁথে যায়।
তিনি বুঝতে পারেন, সমাজ একজন অভিনেতাকে জোকার, ক্লাউন কিম্বা ভাঁড়ের চোখে দেখতেই বেশি পছন্দ করে; মানুষের মনোরঞ্জনই যার একমাত্র কাজ। কোন সামাজিক সম্মান বা স্বীকৃতি এই কাজের বিনিময়ে পাওয়ার কোন সুযোগ নেই। এই উপলব্ধির কারণেই রজনীকান্ত বলেছিলেন, নাট্যাভিনয় কোন পবিত্র শিল্প নয়। যারা তা বলে, হয় তারা মিথ্যুক, না হয় গাধা।
উদ্ধৃত অংশের বিষয়ে এটাই ছিল বক্তার বক্তব্যের মূল তাৎপর্য।
---------xx--------
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন