সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

“রক্তের অক্ষরে দেখিলাম / আপনার রূপ”

 “রক্তের অক্ষরে দেখিলাম / আপনার রূপ” “রক্তের অক্ষরে দেখিলাম / আপনার রূপ” ক) ‘রক্তের অক্ষর’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? খ) ‘আপনার রূপ’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? গ) কবি কীভাবে তা প্রত্যক্ষ করেছেন? ঘ) কবি এ কথা কেন বলেছেন? ঙ) কবি কেমনভাবে নিজের রূপ দেখলেন এবং নিজেকে চিনলেন? ক) রক্তের অক্ষর : বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘রূপনারানের কূলে’ কবিতা থেকে উদ্ধৃত অংশটি নেয়া হয়েছে। এই কবিতায় কবি দেখিয়েছেন, মানব সভ্যতা কোন রূপকথার গল্পের মত এগোয়িনি। দ্বন্দ্বময় বস্তু জগতের অসংখ্য আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক রক্তক্ষয়ী সংঘাতের মধ্য দিয়ে তার বিকাশ ঘটেছে। এই রক্তক্ষয়ী সংঘাতকেই তিনি ‘রক্তের অক্ষর’ হিসাবে অভিনীত করেছেন। খ) আপনার রূপ : আক্ষরিক অর্থে ‘আপনার রূপ ’ বলতে কবি নিজেকে এবং নিজের চেতনাকে বুঝিয়েছেন। কিন্তু তার এই উপলব্ধির ব্যাপ্তি শুধুমাত্র ব্যক্তিকেন্দ্রিক নয়। বিশ্বমানবতার পূজারী কবি নিজের জীবন ও জগতকে গভীর বিশ্লেষণী দৃষ্টিতে দেখেছেন এবং উপলব্ধি করেছেন মানবাত্মার এক বিশেষ রূপ। ‘আপনার রূপ’ বলতে কবি এখানে এই মানবাত্মার বা মানবচেতনার  স্বরূপকেই বুঝিয়েছেন। গ) কীভাবে প্রত্যক

“জানিলাম এ জগৎ / স্বপ্ন নয়”

 “জানিলাম এ জগৎ / স্বপ্ন নয়” “জানিলাম এ জগৎ / স্বপ্ন নয়” ক) কার এই উপলব্ধি? খ) তিনি কিভাবে জেনেছিলেন ‘এ জগত স্বপ্ন নয়’? গ) তাঁর এই উপলব্ধির তাৎপর্য লেখ।  অথবা, ‘রূপনারানের কূলে’ কবিতা অবলম্বনে কবির এই ভাবনার তাৎপর্য লেখো। ক) কবির উপলব্ধি : বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘শেষ লেখা’ কাব্যগ্রন্থের ১১ সংখ্যক কবিতা, পাঠ্যপুস্তকে ‘ রূপনারানের কূলে ’ নামে পরিচিত। এই কবিতা থেকে উদ্ধৃত অংশটি নেওয়া হয়েছে। উদ্ধৃতিতে ব্যক্ত উপলব্ধিটি আসলে কবির নিজের। খ) উপলব্ধি কীভাবে : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের রক্তাক্ত পরিস্থিতিতে কবি নতুন করে আবিষ্কার করেছেন নিজেকে এবং এই বিশ্বজগতকে। উপলব্ধি করেছেন, এই জগৎ ও জীবন শুধুই স্বপ্নময় নয়, বরং নানা ঘাত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে তাদের বিকাশ ঘটে চলেছে অনন্তকাল ধরে। তাঁর কথায়, রক্তের অক্ষরে দেখিলাম আপনার রূপ, চিনিলাম আপনারে আঘাতে আঘাতে বেদনায় বেদনায়; কবির উপলব্ধি হল, এটাই প্রকৃত সত্য এবং তা খুবই কঠিন। সুতরাং, জীবনের শেষ পর্বে এসে দেশ ও বিদেশের অসংখ্য অর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক সংঘাতের মধ্য দিয়ে পৃথিবী যেভাবে এগোচ্ছে, তা লক্ষ্য করেই কবির এই উপলব্ধি। গ) এই উ

“রূপনারানের কূলে / জেগে উঠিলাম ”

“রূপনারানের কূলে / জেগে উঠিলাম” “রূপনারানের কূলে / জেগে উঠিলাম” ক) বক্তাকে? অথবা, কে জেগে উঠলেন? খ) তাঁর এই জেগে ওঠার স্বরূপ বা তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর। গ) জেগে ওঠার আসল অর্থ কবিতাটির মধ্যে কিভাবে প্রকাশিত হয়েছে তা বুঝিয়ে দাও। - ২০১৭ ক) কে জেগে উঠলেন: উদ্ধৃত অংশটি কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘শেষ লেখা’ কাব্যগ্রন্থের ১১ সংখ্যক কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে, যা উচ্চমাধ্যমিক বাংলা সাহিত্য সম্মেলনে ‘রূপনারানের কূলে’ নামে মুদ্রিত হয়েছে। এই কবিতায় কবি ‘জীবন-মৃত্যুর স্বরূপ’ সম্পর্কে তার শেষ জীবনের যে উপলব্ধি, তা ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি এই কথা বলেছেন। অর্থাৎ কবি এখানে নিজে জেগে উঠেছেন। খ) জেগে ওঠার স্বরূপ বা তাৎপর্য : জীবনের শেষ প্রান্তে পৌঁছে কবি উপলব্ধি করেছেন, এই জগত শুধুই স্বপ্নময় নয়, বরং ঘাত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে জীবনের বিকাশ ঘটাই এই জগতের প্রকৃত সত্য। কবির ভাবনায়, সে সত্য কঠিন। দেশ ও বিদেশের অসংখ্য সামাজিক ও রাজনৈতিক সংঘাতের মধ্য দিয়ে পৃথিবী যেভাবে এগোচ্ছে, তা লক্ষ্য করেই কবির এই উপলব্ধি। কবি সেই সঙ্গে এও উপলব্ধি করেছেন, এই কঠিনকেই ভালবাসতে হবে। কারণ, কবির কথায়, সে কখন

“মৃত্যুর ছলনা ও মিথ্যা আশ্বাসের প্রতারণা যে বুঝিতে পারে সে-ই শান্তির অক্ষয় অধিকার লাভ করে।”

‘মৃত্যুর ছলনা ও মিথ্যা আশ্বাসের প্রতারণা যে বুঝিতে পারে সে-ই শান্তির অক্ষয় অধিকার লাভ করে।’ - ২০১৭ ‘মৃত্যুর ছলনা ও মিথ্যা আশ্বাসের প্রতারণা যে বুঝিতে পারে সে-ই শান্তির অক্ষয় অধিকার লাভ করে।’ ‘রূপনারানের কূলে’ কবিতা অনুসরণে মন্তব্যটির সার্থকতা বিচার কর। 🔘 কবির নতুন চেতনার জন্ম : কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবনের শেষ প্রান্তে এসে এক নতুন চেতনায় জাগ্রত হয়েছেন। জীবন মৃত্যুর স্বরূপ সম্বন্ধে তাঁর ভাবনা এই সময় পূর্ণতা পেয়েছে। সেই পূর্ণতার প্রতিচ্ছবি রয়েছে ‘রূপনারানের কূলে’ কবিতার সম্পূর্ণ স্তবক জুড়ে। 🔘 সার্থকতা বিচার : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের রক্তাক্ত পরিস্থিতিতে কবি নতুন করে আবিষ্কার করেছেন নিজেকে এবং এই বিশ্ব জগতকে। তাই বলেছেন, রক্তের অক্ষরে দেখিলাম আপনার রূপ, চিনিলাম আপনারে দেখেছেন জগৎজুড়ে মৃত্যুর বিভীষিকা, আর মিথ্যা আশ্বাস কীভাবে জগৎ ও জীবনকে বিভীষিকাময় করে তোলে। তাই তার কাছে মৃত্যু আসলে ছলনাময়ী, মিথ্যা আশ্বাসে সে প্রতিনিয়ত প্রতারণা করে চলেছে মানুষকে। তার কাছে সময় অসময় বলে যেন কিছু নেই। কখন, কীভাবে, কেন আসবে, সে জানায় না কখনও। ফলে এক অনিশ্চিত জীবনের কিনারায় দা

এভাবে দেশের লোককে বাঁচানো যায় না।

“এভাবে দেশের লোককে বাঁচানো যায় না।” “এভাবে দেশের লোককে বাঁচানো যায় না।” ক) কে, কোন প্রসঙ্গে এ কথা ভাবছে? খ) এই ভাবনার মধ্য দিয়ে তার চরিত্রের কোন বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে? গ) কে, কেন এবং কীভাবে দেশের লোককে বাঁচাতে চায়? ক) কে, কোন প্রসঙ্গে ভাবছেন : কে ভাবছেন : কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দোপাধ্যায় রচিত 'কে বাঁচায়, কে বাঁচে' গল্প থেকে উদ্ধৃত অংশটি নেওয়া হয়েছে। এই গল্পের প্রধান চরিত্র মৃত্যুঞ্জয়ের বন্ধু নিখিল এ কথা ভাবছে। কোন প্রসঙ্গে ভাবছেন : মৃত্যুঞ্জয় ১৩৫০ সালে দুর্ভিক্ষে অনাহারী মানুষের মৃত্যু দেখে শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। তাই তাদের সেবায় সে তার মাইনের সব টাকাই রিলিফ ফান্ডে দিয়ে দিতে চায়। নিজের পরিবারের কথা না ভাবায় এবং রিলিফের মাধ্যমে এই মৃত্যুকে ঠেকানোর চেষ্টার অসারতার কথা প্রকাশ করতে গিয়ে নিখিল একথা বলেছে। খ) বক্তার চরিত্রের বৈশিষ্ট্য : বন্ধু বৎসল মানুষ : আসলে নিখিল অত্যন্ত বন্ধুবৎসল মানুষ। তাই সে মৃত্যুঞ্জয়কে বারবার বোঝানোর চেষ্টা করে তার ভাবনায় অসঙ্গতি কোথায়।  সে তার পরিবারের নিরাপত্তার কথা ভেবেই তার এই ভাবনাকে তুলে ধরে। আন্তরিক ও মানবিক : নিখিল আবেগ অনুভ

ভিক্ষা দেওয়ার মতো অস্বাভাবিক পাপ যদি আজও পুণ্য হয়ে থাকে...

 “ভিক্ষা দেওয়ার মতো অস্বাভাবিক পাপ যদি আজও পুণ্য হয়ে থাকে, জীবনধারণের অন্নে মানুষের দাবি জন্মাবে কীসে?” ক) কে ভাবছে একথা? অথবা, বক্তাকে? খ) তার এরূপ (‘ভিক্ষা দেওয়া’কে অস্বাভাবিক পাপ) ভাবার কারণ কী? গ) এ প্রসঙ্গে উদ্ধৃতিটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর। ক) বক্তা : উদ্ধৃত অংশটি মানবদরদী কথাকার মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’ গল্প থেকে নেয়া হয়েছে। এই গল্পের বাস্তববাদী চরিত্র নিখিলের ভাবনায় উদ্ধৃত ভাবনাটি প্রকাশিত হয়েছে। খ) এরূপ ভাবার কারণ : নিখিল বাস্তববাদী মানুষ। যুক্তিবোধ তার চিন্তা-চেতনাকে প্রতিনিয়ত শাণিত করে তোলে। তাই কিছু করার আগে সে যুক্তি-বুদ্ধি দিয়ে বিচার করে এবং তথ্য দিয়ে যাচাই করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। তার এই যুক্তিবাদী চিন্তা-চেতনাই তাকে ‘রিলিফ’ দেওয়ার বিষয়টিকে অযৌক্তিক প্রতিপন্ন করে। কারণ, এই ‘রিলিফ’ তার কাছে ভিক্ষা দেওয়ার সমতুল্য। প্রকৃতপক্ষে, ‘মধুর আধ্যাত্বিক নীতি’র মোড়কে ভিক্ষা দেয়ার মাধ্যমে জীবনধারণের অন্নে মানুষের যে জন্মগত দাবি, তাকে কৌশলে অস্বীকার করা হয়। এই কারণে নিখিলের ভাবনায়, ‘সেটা অস্বাভাবিক পাপ’ এবং ‘অনিয়ম’। তাই তার এমন ভাবনা। গ) উদ্ধ

Bangabhumi prati - Written by Michael Madhusudan Dutta

বঙ্গভূমির প্রতি মাইকেল মধুসূদন দত্ত My native Land, Good Night!” – Byron রেখো, মা, দাসেরে মনে, এ মিনতি করি পদে সাধিতে মনের সাধ, ঘটে যদি পরমাদ, মধুহীন করো না গো তব মনঃকোকনদে। প্রবাসে দৈবের বশে, জীবতারা যদি খসে এ দেহ-আকাশ হতে, – নাহি খেদ তাহে। জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা কবে, চিরস্থির কবে নীর, হায় রে জীবন-নদে? কিন্তু যদি রাখ মনে, নাহি, মা, ডরি শমনে; মক্ষিকাও গলে না গো, পড়িলে অমৃতহ্রদে। সেই ধন্য নরকুলে, লোকে যারে নাহি ভুলে, মনের মন্দিরে সদা সেবে সর্ব্বজন; – কিন্তু কোন্ গুণ আছে, যাচিব যে তব কাছে, হেন অমরতা আমি, কহ গো শ্যামা জন্মদে! তবে যদি দয়া কর, ভুল দোষ, গুণ ধর, অমর করিয়া বর দেহ দাসে, সুবরদে! – ফুটি যেন স্মৃতি-জলে, মানসে মা যথা ফলে মধুময় তামরস কি বসন্তে, কি শরদে! --------__------ বঙ্গভূমির প্রতি কবিতার গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর 👈

বঙ্গভূমির প্রতি - মাইকেল মধুসূদন দত্ত

 বঙ্গভূমির প্রতি - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (Prescribed for classes IX & X,  ICSE (Syllabus) Examination) Subject : Bengali ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতাটি পড়ো 👈 ১) “এ মিনতি করি পদে” ক) উদ্ধৃত অংশটি কার লেখা কোন কবিতা থেকে নেয়া হয়েছে? খ) ‘মিনতি’ শব্দের অর্থ কী? গ) এই কবিতায় কে কাকে কেন মিনতি করছেন? উত্তর : ক) উদ্ধৃত অংশটি কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘ বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতা থেকে নেয়া হয়েছে। খ) ‘মিনতি’ শব্দের অর্থ হলো করুণ অনুরোধ বা করুণা প্রার্থনা করা। গ) এই কবিতায় কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত বঙ্গভূমির অর্থাৎ তাঁর জন্মভূমির কাছে করুণা প্রার্থনা করেছেন। মাইকেল মধুসূদন দত্ত ছিলেন একজন বিরল প্রতিভার অধিকারী কবি। নিজের এই প্রতিভার প্রতি তার বিশ্বাস ছিল অপার। এই বিশ্বাস থেকেই জন্ম নেয় তাঁর উচ্চাকাঙ্ক্ষা। তিনি বিশ্বাস করতেন ইউরোপে গেলে তাঁর কবি প্রতিভার যথাযথ বিকাশ ঘটবে। এবং জগত সভায় মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হবেন। এই ভাবনা থেকেই তিনি নিজের মাতৃভূমি ছেড়ে বিদেশ যাওয়ার সিদ্ধান্ত করেন। এই সিদ্ধান্ত নিলেও তিনি নিজ জন্মভূমিকে ভালবাসতেন এবং তার করুণা থেকে বঞ্চিত হতে চাইতেন না। এ কারণেই তিনি

মৃদু ঈর্ষার সঙ্গে সে তখন ভাবে

 “মৃদু ঈর্ষার সঙ্গে সে তখন ভাবে...” “মৃদু ঈর্ষার সঙ্গে সে তখন ভাবে...” ক) ‘সে’ কে? খ) কোন্ প্রসঙ্গে সে কী ভাবে? গ) তার এ ধরনের ভাবনার (ধারণার) কারণ কী? ক) ‘সে’- হল নিখিল : উদ্ধৃত অংশটি সমাজ সচেতন লেখক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’ ছোটগল্প থেকে নেওয়া হয়েছে। এই গল্পে ‘সে’ বলতে গল্পের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র নিখিলের কথা বলা হয়েছে। খ) নিখিলের ভাবনা ও তার প্রসঙ্গ : মৃত্যুঞ্জয়ের ভাবনার সঙ্গে নিখিলের ভাবনার কিছু পার্থক্য রয়েছে। তা সত্বেও নিখিল মৃত্যুঞ্জয়ের মধ্যে এমন কিছু গুণ ও শক্তির পরিচয় পেয়েছে, যার দ্বারা একদিকে, সে মাঝে মাঝে কাবু হয়ে পড়ে এবং অন্যদিকে মুগ্ধ হয়। এই মুগ্ধতা কখনও কখনও মৃদু ঈর্ষার জন্ম দেয়। এই পরিস্থিতিতে নিখিল ভাবে, সে ‘নিখিল না হয়ে মৃত্যুঞ্জয় হলে মন্দ ছিল না’। গ) ভাবনার (ধারণার) কারণ: ১) নিখিলের কিছু গুণ : আসলে অন্য সকলের মত নিখিল মৃত্যুঞ্জয়কে খুবই পছন্দ করে। কখনো কখনো মৃদু অবজ্ঞা করলেও তার প্রতি ভালোবাসায় কখনও ঘাটতি হয়নি। কারণ, মৃত্যুঞ্জয় নিরীহ, শান্ত ও দরদী প্রকৃতির একজন ভালো মনের মানুষ। সেই সঙ্গে সৎ ও সরল। ২)

শক্তির একটা উৎস আছে তার মধ্যে

 “শক্তির একটা উৎস আছে তার মধ্যে” Table Of Contents ক) বক্তাকে খ) কোন্ প্রসঙ্গে তার এই উপলব্ধি? গ) এখানে কার কোন্ শক্তির কথা বলা হয়েছে? ক) উদ্ধৃত অংশের বক্তা : উদ্ধৃত অংশটি সমাজ সচেতন কথা সাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’ গল্প থেকে নেয়া হয়েছে। এই গল্পে প্রধান চরিত্র মৃত্যুঞ্জয় সম্পর্কে তার সহকর্মী তথা বন্ধু নিখিলের ভাবনায় গল্পের কথক এই কথাটা বলেছেন। খ) বক্তব্যের প্রসঙ্গ : মৃত্যুঞ্জয় নিখিলের সহকর্মী এবং একজন ভালো বন্ধু। স্বাভাবিকভাবেই উভয়ে উভয়ের চরিত্র ও মানসিক গঠন সম্পর্কে খুবই সচেতন। সেই সচেতনতার কারণেই নিখিলের চোখে মৃত্যুঞ্জয়ের অনেক দোষ গুণ ধরা পড়েছে। উদ্ধৃত অংশে নিখিলের চোখে ধরা পড়া মৃত্যুঞ্জয়ের একটি বিশেষ গুণের (শক্তির) কথা উল্লেখ প্রসঙ্গেই তার এই উপলব্ধি। গ) মৃত্যুঞ্জয়ের শক্তির পরিচয় : মৃত্যুঞ্জয় দুর্বলচিত্ত ও ভাবপ্রবণ আদর্শবাদী নয়। তার মানসিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া শ্লথ ও নিস্তেজ নয়। নিখিলের ভাবনায়, তার মধ্যে আছে এক শক্তির উৎস যা অব্যয়কে শব্দরূপ দেয়ার চেষ্টায় যুগ যুগ ধরে মানুষ ব্যবহার করে চলেছে। ‘অব্যয়’ কথার অর্থ হ

মানসিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া শ্লথ, নিস্তেজ নয়

“মানসিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া শ্লথ, নিস্তেজ নয়” “মানসিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া শ্লথ, নিস্তেজ নয়” ক) উদ্ধৃত অংশটির বক্তা কে? খ) কার সম্পর্কে কোন প্রসঙ্গে বক্তা এই অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন? গ) তার এই অভিব্যক্তির যথার্থতা নির্ণয় কর? ক) উদ্ধৃতাংশের বক্তা : কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্প থেকে উদ্ধৃত অংশটি নেয়া হয়েছে। এই উদ্ধৃতিটির বক্তা হচ্ছেন এই গল্পের কথাকার মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে বক্তব্যটির মূলভাব এই গল্পের সহযোগী চরিত্র নিখিলের ভাবনা হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে। খ) বক্তব্যের প্রসঙ্গ : এই গল্পে নিখিল তার সহকর্মী তথা কাছের বন্ধু মৃত্যুঞ্জয়ের চারিত্রিক দৃঢ়তা ও মানসিক শক্তির বহরকে তুলে ধরার লক্ষ্যে এই অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন। গ) অভিব্যক্তির যথার্থতা বিচার : মৃত্যুঞ্জয় মধ্যবিত্ত চাকরিজীবী মানুষ। মাস মাইনে নিয়ে নিশ্চিন্তে জীবন যাপন করায় তার কোন প্রতিবন্ধকতা ছিল না। কিন্তু জীবনের শুরু থেকেই তার জীবন দর্শনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল মানব সভ্যতার সবচেয়ে প্রাচীন এক আদর্শবাদের ভাবনা। এই ভাবনা সাম্যবাদী সমাজের ভাবনা। নিখিলের মতে, যা আজকের সমা

রূপ-নারানের কূলে। কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

কবিতা: রূপনারানের কূলে। কবি - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রূপ-নারানের কূলে জেগে উঠিলাম , জানিলাম এ জগৎ স্বপ্ন নয় । রক্তের অক্ষরে দেখিলাম আপনার রূপ , চিনিলাম আপনারে আঘাতে আঘাতে বেদনায় বেদনায়; সত্য যে কঠিন, কঠিনেরে ভালোবাসিলাম , সে কখনো করে না বঞ্চনা । আমৃত্যুর দুঃখের তপস্যা এ জীবন , সত্যের দারুণ মূল্য লাভ করিবারে , মৃত্যুতে সকল দেনা শোধ ক’রে দিতে । --------xx------- 📃 ‘রূপ নারানের কূলে’ কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর পেতে এখানে ক্লিক করো ।

শিকার। কবিতা - কবি জীবনানন্দ দাশ

কবিতা। শিকার - কবি জীবনানন্দ দাশ ভোর; আকাশের রং ঘাসফড়িঙের দেহের মতো কোমল নীল : চারিদিকের পেয়ারা ও নোনার গাছ টিয়ার পালকের মতো সবুজ। একটি তারা এখনও আকাশে রয়েছে : পাড়াগাঁর বাসরঘরে সব চেয়ে গোধূলিমদির মেয়েটির মতো; কিংবা মিশরের মানুষী তার বুকের থেকে যে-মুক্তা                আমার নীল মদের গেলাসে রেখেছিলো হাজার হাজার বছর আগে এক রাতে তেমনি — তেমনি একটি তারা আকাশে জ্বলছে এখনও। হিমের রাতে শরীর ‘উম্’ রাখবার জন্য দেশোয়ালীরা                  সারারাত মাঠে আগুন জ্বেলেছে— মোরগ ফুলের মতো লাল আগুন; শুকনো অশ্বত্থপাতা দুমড়ে এখনও আগুন জ্বলছে তাদের; সূর্যের আলোয় তার রং কুঙ্কুমের মতো নেই আর; হ’য়ে গেছে রোগা শালিকের হৃদয়ের বিবর্ণ ইচ্ছার মতো। সকালের আলোয় টলমল শিশিরে চারিদিকের বন ও আকাশ                          ময়ূরের সবুজ নীল ডানার মতো ঝিলমিল করছে। ভোর; সারারাত চিতাবাঘিনীর হাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে বাঁচিয়ে নক্ষত্রহীন, মেহগনির মতো অন্ধকারে সুন্দরীর বন থেকে অর্জুনের বনে ঘুরে-ঘুরে! সুন্দর বাদামী হরিণ এই ভোরের জন্য অপেক্ষা করছিলো! এসেছে সে ভোরের আলোয় নেমে; কচি বাতাবী লেবুর মতো সবুজ সুগন্ধি ঘাস ছিঁড়ে-

“...... মানব সভ্যতার সবচেয়ে প্রাচীন ও সবচেয়ে পচা ঐতিহ্য আদর্শবাদের কল্পনা-তাপস বলে।”

“...... মানব সভ্যতার সবচেয়ে প্রাচীন ও সবচেয়ে পচা ঐতিহ্য আদর্শবাদের কল্পনা-তাপস বলে।” “...... মানব সভ্যতার সবচেয়ে প্রাচীন ও সবচেয়ে পচা ঐতিহ্য আদর্শবাদের কল্পনা-তাপস বলে।” ক) কার এমন ভাবনা? খ) কোন প্রসঙ্গে এমন ভাবনা? গ) এমন ভাবনার যথার্থতা গল্প অবলম্বনে ব্যাখ্যা কর। ক) কার এমন ভাবনা : মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে ’ ছোটগল্প থেকে উদ্ধৃত অংশটি নেওয়া হয়েছে। এই গল্পের প্রধান চরিত্র মৃত্যুঞ্জয় সম্পর্কে তার বন্ধু নিখিল এই ভাবনা পোষণ করেছে। খ) কোন প্রসঙ্গে এমন ভাবনা? নিখিল তার সহকর্মী মৃত্যুঞ্জয়কে অন্য সকলের মতই খুব পছন্দ করে। কখনো কখনো মৃদু অবজ্ঞা করলেও তাকে সে ভালো না বেসে পারে না। কারণ, মৃত্যুঞ্জয় একজন নিরীহ, শান্ত, দরদী, ও ভালো মানুষ। সেই সঙ্গে সরল ও সৎ। তবে, এগুলো ছাড়াও মৃত্যুঞ্জয়কে ভালোবাসার সবচেয়ে বড় কারণ হলো, ১) মৃত্যুঞ্জয়  মানব সভ্যতার সবচেয়ে প্রাচীন ও সবচেয়ে পচা ঐতিহ্য আদর্শবাদের(সাম্যবাদের) কল্পনা-তাপস । ২) মৃত্যুঞ্জয়ের মধ্যে এমন এক শক্তির উৎস আছে যা ‘অব্যয়কে’ (অপরিবর্তনীয়কে) ‘শব্দরূপ’ (পরিবর্তিত রূপ)  দিতে পারে। বস্তুত, উভয

মৃত্যুঞ্জয়ের সুস্থ শরীরটা অসুস্থ হয়ে গেল

“মৃত্যুঞ্জয়ের সুস্থ শরীরটা অসুস্থ হয়ে গেল” “মৃত্যুঞ্জয়ের সুস্থ শরীরটা অসুস্থ হয়ে গেল” ক) মৃত্যুঞ্জয় কেন অসুস্থ হয়ে পড়েছিল?  খ) শেষ পর্যন্ত মৃত্যুঞ্জয়ের কি পরিণতি লক্ষ্য করা গেল?  ভূমিকা : মানবতাবাদী কথা সাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ‘কে বাঁচায় কে বাঁচে’ ছোটগল্প থেকে উদ্ধৃত অংশটি নেয়া হয়েছে। এই গল্পের নায়ক মৃত্যুঞ্জয় অফিসে যাওয়ার পথে কলকাতা শহরের ফুটপাতে অনাহারে মানুষের মৃত্যু দেখে অসুস্থ হয়ে পড়ে। ক) মৃত্যুঞ্জয়ের অসুস্থ হয়ে পড়ার কারণ : মনের সংবেদনশীলতা : মৃত্যুঞ্জয় মানবদরদী ও সংবেদনশীল মনের মানুষ। মানুষের দুঃখ তাকে কষ্ট দেয়, আনন্দ করে উল্লসিত। সে ছিল ‘মানব সভ্যতার সবচেয়ে প্রাচীন ও সবচেয়ে পচা ঐতিহ্য আদর্শবাদের কল্পনা-তাপস’। মানসিক বেদনাবোধ : এহেন মৃত্যুঞ্জয় এই মৃত্যুর কারণ খুঁজতে গিয়ে আবিষ্কার করে, এই দুর্ভিক্ষের দিনে সবকিছু জেনেশুনেও চারবেলা পেট ভরে খাওয়াটা এক ধরণের ক্ষমাহীন অপরাধ। এই অপরাধবোধের কারণেই মৃত্যুঞ্জয় দারুন মানসিক বেদনাবোধের শিকার হয়। এই বেদনার প্রতিক্রিয়ায় শেষ শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। খ) মৃত্যুঞ্জয়ের শেষ পরিণতি