সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

সহমরণ — সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত

সহমরণ — সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত সহমরণ — সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত ‘জিজ্ঞাসি’ছ পড়া কেন গা’? শুনিবে তা’? — শোন তবে মা — দুখের কথা ব’ল্ ব কা’রে বা! ************************* জন্ম আমার হিদুঁর ঘরে, বাপের ঘরে, খুব আদরে, ছিলাম বছর দশ; কুলীন পিতা, কুলের গোলে, ফেলে দিলেন বুড়ার গলে; হ’লাম পরের বশ। আচারে তার আস্ ত হাসি, — ব’লব কি আর পরকাশি, — মিটল সকল সাধ; — হিঁদুর মেয়ে অনেক ক’রে শ্রদ্ধা রাখে স্বামীর ’পরে তা’তেও বিধির বাদ। বুড়াকালের অত্যাচারে,— শয্যাশায়ী ক’রলে তা’রে জেগেই পোহাই রাতি; দিন কাটেত’ কাটে না রাত, মাসের পরে গেল হঠাৎ, — নিবল জীবন বাতি। ********************** কতক দুঃখে, কতক ভয়ে শরীর এল অবশ হ’য়ে ভাঙল সুখের হাট খ’য়ের রাশি ছড়িয়ে পথে, চল্ ল নিয়ে শবের সাথে,— যেথায় শ্মশান ঘাট। গুঁড়িয়ে শাঁখা, সবাই মিলে, চিতায় মোরে বসিয়ে দিলে, বাজ্ ল শতেক শাঁক; লোকের ভিড়ে ভরেছে ঘাট, ধুঁইয়ে উঠে চিতার কাঠ, উঠ্ল গর্জ্জে ঢাক। ******************** রোমে, রোমে, শিরায়, শিরায়, জ্বালা ধরে, —প্রাণ বাহিরায়,— মরি বুঝি ধোঁয়ায় এবার! আচম্বিতে—চিৎকার রোলে— চিতা ভেঙে, পড়িলাম জলে, মাঝি এক নিল নায়ে তার। যত লোক করে ‘মার

এটা অন্য রকমের লভ সিন; প্রোগ্রেসিভ লভ সিন

“...এটা অন্য রকমের লভ সিন; প্রোগ্রেসিভ লভ সিন।” ক) বক্তা কে? খ) ‘অন্য রকমের লভ সিন’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? গ) ‘লভ সিন’টির বিবরণ দাও। ঘ) কেন দৃশ্যটিকে ‘প্রগ্রেসিভ’ বলা হয়েছে তা নিজের ভাষায় লেখো। ক) বক্তা কে? উদ্ধৃত অংশটি প্রখ্যাত নাট্যকার শম্ভু মিত্রের লেখা ‘বিভাব’ নাটক থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে উল্লিখিত মন্তব্যটির বক্তা হলেন, এই নাটকের অন্যতম চরিত্র তৃপ্তি মিত্র ওরফে বৌদি। খ) ‘অন্য রকমের লভ সিন’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? নাট্যকার তথা অভিনেতা শম্ভু মিত্র এই নাটকে (বিভাব) বহুরূপী নাট্য দলের সম্পাদকের চাহিদা অনুযায়ী হাসির নাটক তৈরিতে মনোযোগ দেন। তৃপ্তি মিত্রের নির্দেশনায় একটি ‘লভ সিন’ তৈরির চেষ্টাও হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হাস্যরস সৃষ্টি করতে পারেনি। তাই, এই নাটকের নায়িকা তৃপ্তি মিত্র, আরও একবার চেষ্টা করে দেখার প্রস্তাব দেন। তাঁর প্রস্তাবিত এই নতুন ধরণের ‘লভ সিন’কে ‘প্রগ্রেসিভ লভ সিন’ বলা হয়েছে। এখানে ‘অন্যরকম লভ সিন’ বলতে এই ‘প্রগ্রেসিভ লভ সিন’-এর কথাই বোঝানো হয়েছে। গ) ‘লভ সিন’টির বিবরণ দাও। এই নাটকের নায়িকা তৃপ্তি মিত্র নির্দেশিত এই দৃশ্যে নায়ক নায়িকার চরিত্রে অংশ নেন যথাক্রমে

এবার নিশ্চয়ই লোকের খুব হাসি পাবে

“এবার নিশ্চয়ই লোকের খুব হাসি পাবে।” এবার নিশ্চয়ই লোকের খুব হাসি পাবে। ক) কে, কখন এ কথা বলেছে? অথবা, কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে একথা বলা হয়েছে? খ) এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে বক্তা কি বোঝাতে চেয়েছেন? গ) সমগ্র নাট্য কাহিনীর নিরিখে মন্তব্যটির তাৎপর্য আলোচনা করো। ক) কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে একথা বলা হয়েছে? অথবা, কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে একথা বলা হয়েছে? নাট্যকার শম্ভু মিত্রের লেখা ‘বিভাব’ নাটকের শেষ পর্বে দেখা যায় ‘হাসির খোরাক’ খুঁজতে শম্ভু মিত্র ও অমর গাঙ্গুলী পথে নামছেন। কারণ, তাদের ধারণা হয়, চার দেয়াল-এর বাইরে — রাস্তায় কিংবা মাঠে-ঘাটে রয়েছে ‘হাসির খোরাক’। কিন্তু একটু এগোতেই তাঁরা দেখতে পান, অন্য বস্ত্রের দাবিতে এগিয়ে আসছে একটি মিছিল। পুলিশের মানা অগ্রাহ্য করায় পুলিশ সেই মিছিলে গুলি চালায় এবং দু’জন ছেলেমেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এই ঘটনা শম্ভু মিত্রকে প্রবলভাবে আঘাত করে। তিনি উপলব্ধি করেন, যেখানে অন্ন-বস্ত্রের দাবিতে মানুষ নিহত হয়, সেখানে হাসির খোরাক খুঁজে পাওয়া কঠিন কাজ। মূলত, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে লেখক শম্ভু মিত্র অমর গাঙ্গুলী ও সামনে বসে থাকা দর্শকদের উদ্দেশ্যে শ্লেষের

জীবন কোথায়?

“জীবন কোথায়?” — ২০১৯, ২০২২ জীবন কোথায় ক) কে কাকে একথা বলেছেন? খ) বক্তা জীবনকে কোথায় খুঁজে পাওয়া যাবে বলে মনে করেন? গ) সত্যিই কি তাঁরা হাস্যজ্জ্বল জীবনের সন্ধান পেয়েছিলেন? ক) কে কাকে একথা বলেছেন? বিশিষ্ট নাট্যকার শম্ভু মিত্রের লেখা ‘বিভাব’ নাটকে শম্ভু মিত্র তাঁর সহ অভিনেতা আমর গাঙ্গুলিকে উদ্দেশ্য করে আলোচ্য মন্তব্যটি করেছেন। খ) বক্তা জীবনকে কোথায় খুঁজে পাওয়া যাবে বলে মনে করেন? নাট্যকার শম্ভু মিত্রের লেখা বিভাব নাটকে নাট্যদলের সম্পাদকের নির্দেশে হাসির নাটকের উপকরণ খুঁজতে শম্ভু মিত্র তার সহ-অভিনেতা আমার গাঙ্গুলীর বাড়িতে যান। সেখানে তৃপ্তি মিত্রের নির্দেশানায় ‘লভ সিন’ এবং ‘প্রগ্রেসিভ লভ সিন’ অবতারণার মাধ্যমে হাসির উপকরণ তৈরীর চেষ্টা হয়। কিন্তু সেই চেষ্টা শেষ পর্যন্ত বিফল হয়। এই বিফলতার কারণ খুঁজতে গিয়ে তাঁরা উপলব্ধি করেন, প্রকৃত হাসির উপাদান এই ঘটনার মধ্যে নেই। অনেক চিন্তাভাবনার পর শম্ভু মিত্র উপলব্ধি করেন, প্রকৃত ‘হাসির খোরাক’ রয়েছে সাধারণ মানুষের জীবন জীবিকা কেন্দ্রিক নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনার মধ্যে। তাই হাসির উপকরণ খুঁজে পেতে হলে খুঁজে বের করতে হবে সেই সাধারন জী

এই ঘরের মধ্যে জীবনকে উপলব্ধি করা যাবে না

“এই ঘরের মধ্যে জীবনকে উপলব্ধি করা যাবে না।” এই ঘরের মধ্যে জীবনকে উপলব্ধি করা যাবে না। ক) বক্তা কে? খ) বক্তার এমন উপলব্ধির কারণ কী? অথবা, কখন কোন পরিস্থিতিতে বক্তার কেন এমন মনে হয়েছিল কেন? গ) জীবনকে উপলব্ধি করার জন্য বক্তা কী করেছিলেন? ঘ) শেষে তার কিরূপ অভিজ্ঞতা হয়েছিল? ঙ) বক্তার এই মন্তব্যের তাৎপর্য আলোচনা করো। ক) বক্তা কে? প্রখ্যাত নাট্যকার শম্ভু মিত্রের লেখা বিভাব নাটক থেকে উদ্ধৃত অংশটি গৃহীত হয়েছে। এই নাটকে উদ্ধৃত অংশের বক্তা হলেন নাট্যকার শম্ভু মিত্র নিজেই। খ) বক্তার এমন উপলব্ধির কারণ কী? অথবা, কখন কোন্ পরিস্থিতিতে বক্তার কেন এমন মনে হয়েছিল? ‘বিভাব’ নাটকের নাট্য দলের সম্পাদকের নির্দেশ ছিল বক্স অফিসের চাহিদা অনুযায়ী একটি হাসির নাটক মঞ্চস্থ করতে হবে, যা নাকি ভীষণ জনপ্রিয় হবে। সেই হাসির নাটকের উপকরণ খুঁজতে শম্ভু মিত্র এসে পৌঁছান তার সহ অভিনেতা অমর গাঙ্গুলীর বাড়িতে। প্রথমেই শম্ভু মিত্র কল্পিত বসার ভঙ্গির মাধ্যমে হাস্যরস সৃষ্টির চেষ্টা করেন। কিন্তু অমর গাঙ্গুলি ও বৌদি তৃপ্তি মিত্র জানিয়ে দেন, এতে হাসার মতো কোন উপকরণ, যেমন ‘হিউম্যান ইন্টারেস্ট’ বা ‘পপুলার অ্যাপিল

কোথাও জীবনের খোরাক, হাসির খোরাক নেই

“কোথাও জীবনের খোরাক, হাসির খোরাক নেই।” কোথাও জীবনের খোরাক, হাসির খোরাক নেই। ক) বক্তা কে? খ) ‘কোথাও জীবনের খোরাক, হাসির খোরাক নেই’ বলে বক্তা মনে করেছেন কেন? অথবা, বক্তার এই মন্তব্যটির কারণ আলোচনা করো। ক) বক্তা কে? উদ্ধৃত অংশটি প্রখ্যাত নাট্যকার শম্ভু মিত্রের লেখা বিভাব নাটক থেকে নেয়া হয়েছে। এই নাটকে উদ্ধৃত অংশটির বক্তা হলেন নাট্যকার শম্ভু মিত্র নিজেই। খ) ‘কোথাও জীবনের খোরাক, হাসির খোরাক নেই’ বলে বক্তা মনে করেছেন কেন? স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে মন্বন্তর, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, দেশ ভাগজনিত কারণে উদ্ভূত উদ্বাস্তু মানুষ সরকারের কাছে খাদ্য বস্ত্র ও বাসস্থানের দাবি তোলে। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বল্লভ ভাই প্যাটেল বাঙালিকে ‘কাঁদুনে জাত’ বলে কটাক্ষ করেন। এরই প্রেক্ষাপটে নাট্যকার শম্ভু মিত্র হাসির অনুষঙ্গে বাঙালি জীবনের কান্নার উৎস অনুসন্ধান করেন। তাই এই নাটক হাসির নয়, জীবনের নাটক আর এই কারণেই নাটকের প্রথমেই কাল্পনিক বসার ভঙ্গির মাধ্যমে এবং পরে ‘লভ সিন’ ও ‘প্রগ্রেসিভ লভ সিন’ অভিনয় করে সার্থক হাসির নাটক মঞ্চস্থ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। তখনই নাট

এমন সময় হঠাৎই এক সাহেবের লেখা পড়লাম

এমন সময় হঠাৎই এক সাহেবের লেখা পড়লাম।” — ২০২০ এমন সময় হঠাৎই এক সাহেবের লেখা পড়লাম। ক) ‘এমন সময়’ বলতে কোন্ পরিস্থিতির কথা বলা হয়েছে? খ) তিনি কী লিখেছিলেন? ক) ‘এমন সময়’ বলতে কোন্ পরিস্থিতির কথা বলা হয়েছে? নাট্যকার শম্ভু মিত্র ‘বিভাব’ নাটকে দেখিয়েছেন গ্রুপ থিয়েটারের সঙ্গে কীভাবে জড়িয়ে আছে ‘দুরন্ত অভাব’। তার ওপর, সরকার গ্রুপ থিয়েটার-এর কাছ থেকে খাজনা আদায় করে। ফলে, তারা চূড়ান্ত আর্থিক সংকটের মুখোমুখি হয়। নাট্যকার এই সংকট থেকে মুক্তির পথ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। একদিন একটি পুরনো সংস্কৃত নাটক থেকে এক অভিনব অভিনয় রীতির সন্ধান পান তিনি। এই অভিনয় রীতিতে মঞ্চের কোন প্রয়োজন নেই, দরকার নেই মঞ্চ সজ্জার, কিম্বা দরজা-জানলা, টেবিল-বেঞ্চ, সিনসিনারি ইত্যাদির। দরকার শুধু একটা প্লাটফর্ম, আর নাটক করার অদম্য ইচ্ছা। কিন্তু তাঁর মনে সংশয় জন্মায় এই ভেবে যে, শহরের ইংরেজি জানা মানুষ এই রীতি গ্রহণ করবেন তো! কারণ, সাহেবরা যা মানে না, এরা তা গ্রহণ করে না। ঠিক এই সময় তিনি এক রুশ সাহেব, নাম আইজেনস্টাইন, যিনি কাবুকি নামক এক জাপানি নাট্যগোষ্ঠীর একটি অভিনব নাট্য-রীতির প্রশংসা সম

তাদের অভিনয় দেখে আইজেনস্টাইন সাহেব অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত হয়ে অনেক কথা লিখেছিলেন

“তাদের অভিনয় দেখে আইজেনস্টাইন সাহেব অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত হয়ে অনেক কথা লিখেছিলেন।” — ২০১৭, ২০২৩ তাদের অভিনয় দেখে আইজেনস্টাইন সাহেব অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত হয়ে অনেক কথা লিখেছিলেন। ক) আইজেনস্টাইন সাহেব কে? খ) তিনি কাদের অভিনয় দেখে উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন? গ) সেই অভিনয় দেখে তিনি কী লিখেছিলেন? ক) আইজেনস্টাইন সাহেব কে? নাট্যকার শম্ভু মিত্রের লেখা ‘বিভাব’ নাটক থেকে গৃহীত উদ্ধৃতিটিতে উল্লিখিত আইজেনস্টাইন হলেন একজন প্রখ্যাত রাশিয়ান চিত্রপরিচালক। তার পুরো নাম সের্গেই নিখাইলোভিচ আইজেনস্টাইন। খ) তিনি কাদের অভিনয় দেখে উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন? রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে জাপানের নৃত্যনির্ভর, ঐতিহ্যশালী কাবুকি থিয়েটার তার কলাকুশলীদের নিয়ে অভিনয় করেছিলেন। রাশিয়ান চিত্রপরিচালক আইজেনস্টাইন আগ্রহ সহকারে এই নাটক দেখেছিলেন এবং তাঁদের এই অভিনব নাট্যরীতি ও তার কলাকুশলীদের অভিনয় দেখে উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন। গ) সেই অভিনয় দেখে তিনি কী লিখেছিলেন? রাশিয়ান চিত্রপরিচালক ও চিত্র সমালোচক আইজেনস্টাইন জাপানের কাবুকি থিয়েটারের অভিনয় দেখেছেন। দেখার পর তার সমালোচনায় লিখেছেন, তাদের নাটকে দেহ ও মুখভঙ্গির বহুল ব্

আর একবার এক মারাঠি তামাশায় দেখেছিলাম

“আর একবার এক মারাঠি তামাশায় দেখেছিলাম।” — ২০১৬ আর একবার এক মারাঠি তামাশায় দেখেছিলাম। ক) বক্তা মারাঠি তামাশয় কী দেখেছিলেন? খ) বক্তা কোন্ প্রসঙ্গে মারাঠি তামাশার কথা বলেছিলেন? গ) তার কোন দূরবর্তী ছায়া বিভাব নাটকে দেখা যায়? ক) বক্তা মারাঠি তামাশয় কী দেখেছিলেন? নাট্যকার শম্ভু মিত্রের লেখা ‘বিভাব’ নাটক থেকে উদ্ধৃত অংশটি নেওয়া হয়েছে। এই নাটকে তিনি একটি মারাঠি তামাশার কথা উল্লেখ করেছেন। অভিনব এই নাট্যশৈলীতে দেখা যাচ্ছে, মঞ্চসজ্জা, দৃশ্যপট ইত্যাদি ছাড়াই একটি নাটক জনমনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হচ্ছে। এই তামাশায় দেখা যাচ্ছে, দুর্ভিক্ষ পীড়িত এক কৃষক জমিদারের কাছে অনুনয়-বিনয় করলেও জমিদার বিচলিত হচ্ছে না। তখন এই কৃষক হতাশ হয়ে ভগবানের কাছে নালিশ জানাতে যাচ্ছে। এক আশ্চর্য রীতিতে একটা তক্তার উপর উঠে একজন অভিনেতা কয়েক পা ঘুরে এসে বুঝিয়ে দেয়, অনেকটা পথ সে অতিক্রম করে এসেছে। তারপর কাল্পনিক এক মন্দিরের সামনে দাঁড়িয়ে সে নিজের দুঃখ বেদনার কথা নিবেদন করছে। যে অভিনেতা জমিদারের ভূমিকায় অভিনয় করছিল, একটু পরে তাকেই দেখা গেল পুরোহিতের বেশে। তিনি দর্শকের সামনেই মুখে দ

তাই অনেক ভেবে চিন্তে আমরা একটা প্যাঁচ বের করেছি।

“তাই অনেক ভেবে চিন্তে আমরা একটা প্যাঁচ বের করেছি।” তাই অনেক ভেবে চিন্তে আমরা একটা প্যাঁচ বের করেছি। ক) বক্তা কে? খ) কোন প্রসঙ্গে তিনি মন্তব্যটি করেছেন? গ) ভেবেচিন্তে কী প্যাঁচ বের করা হয়েছিল? ঘ) সেই প্যাঁচের বুদ্ধিটা কীভাবে এসেছিল? ক) বক্তা কে? বাংলা নাটকের বিশিষ্ট নাট্যকার শম্ভু মিত্র। তাঁর লেখা বিভাগ নাটকে গ্রুপ থিয়েটারের নাটক অভিনয়ের ক্ষেত্রে নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন। এই সমস্যার কথা বলতে গিয়েই তিনি উদ্ধৃত মন্তব্যটি করেছেন। খ) কোন প্রসঙ্গে তিনি মন্তব্যটি করেছেন? নাট্যকার শম্ভু মিত্র বিভাব নাটকে দেখিয়েছেন গ্রুপ থিয়েটারের সঙ্গে কীভাবে জড়িয়ে আছে ‘দুরন্ত অভাব’। দেখিয়েছেন তাদের অভিনয়ের জন্য ভালো মঞ্চ নেই, নেই মঞ্চোসজ্জার উপকারণ বা আলো। শুধু নাটক করার অদম্য ইচ্ছাকে পাথেয় করেই এই গ্রুপ থিয়েটারগুলো চলে। কিন্তু সেখানেও বাধা হয়ে দাঁড়ায় সরকারের বিমাদৃশ্য আচরণ। পেশাদার থিয়েটারকে ছাড় দিলেও, শম্ভু মিত্রের মতে, সরকার গ্রুপ থিয়েটার এর কাছ থেকে খাজনা আদায় করে। ফলে তারা চূড়ান্ত আর্থিক সংকটের মুখোমুখি হয়। এই সংকট থেকে মুক্তির পথ খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছেন নাট

আমাদের মনে হয় এর নাম হওয়া উচিত ‘অভাব’ নাটক

“আমাদের মনে হয় এর নাম হওয়া উচিত ‘অভাব’ নাটক।” — ২০১৫ আমাদের মনে হয় এর নাম হওয়া উচিত ‘অভাব’ নাটক। 🔘 অভাবের চিত্র ‘বিভাব’ নাটকে কীভাবে প্রকাশ পেয়েছে লেখো। নাট্যকার শম্ভু মিত্রের লেখা ‘বিভাব’ নাটকে আমরা দেখতে পাই একজন ভদ্রলোক সংস্কৃত অলংকারশাস্ত্র ঘেঁটে শম্ভু মিত্রের লেখা নাটকের নাম দিয়েছেন ‘বিভাব’। ‘বিভাব’ শব্দের অর্থ হল, মনের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া শোক, হাস্য, রাগ, রতি, আনন্দ ইত্যাদি নয়টি রসানুভূতির হেতু বা কারণ। কিন্তু নিজের নাট্য ভাবনা ও অভিজ্ঞতার সঙ্গে এই নামের বিরোধ খুঁজে পেয়েছিলেন নাট্যকার শম্ভু মিত্র। প্রবল অভাব থেকেই তাদের এই নাটকের জন্ম। তাই, নাট্যকারের মনে হয়েছে, তাদের এই নাটকের নাম ‘বিভব’ নয়, হওয়া উচিত ‘অভাব নাটক’। একটি নাটকের সুস্থ উপস্থাপনা এবং ভালো প্রযোজনার জন্য দরকার হয় ভালো মঞ্চ, দৃশ্য অনুযায়ী মঞ্চসজ্জা, দৃশ্যপট, আলোক প্রক্ষেপণের কৃৎকৌশল ইত্যাদি। কিন্তু অর্থনৈতিক দৈন্য নাটক অভিনয়ে একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। আর এ কারণে, এই নাটক মঞ্চস্থ করার সময় কোন ভাল মঞ্চ ছিল না, ছিলনা আলো বা ঝালর জাতীয় মঞ্চ সজ্জার বিভিন্ন উপকরণ। থাকার মধ্যে ছিল শুধু নাটক

‘বিভাব’ কথার সাধারণ অর্থ কী? ‘বিভাব’ নাটকটির নামকরণ কতটা তাৎপর্যপূর্ণ, আলোচনা করো

‘বিভাব’ কথার সাধারণ অর্থ কী? ‘বিভাব’ নাটকটির নামকরণ কতটা তাৎপর্যপূর্ণ, আলোচনা করো। ‘বিভাব’ কথার সাধারণ অর্থ কী? ‘বিভাব’ নাটকটির নামকরণ কতটা তাৎপর্যপূর্ণ, আলোচনা করো। ভূমিকা / বিভাব শব্দের অর্থ : সংস্কৃত নাট্যশাস্ত্র অনুসারে, কাব্যে বা নাটকে শোক, হাস্য, রাগ, রতি, আনন্দ ইত্যাদি নয় প্রকার স্থায়ী ভাব উদ্ভবের হেতু বা কারণকে ‘ বিভাব ’ বলা হয়। নাট্যকারের উদ্দেশ্য : নাট্যকার শম্ভু মিত্রের বক্তব্য অনুযায়ী এই নাটকের লক্ষ্য ছিল হাসির ভাব জাগিয়ে তোলা। সেদিক থেকে বিচার করলে, নাটকের নামকরণের প্রধান উদ্দেশ্য এখানে সার্থক ভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। নাটকের বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ : দর্শকের মনোরঞ্জন হাসি কান্না উভয় মাধ্যমেই হয়। আলোচ্য নাটকে নাট্য দলের সম্পাদক নির্দেশ দেন, জনপ্রিয়তা অর্জনের লক্ষ্যে একটি হাসির নাটকের উপস্থাপনা করতে হবে। কারণ, বাঙালি ‘কাঁদুনে জাত’ — এই অপবাদ ঘোচাতে হবে বলে নাট্যকারের এই সিদ্ধান্ত। এছাড়া শিল্প সৌন্দর্যকে অতিক্রম করে বক্স অফিসে ভালো সাড়া পাওয়াও নাট্যকারের অন্যতম লক্ষ্য। তাই হাসির দৃশ্য তৈরি করার জন্য করা হয় নানান পরিকল্পনা। এই উদ্দেশ্য নিয়েই নাটকের প্রধ

গরিবের গতর এরা সস্তা দেখে

“গরিবের গতর এরা সস্তা দেখে” গরিবের গতর এরা সস্তা দেখে ক) বক্তা কে? খ) ‘এরা’ কারা?  অথবা,  বক্তা কাদের সম্পর্কে এই মন্তব্য টি করেছে? গ) এই বক্তব্যের কারণ কী? অথবা,  মন্তব্যটির প্রেক্ষাপট আলোচনা করো। ক) বক্তা কে? বক্তা হল প্রখ্যাত কথাকার মহাশ্বেতা দেবী রচিত ‘ভাত’ গল্পের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র বাসিনী। সে সুন্দরবনের বাদা অঞ্চলের বাসিন্দা এবং এই গল্পের প্রধান চরিত্র উৎসব নাইয়ার গ্রাম সম্পর্কের বোন। কলকাতার একটি বনেদী পরিবারে পরিচারিকার কাজ করার সূত্রে সে কলকাতায় এসেছে। খ) ‘এরা’ কারা? অথবা, বক্তা কাদের সম্পর্কে এই মন্তব্যটি করেছে? ‘এরা’ বলতে বক্তা বাসিনী তার মনিবের পরিবারের সেই সব সদস্যদের কথা বুঝিয়েছেন, যারা গরীব মানুষের কাজের ন্যায্য মূল্য বা পারিশ্রমিক দিতে চায় না। অথবা , এই মন্তব্যের বক্তা বাসিনী তার মনিবের পরিবারের সেই সব সদস্যদের সম্পর্কে এই মন্তব্যটি করেছে, যারা গরিব শ্রমজীবী মানুষের কাজের বিনিময়ে ন্যায্য মজুরি দিতে টালবাহানা করে। গ) এই বক্তব্যের কারণ কী? অথবা, মন্তব্যটির প্রেক্ষাপট আলোচনা করো। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে, উৎসব নাইয়া পরিবার-পরিজন হারিয়ে গ্রাম সম্পর

সেই সন্ধেয় অনেকদিন বাদে সে পেট ভরে খেয়েছিল

“সেই সন্ধেয় অনেকদিন বাদে সে পেট ভরে খেয়েছিল।” সেই সন্ধেয় অনেকদিন বাদে সে পেট ভরে খেয়েছিল। ক) ‘সে’ কে? খ) কোন্ সন্ধ্যেয় সে পেট ভরে খেয়েছিল? গ) সেই দিনটায় কী ঘটেছিল? ক) ‘সে’ কে? উদ্ধৃত অংশটি মরমী কোথাকার মহাশ্বেতা দেবীর ভাত গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে ‘সে’ বলতে এই গল্পের প্রধান চরিত্র উৎসব নাই আর কথা বলা হয়েছে, যে মাতলা নদীর বন্যায় সর্বস্বান্ত হয়ে কলকাতা এসেছে কাজের বিনিময়ে দুবেলা পেট ভরে ভাত খাওয়ার আশায়। খ) কোন্ সন্ধ্যেয় সে পেট ভরে খেয়েছিল? এই গল্পের উৎসব ভূমিহীন কৃষক। তার ওপর থাকে সুন্দরবনের বাদা অঞ্চলে। সেখানকার এক ফসলি জমিতে একবারই ধান হয়। সেবার উৎসবের মনিব সতীশ মিস্ত্রির ধানে মড়ক লাগে। ফলে সেখানে কাজ করার সুযোগ হারায়। অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটে তার। এক দিনে, সন্ধ্যাবেলয় উৎসব সহ গ্রামের অন্যান্যরা হিঞ্চে সেদ্ধ ও গুগলি সেদ্ধ নুন আর লঙ্কা পোড়া দিয়ে পেট ভরে খেয়েছিল। এই সন্ধ্যার পর পরই রাতের বেলা প্রচন্ড ঝড়-বৃষ্টি ও জলোচ্ছ্বাস শুরু হয়। এবং উৎসব নাইয়া পরিবার পরিজন হারিয়ে একা হয়ে যায়। ‘সেই সন্ধ্যায়’ বলতে এই সন্ধ্যার কথাই বলা হয়েছে। গ) সেই দ

মারতে মারতে উচ্ছবকে ওরা থানায় নিয়ে যায়।

“মারতে মারতে উচ্ছবকে ওরা থানায় নিয়ে যায়।” মারতে মারতে উচ্ছবকে ওরা থানায় নিয়ে যায়। ক) উচ্ছোব কে? খ) ওরা কারা? গ) কারা কেন তাকে থানায় নিয়ে যায়? ক) উচ্ছোব কে? প্রখ্যাত কথাকার মহাশ্বেতা দেবী রচিত ‘ভাত’ গল্প থেকে উদ্ধৃত অংশটি নেওয়া হয়েছে। এই গল্পের প্রধান চরিত্র উৎসব নাইয়া। সুন্দরবনের বাদাবন অঞ্চলে তার বসবাস। লেখাপড়া না জানা গ্রামীণ মানুষের উচ্চারণে উৎসব নামটা ‘উচ্ছব’ হিসেবে উচ্চারিত হয়। এই  উৎসব নাইয়াই এখানে উচ্ছব  নামে পরিচিত। খ) ‘ওরা’ কারা? ‘ওরা’ বলতে, রেলস্টেশন লাগোয়া এলাকার জনসাধারণকে বোঝানো হয়েছে, যারা পরদিন সকালবেলা পিতলের ডেকচি সহ উৎসবকে চোর সাব্যস্ত করে এবং মারতে মারতে থানায় নিয়ে যায়। খ) কারা কেন তাকে থানায় নিয়ে যায়? ভাতের প্রতি উৎসবের অত্যধিক আসক্তি তার জীবনে আর এক বিপর্যয় ডেকে আনে। বাড়ির বড় কর্তার যজ্ঞি চলাকালীন সময় হঠাৎ মৃত্যু হলে ইতিমধ্যেই রান্না হওয়া ভাত ফেলে দেয়ার নির্দেশ আসে বড় পিসিমার কাছ থেকে। কারণ, অশৌচ বাড়ির রান্না খেলে অমঙ্গল হয়। কিন্তু অনাহারি উৎসবের এই সিদ্ধান্ত ভালো লাগেনি। এই অবস্থায় সে অভিনব এক কৌশল অবলম্বন করে। ভাত