সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

সেপ্টেম্বর, ২০২৩ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

সহমরণ — সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত

সহমরণ — সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত সহমরণ — সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত ‘জিজ্ঞাসি’ছ পড়া কেন গা’? শুনিবে তা’? — শোন তবে মা — দুখের কথা ব’ল্ ব কা’রে বা! ************************* জন্ম আমার হিদুঁর ঘরে, বাপের ঘরে, খুব আদরে, ছিলাম বছর দশ; কুলীন পিতা, কুলের গোলে, ফেলে দিলেন বুড়ার গলে; হ’লাম পরের বশ। আচারে তার আস্ ত হাসি, — ব’লব কি আর পরকাশি, — মিটল সকল সাধ; — হিঁদুর মেয়ে অনেক ক’রে শ্রদ্ধা রাখে স্বামীর ’পরে তা’তেও বিধির বাদ। বুড়াকালের অত্যাচারে,— শয্যাশায়ী ক’রলে তা’রে জেগেই পোহাই রাতি; দিন কাটেত’ কাটে না রাত, মাসের পরে গেল হঠাৎ, — নিবল জীবন বাতি। ********************** কতক দুঃখে, কতক ভয়ে শরীর এল অবশ হ’য়ে ভাঙল সুখের হাট খ’য়ের রাশি ছড়িয়ে পথে, চল্ ল নিয়ে শবের সাথে,— যেথায় শ্মশান ঘাট। গুঁড়িয়ে শাঁখা, সবাই মিলে, চিতায় মোরে বসিয়ে দিলে, বাজ্ ল শতেক শাঁক; লোকের ভিড়ে ভরেছে ঘাট, ধুঁইয়ে উঠে চিতার কাঠ, উঠ্ল গর্জ্জে ঢাক। ******************** রোমে, রোমে, শিরায়, শিরায়, জ্বালা ধরে, —প্রাণ বাহিরায়,— মরি বুঝি ধোঁয়ায় এবার! আচম্বিতে—চিৎকার রোলে— চিতা ভেঙে, পড়িলাম জলে, মাঝি এক নিল নায়ে তার। যত লোক করে ‘মার

এটা অন্য রকমের লভ সিন; প্রোগ্রেসিভ লভ সিন

“...এটা অন্য রকমের লভ সিন; প্রোগ্রেসিভ লভ সিন।” ক) বক্তা কে? খ) ‘অন্য রকমের লভ সিন’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? গ) ‘লভ সিন’টির বিবরণ দাও। ঘ) কেন দৃশ্যটিকে ‘প্রগ্রেসিভ’ বলা হয়েছে তা নিজের ভাষায় লেখো। ক) বক্তা কে? উদ্ধৃত অংশটি প্রখ্যাত নাট্যকার শম্ভু মিত্রের লেখা ‘বিভাব’ নাটক থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে উল্লিখিত মন্তব্যটির বক্তা হলেন, এই নাটকের অন্যতম চরিত্র তৃপ্তি মিত্র ওরফে বৌদি। খ) ‘অন্য রকমের লভ সিন’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? নাট্যকার তথা অভিনেতা শম্ভু মিত্র এই নাটকে (বিভাব) বহুরূপী নাট্য দলের সম্পাদকের চাহিদা অনুযায়ী হাসির নাটক তৈরিতে মনোযোগ দেন। তৃপ্তি মিত্রের নির্দেশনায় একটি ‘লভ সিন’ তৈরির চেষ্টাও হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হাস্যরস সৃষ্টি করতে পারেনি। তাই, এই নাটকের নায়িকা তৃপ্তি মিত্র, আরও একবার চেষ্টা করে দেখার প্রস্তাব দেন। তাঁর প্রস্তাবিত এই নতুন ধরণের ‘লভ সিন’কে ‘প্রগ্রেসিভ লভ সিন’ বলা হয়েছে। এখানে ‘অন্যরকম লভ সিন’ বলতে এই ‘প্রগ্রেসিভ লভ সিন’-এর কথাই বোঝানো হয়েছে। গ) ‘লভ সিন’টির বিবরণ দাও। এই নাটকের নায়িকা তৃপ্তি মিত্র নির্দেশিত এই দৃশ্যে নায়ক নায়িকার চরিত্রে অংশ নেন যথাক্রমে

এবার নিশ্চয়ই লোকের খুব হাসি পাবে

“এবার নিশ্চয়ই লোকের খুব হাসি পাবে।” এবার নিশ্চয়ই লোকের খুব হাসি পাবে। ক) কে, কখন এ কথা বলেছে? অথবা, কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে একথা বলা হয়েছে? খ) এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে বক্তা কি বোঝাতে চেয়েছেন? গ) সমগ্র নাট্য কাহিনীর নিরিখে মন্তব্যটির তাৎপর্য আলোচনা করো। ক) কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে একথা বলা হয়েছে? অথবা, কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে একথা বলা হয়েছে? নাট্যকার শম্ভু মিত্রের লেখা ‘বিভাব’ নাটকের শেষ পর্বে দেখা যায় ‘হাসির খোরাক’ খুঁজতে শম্ভু মিত্র ও অমর গাঙ্গুলী পথে নামছেন। কারণ, তাদের ধারণা হয়, চার দেয়াল-এর বাইরে — রাস্তায় কিংবা মাঠে-ঘাটে রয়েছে ‘হাসির খোরাক’। কিন্তু একটু এগোতেই তাঁরা দেখতে পান, অন্য বস্ত্রের দাবিতে এগিয়ে আসছে একটি মিছিল। পুলিশের মানা অগ্রাহ্য করায় পুলিশ সেই মিছিলে গুলি চালায় এবং দু’জন ছেলেমেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এই ঘটনা শম্ভু মিত্রকে প্রবলভাবে আঘাত করে। তিনি উপলব্ধি করেন, যেখানে অন্ন-বস্ত্রের দাবিতে মানুষ নিহত হয়, সেখানে হাসির খোরাক খুঁজে পাওয়া কঠিন কাজ। মূলত, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে লেখক শম্ভু মিত্র অমর গাঙ্গুলী ও সামনে বসে থাকা দর্শকদের উদ্দেশ্যে শ্লেষের

জীবন কোথায়?

“জীবন কোথায়?” — ২০১৯, ২০২২ জীবন কোথায় ক) কে কাকে একথা বলেছেন? খ) বক্তা জীবনকে কোথায় খুঁজে পাওয়া যাবে বলে মনে করেন? গ) সত্যিই কি তাঁরা হাস্যজ্জ্বল জীবনের সন্ধান পেয়েছিলেন? ক) কে কাকে একথা বলেছেন? বিশিষ্ট নাট্যকার শম্ভু মিত্রের লেখা ‘বিভাব’ নাটকে শম্ভু মিত্র তাঁর সহ অভিনেতা আমর গাঙ্গুলিকে উদ্দেশ্য করে আলোচ্য মন্তব্যটি করেছেন। খ) বক্তা জীবনকে কোথায় খুঁজে পাওয়া যাবে বলে মনে করেন? নাট্যকার শম্ভু মিত্রের লেখা বিভাব নাটকে নাট্যদলের সম্পাদকের নির্দেশে হাসির নাটকের উপকরণ খুঁজতে শম্ভু মিত্র তার সহ-অভিনেতা আমার গাঙ্গুলীর বাড়িতে যান। সেখানে তৃপ্তি মিত্রের নির্দেশানায় ‘লভ সিন’ এবং ‘প্রগ্রেসিভ লভ সিন’ অবতারণার মাধ্যমে হাসির উপকরণ তৈরীর চেষ্টা হয়। কিন্তু সেই চেষ্টা শেষ পর্যন্ত বিফল হয়। এই বিফলতার কারণ খুঁজতে গিয়ে তাঁরা উপলব্ধি করেন, প্রকৃত হাসির উপাদান এই ঘটনার মধ্যে নেই। অনেক চিন্তাভাবনার পর শম্ভু মিত্র উপলব্ধি করেন, প্রকৃত ‘হাসির খোরাক’ রয়েছে সাধারণ মানুষের জীবন জীবিকা কেন্দ্রিক নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনার মধ্যে। তাই হাসির উপকরণ খুঁজে পেতে হলে খুঁজে বের করতে হবে সেই সাধারন জী

এই ঘরের মধ্যে জীবনকে উপলব্ধি করা যাবে না

“এই ঘরের মধ্যে জীবনকে উপলব্ধি করা যাবে না।” এই ঘরের মধ্যে জীবনকে উপলব্ধি করা যাবে না। ক) বক্তা কে? খ) বক্তার এমন উপলব্ধির কারণ কী? অথবা, কখন কোন পরিস্থিতিতে বক্তার কেন এমন মনে হয়েছিল কেন? গ) জীবনকে উপলব্ধি করার জন্য বক্তা কী করেছিলেন? ঘ) শেষে তার কিরূপ অভিজ্ঞতা হয়েছিল? ঙ) বক্তার এই মন্তব্যের তাৎপর্য আলোচনা করো। ক) বক্তা কে? প্রখ্যাত নাট্যকার শম্ভু মিত্রের লেখা বিভাব নাটক থেকে উদ্ধৃত অংশটি গৃহীত হয়েছে। এই নাটকে উদ্ধৃত অংশের বক্তা হলেন নাট্যকার শম্ভু মিত্র নিজেই। খ) বক্তার এমন উপলব্ধির কারণ কী? অথবা, কখন কোন্ পরিস্থিতিতে বক্তার কেন এমন মনে হয়েছিল? ‘বিভাব’ নাটকের নাট্য দলের সম্পাদকের নির্দেশ ছিল বক্স অফিসের চাহিদা অনুযায়ী একটি হাসির নাটক মঞ্চস্থ করতে হবে, যা নাকি ভীষণ জনপ্রিয় হবে। সেই হাসির নাটকের উপকরণ খুঁজতে শম্ভু মিত্র এসে পৌঁছান তার সহ অভিনেতা অমর গাঙ্গুলীর বাড়িতে। প্রথমেই শম্ভু মিত্র কল্পিত বসার ভঙ্গির মাধ্যমে হাস্যরস সৃষ্টির চেষ্টা করেন। কিন্তু অমর গাঙ্গুলি ও বৌদি তৃপ্তি মিত্র জানিয়ে দেন, এতে হাসার মতো কোন উপকরণ, যেমন ‘হিউম্যান ইন্টারেস্ট’ বা ‘পপুলার অ্যাপিল

কোথাও জীবনের খোরাক, হাসির খোরাক নেই

“কোথাও জীবনের খোরাক, হাসির খোরাক নেই।” কোথাও জীবনের খোরাক, হাসির খোরাক নেই। ক) বক্তা কে? খ) ‘কোথাও জীবনের খোরাক, হাসির খোরাক নেই’ বলে বক্তা মনে করেছেন কেন? অথবা, বক্তার এই মন্তব্যটির কারণ আলোচনা করো। ক) বক্তা কে? উদ্ধৃত অংশটি প্রখ্যাত নাট্যকার শম্ভু মিত্রের লেখা বিভাব নাটক থেকে নেয়া হয়েছে। এই নাটকে উদ্ধৃত অংশটির বক্তা হলেন নাট্যকার শম্ভু মিত্র নিজেই। খ) ‘কোথাও জীবনের খোরাক, হাসির খোরাক নেই’ বলে বক্তা মনে করেছেন কেন? স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে মন্বন্তর, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, দেশ ভাগজনিত কারণে উদ্ভূত উদ্বাস্তু মানুষ সরকারের কাছে খাদ্য বস্ত্র ও বাসস্থানের দাবি তোলে। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বল্লভ ভাই প্যাটেল বাঙালিকে ‘কাঁদুনে জাত’ বলে কটাক্ষ করেন। এরই প্রেক্ষাপটে নাট্যকার শম্ভু মিত্র হাসির অনুষঙ্গে বাঙালি জীবনের কান্নার উৎস অনুসন্ধান করেন। তাই এই নাটক হাসির নয়, জীবনের নাটক আর এই কারণেই নাটকের প্রথমেই কাল্পনিক বসার ভঙ্গির মাধ্যমে এবং পরে ‘লভ সিন’ ও ‘প্রগ্রেসিভ লভ সিন’ অভিনয় করে সার্থক হাসির নাটক মঞ্চস্থ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। তখনই নাট

এমন সময় হঠাৎই এক সাহেবের লেখা পড়লাম

এমন সময় হঠাৎই এক সাহেবের লেখা পড়লাম।” — ২০২০ এমন সময় হঠাৎই এক সাহেবের লেখা পড়লাম। ক) ‘এমন সময়’ বলতে কোন্ পরিস্থিতির কথা বলা হয়েছে? খ) তিনি কী লিখেছিলেন? ক) ‘এমন সময়’ বলতে কোন্ পরিস্থিতির কথা বলা হয়েছে? নাট্যকার শম্ভু মিত্র ‘বিভাব’ নাটকে দেখিয়েছেন গ্রুপ থিয়েটারের সঙ্গে কীভাবে জড়িয়ে আছে ‘দুরন্ত অভাব’। তার ওপর, সরকার গ্রুপ থিয়েটার-এর কাছ থেকে খাজনা আদায় করে। ফলে, তারা চূড়ান্ত আর্থিক সংকটের মুখোমুখি হয়। নাট্যকার এই সংকট থেকে মুক্তির পথ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। একদিন একটি পুরনো সংস্কৃত নাটক থেকে এক অভিনব অভিনয় রীতির সন্ধান পান তিনি। এই অভিনয় রীতিতে মঞ্চের কোন প্রয়োজন নেই, দরকার নেই মঞ্চ সজ্জার, কিম্বা দরজা-জানলা, টেবিল-বেঞ্চ, সিনসিনারি ইত্যাদির। দরকার শুধু একটা প্লাটফর্ম, আর নাটক করার অদম্য ইচ্ছা। কিন্তু তাঁর মনে সংশয় জন্মায় এই ভেবে যে, শহরের ইংরেজি জানা মানুষ এই রীতি গ্রহণ করবেন তো! কারণ, সাহেবরা যা মানে না, এরা তা গ্রহণ করে না। ঠিক এই সময় তিনি এক রুশ সাহেব, নাম আইজেনস্টাইন, যিনি কাবুকি নামক এক জাপানি নাট্যগোষ্ঠীর একটি অভিনব নাট্য-রীতির প্রশংসা সম

তাদের অভিনয় দেখে আইজেনস্টাইন সাহেব অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত হয়ে অনেক কথা লিখেছিলেন

“তাদের অভিনয় দেখে আইজেনস্টাইন সাহেব অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত হয়ে অনেক কথা লিখেছিলেন।” — ২০১৭, ২০২৩ তাদের অভিনয় দেখে আইজেনস্টাইন সাহেব অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত হয়ে অনেক কথা লিখেছিলেন। ক) আইজেনস্টাইন সাহেব কে? খ) তিনি কাদের অভিনয় দেখে উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন? গ) সেই অভিনয় দেখে তিনি কী লিখেছিলেন? ক) আইজেনস্টাইন সাহেব কে? নাট্যকার শম্ভু মিত্রের লেখা ‘বিভাব’ নাটক থেকে গৃহীত উদ্ধৃতিটিতে উল্লিখিত আইজেনস্টাইন হলেন একজন প্রখ্যাত রাশিয়ান চিত্রপরিচালক। তার পুরো নাম সের্গেই নিখাইলোভিচ আইজেনস্টাইন। খ) তিনি কাদের অভিনয় দেখে উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন? রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে জাপানের নৃত্যনির্ভর, ঐতিহ্যশালী কাবুকি থিয়েটার তার কলাকুশলীদের নিয়ে অভিনয় করেছিলেন। রাশিয়ান চিত্রপরিচালক আইজেনস্টাইন আগ্রহ সহকারে এই নাটক দেখেছিলেন এবং তাঁদের এই অভিনব নাট্যরীতি ও তার কলাকুশলীদের অভিনয় দেখে উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন। গ) সেই অভিনয় দেখে তিনি কী লিখেছিলেন? রাশিয়ান চিত্রপরিচালক ও চিত্র সমালোচক আইজেনস্টাইন জাপানের কাবুকি থিয়েটারের অভিনয় দেখেছেন। দেখার পর তার সমালোচনায় লিখেছেন, তাদের নাটকে দেহ ও মুখভঙ্গির বহুল ব্

আর একবার এক মারাঠি তামাশায় দেখেছিলাম

“আর একবার এক মারাঠি তামাশায় দেখেছিলাম।” — ২০১৬ আর একবার এক মারাঠি তামাশায় দেখেছিলাম। ক) বক্তা মারাঠি তামাশয় কী দেখেছিলেন? খ) বক্তা কোন্ প্রসঙ্গে মারাঠি তামাশার কথা বলেছিলেন? গ) তার কোন দূরবর্তী ছায়া বিভাব নাটকে দেখা যায়? ক) বক্তা মারাঠি তামাশয় কী দেখেছিলেন? নাট্যকার শম্ভু মিত্রের লেখা ‘বিভাব’ নাটক থেকে উদ্ধৃত অংশটি নেওয়া হয়েছে। এই নাটকে তিনি একটি মারাঠি তামাশার কথা উল্লেখ করেছেন। অভিনব এই নাট্যশৈলীতে দেখা যাচ্ছে, মঞ্চসজ্জা, দৃশ্যপট ইত্যাদি ছাড়াই একটি নাটক জনমনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হচ্ছে। এই তামাশায় দেখা যাচ্ছে, দুর্ভিক্ষ পীড়িত এক কৃষক জমিদারের কাছে অনুনয়-বিনয় করলেও জমিদার বিচলিত হচ্ছে না। তখন এই কৃষক হতাশ হয়ে ভগবানের কাছে নালিশ জানাতে যাচ্ছে। এক আশ্চর্য রীতিতে একটা তক্তার উপর উঠে একজন অভিনেতা কয়েক পা ঘুরে এসে বুঝিয়ে দেয়, অনেকটা পথ সে অতিক্রম করে এসেছে। তারপর কাল্পনিক এক মন্দিরের সামনে দাঁড়িয়ে সে নিজের দুঃখ বেদনার কথা নিবেদন করছে। যে অভিনেতা জমিদারের ভূমিকায় অভিনয় করছিল, একটু পরে তাকেই দেখা গেল পুরোহিতের বেশে। তিনি দর্শকের সামনেই মুখে দ

তাই অনেক ভেবে চিন্তে আমরা একটা প্যাঁচ বের করেছি।

“তাই অনেক ভেবে চিন্তে আমরা একটা প্যাঁচ বের করেছি।” তাই অনেক ভেবে চিন্তে আমরা একটা প্যাঁচ বের করেছি। ক) বক্তা কে? খ) কোন প্রসঙ্গে তিনি মন্তব্যটি করেছেন? গ) ভেবেচিন্তে কী প্যাঁচ বের করা হয়েছিল? ঘ) সেই প্যাঁচের বুদ্ধিটা কীভাবে এসেছিল? ক) বক্তা কে? বাংলা নাটকের বিশিষ্ট নাট্যকার শম্ভু মিত্র। তাঁর লেখা বিভাগ নাটকে গ্রুপ থিয়েটারের নাটক অভিনয়ের ক্ষেত্রে নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন। এই সমস্যার কথা বলতে গিয়েই তিনি উদ্ধৃত মন্তব্যটি করেছেন। খ) কোন প্রসঙ্গে তিনি মন্তব্যটি করেছেন? নাট্যকার শম্ভু মিত্র বিভাব নাটকে দেখিয়েছেন গ্রুপ থিয়েটারের সঙ্গে কীভাবে জড়িয়ে আছে ‘দুরন্ত অভাব’। দেখিয়েছেন তাদের অভিনয়ের জন্য ভালো মঞ্চ নেই, নেই মঞ্চোসজ্জার উপকারণ বা আলো। শুধু নাটক করার অদম্য ইচ্ছাকে পাথেয় করেই এই গ্রুপ থিয়েটারগুলো চলে। কিন্তু সেখানেও বাধা হয়ে দাঁড়ায় সরকারের বিমাদৃশ্য আচরণ। পেশাদার থিয়েটারকে ছাড় দিলেও, শম্ভু মিত্রের মতে, সরকার গ্রুপ থিয়েটার এর কাছ থেকে খাজনা আদায় করে। ফলে তারা চূড়ান্ত আর্থিক সংকটের মুখোমুখি হয়। এই সংকট থেকে মুক্তির পথ খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছেন নাট

আমাদের মনে হয় এর নাম হওয়া উচিত ‘অভাব’ নাটক

“আমাদের মনে হয় এর নাম হওয়া উচিত ‘অভাব’ নাটক।” — ২০১৫ আমাদের মনে হয় এর নাম হওয়া উচিত ‘অভাব’ নাটক। 🔘 অভাবের চিত্র ‘বিভাব’ নাটকে কীভাবে প্রকাশ পেয়েছে লেখো। নাট্যকার শম্ভু মিত্রের লেখা ‘বিভাব’ নাটকে আমরা দেখতে পাই একজন ভদ্রলোক সংস্কৃত অলংকারশাস্ত্র ঘেঁটে শম্ভু মিত্রের লেখা নাটকের নাম দিয়েছেন ‘বিভাব’। ‘বিভাব’ শব্দের অর্থ হল, মনের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া শোক, হাস্য, রাগ, রতি, আনন্দ ইত্যাদি নয়টি রসানুভূতির হেতু বা কারণ। কিন্তু নিজের নাট্য ভাবনা ও অভিজ্ঞতার সঙ্গে এই নামের বিরোধ খুঁজে পেয়েছিলেন নাট্যকার শম্ভু মিত্র। প্রবল অভাব থেকেই তাদের এই নাটকের জন্ম। তাই, নাট্যকারের মনে হয়েছে, তাদের এই নাটকের নাম ‘বিভব’ নয়, হওয়া উচিত ‘অভাব নাটক’। একটি নাটকের সুস্থ উপস্থাপনা এবং ভালো প্রযোজনার জন্য দরকার হয় ভালো মঞ্চ, দৃশ্য অনুযায়ী মঞ্চসজ্জা, দৃশ্যপট, আলোক প্রক্ষেপণের কৃৎকৌশল ইত্যাদি। কিন্তু অর্থনৈতিক দৈন্য নাটক অভিনয়ে একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। আর এ কারণে, এই নাটক মঞ্চস্থ করার সময় কোন ভাল মঞ্চ ছিল না, ছিলনা আলো বা ঝালর জাতীয় মঞ্চ সজ্জার বিভিন্ন উপকরণ। থাকার মধ্যে ছিল শুধু নাটক

‘বিভাব’ কথার সাধারণ অর্থ কী? ‘বিভাব’ নাটকটির নামকরণ কতটা তাৎপর্যপূর্ণ, আলোচনা করো

‘বিভাব’ কথার সাধারণ অর্থ কী? ‘বিভাব’ নাটকটির নামকরণ কতটা তাৎপর্যপূর্ণ, আলোচনা করো। ‘বিভাব’ কথার সাধারণ অর্থ কী? ‘বিভাব’ নাটকটির নামকরণ কতটা তাৎপর্যপূর্ণ, আলোচনা করো। ভূমিকা / বিভাব শব্দের অর্থ : সংস্কৃত নাট্যশাস্ত্র অনুসারে, কাব্যে বা নাটকে শোক, হাস্য, রাগ, রতি, আনন্দ ইত্যাদি নয় প্রকার স্থায়ী ভাব উদ্ভবের হেতু বা কারণকে ‘ বিভাব ’ বলা হয়। নাট্যকারের উদ্দেশ্য : নাট্যকার শম্ভু মিত্রের বক্তব্য অনুযায়ী এই নাটকের লক্ষ্য ছিল হাসির ভাব জাগিয়ে তোলা। সেদিক থেকে বিচার করলে, নাটকের নামকরণের প্রধান উদ্দেশ্য এখানে সার্থক ভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। নাটকের বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ : দর্শকের মনোরঞ্জন হাসি কান্না উভয় মাধ্যমেই হয়। আলোচ্য নাটকে নাট্য দলের সম্পাদক নির্দেশ দেন, জনপ্রিয়তা অর্জনের লক্ষ্যে একটি হাসির নাটকের উপস্থাপনা করতে হবে। কারণ, বাঙালি ‘কাঁদুনে জাত’ — এই অপবাদ ঘোচাতে হবে বলে নাট্যকারের এই সিদ্ধান্ত। এছাড়া শিল্প সৌন্দর্যকে অতিক্রম করে বক্স অফিসে ভালো সাড়া পাওয়াও নাট্যকারের অন্যতম লক্ষ্য। তাই হাসির দৃশ্য তৈরি করার জন্য করা হয় নানান পরিকল্পনা। এই উদ্দেশ্য নিয়েই নাটকের প্রধ

গরিবের গতর এরা সস্তা দেখে

“গরিবের গতর এরা সস্তা দেখে” গরিবের গতর এরা সস্তা দেখে ক) বক্তা কে? খ) ‘এরা’ কারা?  অথবা,  বক্তা কাদের সম্পর্কে এই মন্তব্য টি করেছে? গ) এই বক্তব্যের কারণ কী? অথবা,  মন্তব্যটির প্রেক্ষাপট আলোচনা করো। ক) বক্তা কে? বক্তা হল প্রখ্যাত কথাকার মহাশ্বেতা দেবী রচিত ‘ভাত’ গল্পের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র বাসিনী। সে সুন্দরবনের বাদা অঞ্চলের বাসিন্দা এবং এই গল্পের প্রধান চরিত্র উৎসব নাইয়ার গ্রাম সম্পর্কের বোন। কলকাতার একটি বনেদী পরিবারে পরিচারিকার কাজ করার সূত্রে সে কলকাতায় এসেছে। খ) ‘এরা’ কারা? অথবা, বক্তা কাদের সম্পর্কে এই মন্তব্যটি করেছে? ‘এরা’ বলতে বক্তা বাসিনী তার মনিবের পরিবারের সেই সব সদস্যদের কথা বুঝিয়েছেন, যারা গরীব মানুষের কাজের ন্যায্য মূল্য বা পারিশ্রমিক দিতে চায় না। অথবা , এই মন্তব্যের বক্তা বাসিনী তার মনিবের পরিবারের সেই সব সদস্যদের সম্পর্কে এই মন্তব্যটি করেছে, যারা গরিব শ্রমজীবী মানুষের কাজের বিনিময়ে ন্যায্য মজুরি দিতে টালবাহানা করে। গ) এই বক্তব্যের কারণ কী? অথবা, মন্তব্যটির প্রেক্ষাপট আলোচনা করো। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে, উৎসব নাইয়া পরিবার-পরিজন হারিয়ে গ্রাম সম্পর

সেই সন্ধেয় অনেকদিন বাদে সে পেট ভরে খেয়েছিল

“সেই সন্ধেয় অনেকদিন বাদে সে পেট ভরে খেয়েছিল।” সেই সন্ধেয় অনেকদিন বাদে সে পেট ভরে খেয়েছিল। ক) ‘সে’ কে? খ) কোন্ সন্ধ্যেয় সে পেট ভরে খেয়েছিল? গ) সেই দিনটায় কী ঘটেছিল? ক) ‘সে’ কে? উদ্ধৃত অংশটি মরমী কোথাকার মহাশ্বেতা দেবীর ভাত গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে ‘সে’ বলতে এই গল্পের প্রধান চরিত্র উৎসব নাই আর কথা বলা হয়েছে, যে মাতলা নদীর বন্যায় সর্বস্বান্ত হয়ে কলকাতা এসেছে কাজের বিনিময়ে দুবেলা পেট ভরে ভাত খাওয়ার আশায়। খ) কোন্ সন্ধ্যেয় সে পেট ভরে খেয়েছিল? এই গল্পের উৎসব ভূমিহীন কৃষক। তার ওপর থাকে সুন্দরবনের বাদা অঞ্চলে। সেখানকার এক ফসলি জমিতে একবারই ধান হয়। সেবার উৎসবের মনিব সতীশ মিস্ত্রির ধানে মড়ক লাগে। ফলে সেখানে কাজ করার সুযোগ হারায়। অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটে তার। এক দিনে, সন্ধ্যাবেলয় উৎসব সহ গ্রামের অন্যান্যরা হিঞ্চে সেদ্ধ ও গুগলি সেদ্ধ নুন আর লঙ্কা পোড়া দিয়ে পেট ভরে খেয়েছিল। এই সন্ধ্যার পর পরই রাতের বেলা প্রচন্ড ঝড়-বৃষ্টি ও জলোচ্ছ্বাস শুরু হয়। এবং উৎসব নাইয়া পরিবার পরিজন হারিয়ে একা হয়ে যায়। ‘সেই সন্ধ্যায়’ বলতে এই সন্ধ্যার কথাই বলা হয়েছে। গ) সেই দ

মারতে মারতে উচ্ছবকে ওরা থানায় নিয়ে যায়।

“মারতে মারতে উচ্ছবকে ওরা থানায় নিয়ে যায়।” মারতে মারতে উচ্ছবকে ওরা থানায় নিয়ে যায়। ক) উচ্ছোব কে? খ) ওরা কারা? গ) কারা কেন তাকে থানায় নিয়ে যায়? ক) উচ্ছোব কে? প্রখ্যাত কথাকার মহাশ্বেতা দেবী রচিত ‘ভাত’ গল্প থেকে উদ্ধৃত অংশটি নেওয়া হয়েছে। এই গল্পের প্রধান চরিত্র উৎসব নাইয়া। সুন্দরবনের বাদাবন অঞ্চলে তার বসবাস। লেখাপড়া না জানা গ্রামীণ মানুষের উচ্চারণে উৎসব নামটা ‘উচ্ছব’ হিসেবে উচ্চারিত হয়। এই  উৎসব নাইয়াই এখানে উচ্ছব  নামে পরিচিত। খ) ‘ওরা’ কারা? ‘ওরা’ বলতে, রেলস্টেশন লাগোয়া এলাকার জনসাধারণকে বোঝানো হয়েছে, যারা পরদিন সকালবেলা পিতলের ডেকচি সহ উৎসবকে চোর সাব্যস্ত করে এবং মারতে মারতে থানায় নিয়ে যায়। খ) কারা কেন তাকে থানায় নিয়ে যায়? ভাতের প্রতি উৎসবের অত্যধিক আসক্তি তার জীবনে আর এক বিপর্যয় ডেকে আনে। বাড়ির বড় কর্তার যজ্ঞি চলাকালীন সময় হঠাৎ মৃত্যু হলে ইতিমধ্যেই রান্না হওয়া ভাত ফেলে দেয়ার নির্দেশ আসে বড় পিসিমার কাছ থেকে। কারণ, অশৌচ বাড়ির রান্না খেলে অমঙ্গল হয়। কিন্তু অনাহারি উৎসবের এই সিদ্ধান্ত ভালো লাগেনি। এই অবস্থায় সে অভিনব এক কৌশল অবলম্বন করে। ভাত

ফুটন্ত ভাতের গন্ধ তাকে বড় উতলা করে

“ফুটন্ত ভাতের গন্ধ তাকে বড় উতলা করে।” ফুটন্ত ভাতের গন্ধ তাকে বড় উতলা করে। ক) ‘তাকে’ বলতে এখানে কাকে ইঙ্গিত করা হয়েছে? খ) এই গন্ধ তাকে কেন উতলা করে? গ) ভাতের প্রতি অত্যধিক আসক্তি তার জীবনে কী পরিনতি ডেকে এনেছিল? ক) ‘তাকে’ বলতে এখানে কাকে ইঙ্গিত করা হয়েছে? আলোচ্য উদ্ধৃতিতে ‘তাকে’ বলতে মরমী কোথাকার মহাশ্বেতা দেবীর ভাত গল্পের মুখ্য চরিত্র সুন্দরবনের বাধা অঞ্চলের বাসিন্দা অন্নহীন উৎসব নাইয়ার কথা বলা হয়েছে। খ) এই গন্ধ তাকে কেন উতলা করে? উৎসব নাইয়া ভূমিহীন কৃষক। পরের জমিতে মজুর খেটে তার দিন চলে। সেবার ধান গাছে মড়ক লেগে কার্তিক মাসেই ধান খড় হয়ে যায়। সেই থেকে উৎসবরা সপরিবারে কখনো হাত পেটা কখনো সিটি পেটা আবার কখনো উপোস করে দিন কাটাচ্ছে। এরই মধ্যে ধেয়ে আসে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এক রাত্রিতে প্রচন্ড ঝড় ও মাতলা নদীর জলে উৎসবের ঘরবাড়ি এবং পরিবার পরিজন সবই ভেসে যায়। শুরু হয় উৎসবের অন্নহীন জীবন যাপন। উৎসবের কথায়, “সেই ক’দ্দি ঘরে আঁদা ভাত খাই না।” ক্ষুধার তীব্র জ্বালায় একসময় সে যেন প্রেতে পরিণত হয়। এ সময় পাড়া সম্পর্কের বোন তার মনিবের বাড়িতে কাজের বিনিময়ে দুবেলা দুমু

কিন্তু এমন দুর্যোগে ভগবানও কাথা মুড়ি দিয়ে ঘুমোন বোধ করি

“কিন্তু এমন দুর্যোগে ভগবানও কাথা মুড়ি দিয়ে ঘুমোন বোধ করি।” কিন্তু এমন দুর্যোগে ভগবানও কাথা মুড়ি দিয়ে ঘুমোন বোধ করি। ক) ‘এমন দুর্যোগ’ বলতে কোন দুর্যোগের কথা বলা হয়েছে? খ) দুর্যোগের বর্ণনা দাও গ) বক্তার কেন মনে হয়েছে ভগবান এমন দুর্যোগে কাঁথা মুড়ি দিয়ে ঘুমান? ক) ‘এমন দুর্যোগ’ বলতে কোন দুর্যোগের কথা বলা হয়েছে? গল্পের নাম ভাত। লিখেছেন মরমী কথাকার মহাশ্বেতা দেবী। এই গল্পের প্রধান চরিত্র হল উৎসব নাইয়া। সে মাতলা নদীর পাড়ে বসবাস করে। একদিন শীতের রাতে প্রচন্ড ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়। এই ঝড়ে উৎসবের ঘরের মাঝ খুঁটিটি মাতালের মতো আনন্দে টলতে থাকে। মাঝে মাঝে ঘরটা ‘ধনুষ্টংকার রোগীর মতো কেঁপেঝেঁকে’ ওঠে। ‘এমন দুর্যোগ’ বলতে উল্লিখিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও তার ভয়াল রূপকে বোঝানো হয়েছে। খ) দুর্যোগের বর্ণনা দাও প্রাকৃতিক দুর্যোগ গরিব মানুষের জীবনে গভীর সংকট ডেকে আনে। এই দুর্যোগ যত বেশি গভীর হয় সংকটের গভীরতা তত বাড়ে। আলোচ্য গল্পে উৎসব নাইয়া সুন্দরবনের বাধা অঞ্চলে মাতলা নদীর পাড়ে বসবাস করত। একদিন শীতের রাতে প্রচন্ড ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়। এই ঝড়ে উৎসবের ঘরের মাঝ খুঁটিটি যেন মাতালের মতো

আসল বাদাটা খোঁজ করা হয় না আর

“আসল বাদাটা খোঁজ করা হয় না আর” আসল বাদাটা খোঁজ করা হয় না আর ক) উচ্ছব কে? খ) সে কোন্ বাদার খোঁজ করতে চেয়েছিল? অথবা, আসল বাদা কোনটি? গ) কেন তার পক্ষে সেই বাদাটি খোঁজ করা হয়ে উঠল না অথবা, তা আর উৎসবের খোঁজ করা হয় না কেন? অথবা, উৎসব ‘আসল বাদা’ খুঁজতে যেতে পারে না কেন? ঘ) আসল বাদা কোথায় কীভাবে থেকে যায়? ঙ) উচ্ছবের এই অসমাপ্ত অনুসন্ধানের কারণ ও তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো। ক) উচ্ছব কে? প্রখ্যাত কথাকার মহাশ্বেতা দেবী রচিত ‘ভাত’ গল্প থেকে উদ্ধৃত অংশটি নেওয়া হয়েছে। এই গল্পের প্রধান চরিত্র উৎসব নাইয়া। সুন্দরবনের বাদা অঞ্চলে তার বসবাস। লেখাপড়া না জানা গ্রামীণ মানুষের উচ্চারণে এই উৎসব নামটাই ‘উচ্ছব’ নামে পরিচিত পেয়েছে। এই উৎসব নাইয়াই আসলে উচ্ছব। খ) সে কোন্ বাদার খোঁজ করতে চেয়েছিল? উৎসব নাইয়া ভূমিহীন কৃষক। পরের জমিতে কৃষি শ্রমিক হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করে। তাই ভাতের অভাব তার কোনদিন মেটেনি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে তাকে অর্ধ হারে কিংবা অনাহারে থাকতে হয়। অথচ শহরের বড়কর্তার বাড়িতে “ডুলে ডুলে কত রকম চাল থরে থরে সাজানো আছে।” উৎসব এসব দেখে অবাক হয়ে যায়। সে আরো অবাক হয়, যখন সে জ

ভাতে হাত ঢুকিয়ে দিতে সে স্বর্গ সুখ পায় ভাতের স্পর্শে

“ভাতে হাত ঢুকিয়ে দিতে সে স্বর্গ সুখ পায় ভাতের স্পর্শে।” ভাতে হাত ঢুকিয়ে দিতে সে স্বর্গ সুখ পায় ভাতের স্পর্শে। ক) কে কীভাবে এই ভাত জোগাড় করেছিল? অথবা, কে কিভাবে এই অভিজ্ঞতা লাভ করে? খ) তার এই অনুভূতির কারণ ব্যাখ্যা করো। গ) উদ্ধৃতাংশের তাৎপর্য লেখো। ক) কে কীভাবে এই ভাত জোগাড় করেছিল? অথবা, কে কীভাবে এই অভিজ্ঞতা লাভ করে? গল্পের নাম ভাত। লিখেছেন গল্পকার মহাশ্বেতা দেবী। এই গল্পের প্রধান চরিত্র উৎসব নাইয়া। দীর্ঘদিন অনাহারে থাকার পর সে কলকাতার একটি বনেদী বাড়িতে এসেছে। কাজের বিনিময়ে দুবেলা দুমুঠো ভাত খাওয়ার আশায়। এই উৎসব শেষ পর্যন্ত যেভাবে খিদের ভাত জোগাড় করেছিল তা ছিল খুবই করুন ও বেদনাদায়ক। অনাহারে থাকার কারণে উৎসবের শরীর দুর্বল ছিল। তা সত্ত্বেও সে প্রায় আড়াই মন কাঠ কাটে শুধুমাত্র ‘ভাতের হুতাসে’। কিন্তু হঠাৎ বাড়ির বুড়োকর্তা মারা যাওয়ায় তার ভাত খাওয়ার সুযোগ নষ্ট হয়ে যায়। অশৌচের সংস্কারের বশবর্তী হয়ে বাড়ির মালিক অভূক্ত উৎসবকে ভাত খেতে না দিয়ে ফেলে দেয়ার নির্দেশ দেয়। যুক্তি দেখানো হয়, এই ভাত খেলে অমঙ্গল হবে। তখন উৎসবের ধৈর্যচ্যুতী ঘটে। ভাত পাওয়ার জন্য

সে বুঝতে পারে সব ভাত ওরা পথে ফেলে দিতে যাচ্ছে

“সে বুঝতে পারে সব ভাত ওরা পথে ফেলে দিতে যাচ্ছে” — ২০২০ সে বুঝতে পারে সব ভাত ওরা পথে ফেলে দিতে যাচ্ছে ক) ‘ওরা’ বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে? খ) ওরা সব ভাত ফেলে দিতে যাচ্ছিল কেন? গ) সে কে? ঘ) বুঝতে পেরে সে কি করেছিল? ক) ‘ওরা’ বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে? উদ্ধৃত অংশটি প্রখ্যাত গল্পকার মহাশ্বেতা দেবী রচিত ভাত গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে। এই গল্পে উল্লিখিত ‘ওরা’ বলতে বাসিনীর মনিব বাড়ির লোকজনদের কথা বোঝানো হয়েছে। খ) ‘ওরা’ সব ভাত ফেলে দিতে যাচ্ছিল কেন? বড় বাড়ির বুড়োকর্তার যোগ্য চলাকালীন মৃত্যু হয়। বাড়িতে কেউ মারা গেলে প্রচলিত রীতি অনুযায়ী বাড়ির মানুষজনকে অশৌচ পালন করতে হয়। অশৌচ চলাকালীন বাড়িতে ভাত খেলে পরিবারের অমঙ্গল হয়। তাই বড় পিসিমার নির্দেশে বাড়ির সমস্ত ভাত বাসিনী ফেলে দিতে যাচ্ছিল। গ) ‘সে’ কে? এখানে ‘সে’ বলতে উৎসব নাইয়া ওরফে উচ্ছবকে বোঝানো হয়েছে, যে সুন্দরবনের বাদা অঞ্চল থেকে কলকাতার বড় বাড়িতে এসেছিল কাজের বিনিময়ে দুবেলা পেট ভরে ভাত খাওয়ার আশায়। ঘ) বুঝতে পেরে সে কী করেছিল এবং কেন করেছিল? প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে উৎসব নাইয়া দীর্ঘদিন অভুক্ত থেকেছে। আবার পরিবার

বাদার ভাত খেলে তবে তো সে আসল বাদাটার খোঁজ পেয়ে যাবে একদিন।" — ২০১৬

“বাদার ভাত খেলে তবে তো সে আসল বাদাটার খোঁজ পেয়ে যাবে একদিন।” — ২০১৬ বাদার ভাত খেলে তবে তো সে আসল বাদাটার খোঁজ পেয়ে যাবে একদিন। ক) ‘বাদা’ কাকে বলে? খ) এখানে কোন্ বাদার কথা বলা হয়েছে? গ) ‘আসল বাদা’ বলতে কোন্ বাদার কথা বলা হয়েছে? ঘ) উদ্দিষ্ট ব্যক্তির এরকম মনে হওয়ার কারণ কী? ক) ‘বাদা’ কাকে বলে? ‘বাদা’ শব্দের অর্থ হল বিস্তীর্ণ জলাভূমি। সাধারণ ভাবে দক্ষিণবঙ্গের অকর্ষিত ও জঙ্গলপূর্ণ অঞ্চলকে বাদা নামে অভিহিত করা হয়। কেউ কেউ সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলকেও বাদা নামে অভিহিত করেন। খ) এখানে কোন্ বাদার কথা বলা হয়েছে? প্রখ্যাত কথাকার মহাশ্বেতা দেবী রচিত ‘ ভাত ’ গল্প থেকে উদ্ধৃত অংশটি নেওয়া হয়েছে। এই গল্পে ‘বাদা’ বলতে দক্ষিণবঙ্গের সুন্দরবন অঞ্চলের বিস্তীর্ণ জলাভূমিকে বোঝানো হয়েছে, যা ধান চাষের জন্য বিখ্যাত। গ) ‘আসল বাদা’ বলতে কোন্ বাদার কথা বলা হয়েছে? উৎসব নাইয়া ভূমিহীন কৃষক। পরের জমিতে কৃষি শ্রমিক হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করে। তাই ভাতের অভাব তার কোনদিন মেটেনি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে তাকে অর্ধ হারে কিংবা অনাহারে থাকতে হয়। অথচ শহরের বড়কর্তার বাড়িতে “ডুলে ডুলে কত রকম চাল থর

দাঁতগুলো বের করে সে কামটের মতই হিংস্র ভঙ্গি করে।

“দাঁতগুলো বের করে সে কামটের মতই হিংস্র ভঙ্গি করে।” দাঁতগুলো বের করে সে কামটের মতই হিংস্র ভঙ্গি করে। ক) ‘কামট’ কী? খ) কে, কার প্রতি, কখন এ রূপ আচরণ করেছিল? গ) তার এরূপ আচরণের কারণ বিশ্লেষণ করো ক) ‘কামট’ কী? উদ্ধৃত অংশটি প্রখ্যাত কথাকার মহাশ্বেতা দেবীর লেখা ভাত গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে। এই গল্পে বর্ণিত ‘কামট’ বা ‘কামোট’ হল একধরণের সামুদ্রিক মাছ বিশেষ। এরা বঙ্গোপসাগর থেকে কখনও কখনও সুন্দরবনের বাদাবন অঞ্চলের নদী-খাঁড়িগুলোতে উঠে আসে। এদের দাঁতগুলো খুবই ধারালো এবং স্বভাবে হিংস্র প্রকৃতির। সাধারণ মানুষের কাছে হাঙ্গর হিসেবেও এদের পরিচিতি রয়েছে। খ) কে, কার প্রতি, কখন এরূপ আচরণ করেছিল? ভাত গল্পের প্রধান চরিত্র উৎসব নাইয়া তার গ্রাম সম্পর্কিত বোন বাসিনীর প্রতি এরূপ আচরণ করেছিল। দীর্ঘদিন অভুক্ত থাকার পর উৎসব কলকাতায় আসে কাজের বদলে দুবেলা দুমুঠো ভাত খাওয়ার আশায়। বাসিনীর সাহায্যে তার মনিবের বাসায় কাজও জোটে। আড়াই মন কাঠ কাটার পর সে এই ভেবে খুশি হয়েছিল যে, এবার তার খিদে মিটবে। কিন্তু যজ্ঞির শুরুতেই বাড়ির বুড়োকর্তা মারা গেলে প্রচলিত রীতি অনুযায়ী সমস্ত রান্না খাবার ফেলে দেয়ার

বাসিনী এনেছে। বাদায় থাকে, অথচ ভাতের আহিংকে এতখানি

১২) বাসিনী এনেছে। বাদায় থাকে, অথচ ভাতের আহিংকে এতখানি।” বাসিনী এনেছে। বাদায় থাকে, অথচ ভাতের আহিংকে এতখানি। ক) বাসিনী কে? খ) বাসিনী কাকে এনেছে? গ) ‘আহিংকে’ শব্দের প্রকৃত অর্থ কী? ঘ) কার সম্পর্কে এ কথা বলা হয়েছে? ঙ) তার ভাতের ‘আহিংকে’ এতখানি কেন? চ) ভাতের প্রতি তার কিরূপ আহিংকের প্রকাশ ঘটেছে? ক) বাসিনী কে? প্রখ্যাত কথাকার মহাশ্বেতা দেবী রচিত ভাত গল্পের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র বাসিনী। সে সুন্দরবনের বাদা অঞ্চলের বাসিন্দা। পরিচারিকার কাজের সূত্রে সে কলকাতায় এসেছে। এবং একটি বনেদি বড়লোক বাড়িতে কাজে নিযুক্ত হয়েছে, ওই বাড়ির বড় পিসিমার তত্ত্বাবধানে। খ) বাসিনী কাকে এনেছে? এই গল্পের প্রধান চরিত্র উৎসব নাইয়া বাসিনীর গ্রাম সম্পর্কে দাদা। উৎসব প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে ঘর সংসার হারিয়ে অনাহারে জীবন যাপন করছে। এই উৎসবকেই বাসিনী কাজের বিনিময়ে অন্নসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এই বড়লোক বাড়িতে এনেছে। গ) ‘আহিংকে’ শব্দের প্রকৃত অর্থ কী? ‘আহিংকে’ শব্দটি সুন্দরবন অঞ্চলের বাদাবন এলাকার মানুষ ব্যবহার করে, যার অর্থ লোভী বা লুব্ধ। শব্দটির প্রকৃত অর্থ হচ্ছে আকাঙ্ক্ষা। এই গল্পে আকাঙ্ক্ষা অ

উচ্ছবের হঠাৎ মনে হয় কলকাতা গিয়ে খেয়ে মেখে আসি।

“উচ্ছবের হঠাৎ মনে হয় কলকাতা গিয়ে খেয়ে মেখে আসি।” উচ্ছবের হঠাৎ মনে হয় কলকাতা গিয়ে খেয়ে মেখে আসি। ক) উচ্ছব কে? তার পরিচয় দাও। খ) উৎসবের হঠাৎ এরকম মনে হওয়ার কারণ কী? গ) উৎসবের আশা কতটা পূরন হয়েছিল? ক) উচ্ছব কে? তার পরিচয় দাও। প্রখ্যাত কথাকার মহাশ্বেতা দেবী রচিত ‘ভাত’ গল্প থেকে উদ্ধৃত অংশটি নেওয়া হয়েছে। এই গল্পের প্রধান চরিত্র উৎসব নাইয়া। সুন্দরবনের বাদাবন অঞ্চলে তার বসবাস। লেখাপড়া না জানা গ্রামীণ মানুষের উচ্চারণে উৎসব নামটা ‘উচ্ছব’ হিসেবে উচ্চারিত হয়। এই উৎসব নাইয়াই এখানে উচ্ছব  নামে পরিচিত। খ) উৎসবের হঠাৎ এরকম মনে হওয়ার কারণ কী? দুর্যোগের আকস্মিকতায় সাময়িকভাবে উৎসবের বুদ্ধি লোক পায়। বউ-ছেলেমেয়েকে ফিরে পাওয়ার আশায় ভেঙে পড়া ঘরের চালের সামনে পাগল প্রায় হয়ে বসে থাকে। তাই সরকারের দেয়া রান্না খিচুড়ি তার আর খাওয়া হয়নি। যেদিন সম্বিত ফিরল, তখন আর খিচুড়ি নেই। শুধুই শুকনো চাল দেওয়া হচ্ছে। অগত্যা উৎসব সেই চাল চিবিয়ে জল খেয়ে দিন কাটাতে থাকে। এই সময় মাঝে মাঝেই তার মনে পড়ে দুর্যোগের সেই রাতটার কথা। কিন্তু কোন কথা গুছিয়ে সে ভাবতে পারেনা। মাথার ভিতরটা

যা আর নেই, যা ঝড়-জল-মাতলার গর্ভে গেছে...

“যা আর নেই, যা ঝড়-জল-মাতলার গর্ভে গেছে, তা-ই খুঁজে খুঁজে উচ্ছব পাগল হয়েছিল।” — ২০১৭ যা আর নেই, যা ঝড়-জল-মাতলার গর্ভে গেছে, তা-ই খুঁজে খুঁজে উচ্ছব পাগল হয়েছিল। ক) উচ্ছব কে? খ) সে পাগল হয়েছিল কেন? গ) সে দিনের দুর্যোগের বর্ণনা দাও। ঘ) দুর্যোগটি উচ্ছবকে কীভাবে প্রভাবিত করেছিল? ক) উচ্ছব কে? প্রখ্যাত কথাকার মহাশ্বেতা দেবী রচিত ‘ ভাত ’ গল্প থেকে উদ্ধৃত অংশটি নেওয়া হয়েছে। এই গল্পের প্রধান চরিত্র উৎসব নাইয়া। সুন্দরবনের বাদা অঞ্চলে তার বসবাস। লেখাপড়া না জানা গ্রামীণ মানুষের উচ্চারণে এই উৎসব নামটাই ‘উচ্ছব’ নামে পরিচিত পেয়েছে। এই উৎসব নাইয়াই আসলে উচ্ছব। খ) সে পাগল হয়েছিল কেন? উৎসব নাইয়া সুন্দরবনের বাদা অঞ্চলের বাসিন্দা। দিন-আনা-দিন-খাওয়া নিম্নবর্গের মানুষ সে। যে বছর পোকায় বা কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ধান নষ্ট হয়, সে বছর সে ও তার পরিবারকে কখনও আধ পেটা, কখনও সিকি পেটা, আবার কখনও উপোস করে কাটাতে হয়। সেবার প্রাকৃতিক দুর্যোগে উৎসব নাইয়া ঘর ও সংসার দুটোই হারিয়ে ফেলে। পরিবার পরিজন হারানোর শোকে দিশেহারা হয়ে সে পাগল-প্রায় হয়ে পড়ে। এক সময় খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দেয়

লক্ষ্মী না আসতে সেধে ভাসান যাচ্ছে

২২) “লক্ষ্মী না আসতে সেধে ভাসান যাচ্ছে” লক্ষ্মী না আসতে সেধে ভাসান যাচ্ছে ক) লক্ষ্মী কে? খ) আসতে না আসতে সে সেধে ভাসান যাচ্ছে কেন? গ) উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো। ক) লক্ষ্মী কে? প্রখ্যাত কথাকার মহাশ্বেতা দেবীর ‘ ভাত ’ নামক ছোটগল্পে হতদরিদ্র উৎসব নাইয়া গ্রামের প্রতিবেশী সাধন বাবুর উদ্দেশ্যে এই উক্তিটি করেছেন। এই গল্পে দেখা যাচ্ছে, সতীশ মিস্ত্রি নামে এক কৃষকের ধান ক্ষেতে মড়ক লেগেছে। ফলে ধানগাছে গোছ আসার আগেই সে খড়ে পরিণত হয়েছে। অকালে মরে যাওয়া এই ‘ধান গাছ’কে উৎসব নাইয়া ‘লক্ষ্মী’ বলে অভিহিত করেছেন। খ) আসতে না আসতে সে সেধে ভাসান যাচ্ছে কেন? গ্রামীণ লোকসংস্কৃতিতে অন্নকে লক্ষ্মীর সঙ্গে তুলনা করা হয়। আর এই অন্ন অর্থাৎ ভাত আসে ধান থেকে। তাই ধানকেও লক্ষ্মীর সঙ্গে তুলনা করার রেওয়াজ রয়েছে। প্রধানত বর্ষায় ধান গাছ লাগানো হয়, আর শীতের শুরুতে ধান পেকে গেলে মাঠ থেকে তুলে আনা হয়। পুরো বাংলা জুড়ে শুরু হয় পৌষ পার্বণ। হিমমাখা কচি ঘাসের পথ ধরেই এই বাংলায় আবির্ভাব ঘটে হেমন্ত লক্ষ্মী বা পৌষ লক্ষীর। তাঁর দিব্য প্রসাদে বিস্তীর্ণ মাঠ ভরে ওঠে সােনালি ফসলে। কিন্তু সেবার, ধানে গোচ

ময়ূর ছাড়া কার্তিক আসবে নাকি?

“ময়ূর ছাড়া কার্তিক আসবে নাকি?” ময়ূর ছাড়া কার্তিক আসবে নাকি? ক) কে, কার সম্পর্কে এই মন্তব্য করেছেন? খ) যার সম্পর্কে এ কথা বলা হয়েছে, তার চেহারার বর্ণনা দাও। খ) লোকটি কোথায় কেন এসেছে লেখো। ক) কে, কার সম্পর্কে এই মন্তব্য করেছেন? উদ্ধৃত অংশটি কথাকার মহাশ্বেতা দেবী তাঁর ‘ ভাত ’ নামক ছোটগল্পে লিপিবদ্ধ করেছেন। এই গল্পে বড়ো বাড়ির বড়ো পিসিমা বাড়ির বড় বউকে উৎসব নাইয়া নামের কাজের লোকের পরিচয় দিতে গিয়ে এই মন্তব্য করেছেন। খ) যার সম্পর্কে এ কথা বলা হয়েছে, তার চেহারার বর্ণনা দাও। এই গল্পে বর্ণিত উৎসব নাইয়ার চেহারার যে বর্ণনা কথাকার মহাশ্বেতা দেবী বাড়ির বড় বউয়ের চোখ দিয়ে এঁকেছেন, তা বেশ অদ্ভুত এবং সন্দেহজনক। বড় বউয়ের বর্ণনায়, ‘কীরকম যেন উগ্র চাহনি। আর কোমর পর্যন্ত ময়লা লুঙ্গিটা অত্যন্ত ছোট। চেহারাটা বুনো বুনো।’ আসলে বন্যার কবলে পরিবার পরিজন হারিয়ে ক্ষুধার্ত উৎসব খাবারের খোঁজে কলকাতায় এসেছে। দীর্ঘদিন অনাহারে থাকার কারণে তার শরীর জীর্ণ হয়েছে। চেহারায় ফুটে উঠেছে অনাহারী এক করুণ অথচ উগ্র রূপ, যা বড় বাড়ির বড় বউয়ের ‘ভালো লাগেনি’। গ) লোকটি কোথায় এবং কেন এসেছে

একথা সত্যি না মিথ্যে কে জানে

“একথা সত্যি না মিথ্যে কে জানে।” একথা সত্যি না মিথ্যে কে জানে। ক) ‘একথা’ বলতে কোন্ কথাকে বোঝানো হয়েছে? খ) কথাগুলোর সত্যতা নিয়ে সংশয় দেখা দেওয়ার কারণ কী? ক) একথা বলতে কোন্ কথাকে বোঝানো হয়েছে? উদ্ধৃত অংশটি বাংলা সাহিত্যের বিখ্যাত কথাকার মহাশ্বেতা দেবীর লেখা ‘ভাত’ গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে। এই গল্পের অন্যতম প্রধান চরিত্র হল বড়ো পিসিমা। তিনি অবিবাহিত। তার অবিবাহিত থাকার কারণ বিষয়ে নানান কথা শোনা যায়। ‘একথা’ বলতে ‘বড়ো পিসিমার অবিবাহিত থাকার কারণ বিষয়ে প্রচলিত নানান কথা’র কথা বলা হয়েছে। খ) কথাগুলোর সত্যতা নিয়ে সংশয় দেখা দেওয়ার কারণ কী? বড় পিসিমা কলকাতার একটি বনেদী পরিবারের কর্ত্রী। এই পরিবারের ঐশ্বর্যের অভাব নেই। নেই ঐতিহ্য ও বনেদিয়ানার অভাব। প্রভূত সম্মান ও প্রতিপত্তির অধিকারী হওয়ায় সাধারণ মানুষ এই পরিবারের প্রতি সমীহ করে চলে। সাধারণ মানুষের পক্ষে তাই এই বাড়িতে হুটহাট করে ঢোকা যেমন সম্ভব নয়, তেমনি সম্ভব নয় এ বাড়ির গোপন কথা বের করে আনা। সে সাহসও কেউ দেখায় না। তাই সম্পূর্ণভাবে অনুমানের উপর ভিত্তি করে এলাকার মানুষ এই পরিবার সম্পর্কে মতামত দিয়ে থাকে। মূলত এ

তার বিয়ে হয়নি

“তার বিয়ে হয়নি।” তার বিয়ে হয়নি। ক) কার কথা বলা হয়েছে? খ) বিয়ে না হওয়ার কারণ কী? গ) সে কোন্ কোন্ দায়িত্ব পালন করত? ক) কার কথা বলা হয়েছে? মহাশ্বেতা দেবী র ছোট গল্প ‘ ভাত ’ থেকে নেওয়া হয়েছে উদ্ধৃত অংশটি। ‘তার’ বলতে এই গল্পের অন্যতম প্রধান চরিত্র বড় পিসিমার কথা বলা হয়েছে। খ) বিয়ে না হওয়ার কারণ কী? ‘ ভাত ’ গল্পে বড় পিসিমা বড়লোক বাড়ির মেয়ে হওয়া সত্ত্বেও তার বিয়ে হয়নি। বিয়ে না হওয়ার পিছনে বাড়ির নানাজন নানা ব্যাখ্যা দিয়ে থাকেন। পাড়া-প্রতিবেশীরা বলে থাকেন যে, বুড়ো কর্তার স্ত্রী মারা যাওয়ার পর সংসারের হাল ধরার জন্য বড় পিসিমাকেই দায়িত্ব নিতে হয়। সংসার সামলানোর জন্যই নাকি অঢেল টাকাপয়সা থাকা সত্ত্বেও তার বিয়ে দেওয়া হয়নি। আর বড়ো বাড়ির লোকেরা বলে, বড় পিসিমা নিজেই নাকি বলেছিলেন, তিনি শিব ঠাকুরকেই পতিদেবতা বলে মানেন। তাই তার সঙ্গে কোনো মানুষের বিবাহ দেওয়া উচিত নয়। তবে এসব কথার কোনটা সত্যিই আর কোনটা মিথ্যা তা কেউ জানে না। তাই সত্য যেটাই হোক, বড় পিসিমার যে আর বিয়ে করাটা হয়ে ওঠেনি — এ সত্য সবাই মানে। গ) সে কোন্ কোন্ দায়িত্ব পালন করত? বড় পিসি

এ সংসারে সব কিছুই চলে বড় পিসিমার নিয়মে

“এ সংসারে সব কিছুই চলে বড় পিসিমার নিয়মে।” ২০১৮, ২০২২ এ সংসারে সব কিছুই চলে বড় পিসিমার নিয়মে। ক) কোন সংসারের কথা বলা হয়েছে? খ) বড় পিসিমা কে? খ) গল্পে তার চরিত্রের কি পরিচয় পাওয়া যায়? ক) কোন সংসারের কথা বলা হয়েছে? আলোচ্য উদ্ধৃতিটি লেখিকা মহাশ্বেতা দেবী র ‘ ভাত ’ গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে। এই গল্পটি কলকাতার একটি বনেদি পরিবারকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। এখানে ‘সংসার’ বলতে এই পরিবারের কথাই বলা হয়েছে। খ) বড় পিসিমা কে? বড় পিসিমা হচ্ছেন এই বনেদি বাড়ির সর্বময় কর্ত্রী। তিনি একজন অবিবাহিতা বয়স্কা মহিলা। সংসারের প্রতি রয়েছে তার গভীর দায়িত্ববোধ। বাড়ির লোকেরা বলে তার বিয়ে হয়েছে শিব ঠাকুরের সঙ্গে। খ) গল্পে তার চরিত্রের কী পরিচয় পাওয়া যায়? মহাশ্বেতা দেবীর ছোট গল্প ‘ ভাত ’-এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হলো বড় পিসীমা। কারণ, তিনি এই বাড়ির সর্বময় কর্ত্রী। ১) ঈশ্বরের প্রতি গভীর অনুরাগ : এই বাড়ির বুড়ো কর্তার স্ত্রী বিয়োগ হলে তিনি তার জ্যেষ্ঠা বিবাহযোগ্য কন্যাকে বিবাহ দেননি। সংসার সামলানোর দায়িত্ব এসে পড়ে তার কাঁধে। ঈশ্বরের প্রতি গভীর অনুরাগে তিনি এই দায়িত্ব খুশি

লোকটার চাহনি বড় বাড়ির বড় বউয়ের প্রথম থেকেই ভালো লাগেনি

“লোকটার চাহনি বড় বাড়ির বড় বউয়ের প্রথম থেকেই ভালো লাগেনি” লোকটার চাহনি বড় বাড়ির বড় বউয়ের প্রথম থেকেই ভালো লাগে ক) লোকটা কে? খ) তার চাহনির বিশেষত্ব কী ছিল বলে তোমার মনে হয়? গ) তার চাহনি বড় বউয়ের ভালো লাগেনি কেন? ক) লোকটা কে? উদ্ধৃত অংশটি গল্পকার মহাশ্বেতা দেবী র রচিত ভাত গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে। এই গল্পে প্রধান চরিত্র উৎসব নাইয়া। এখানে লোকটা বলতে এই উৎসব নাইয়াকেই বোঝানো হয়েছে। খ) তার চাহনির বিশেষত্ব কী ছিল বলে তোমার মনে হয়? উৎসব নাইয়া সুন্দরবন এলাকায় বাদা অঞ্চলে বাসিন্দা। অনাহার ও অর্থাভাব তার নিত্য সঙ্গী। তারই প্র ভাব পড়েছে তার চাহনি ও পোশাক আশাকের উপর। দীর্ঘদিন অনাহারে থাকার ফলে তার চাহনি হয়ে গেছে উগ্র। চেহারায় বুনো বুনো ছাপ পড়েছে। অর্থাভাবের কারণে তার পরনের লুঙ্গিটা ছোট এবং অত্যন্ত ময়লা। গ) তার চাহনি বড় বউয়ের ভালো লাগেনি কেন? এই গল্পের বড় বউ সম্ভ্রান্ত ঘরের মহিলা। অভাব কাকে বলে তা সে দেখেনি। পেটের খিদে কীভাবে একজন মানুষের চারিত্রিক অবনমন ঘটিয়ে দিতে পারে, সে বিষয়ে তার কোনই অভিজ্ঞতা নেই। তাই উৎসব নাইয়ার ক্ষুধার্ত ও অভাবগ্রস্থ দেহের যন্ত্রণাক

ভাত গল্প অবলম্বনে উৎসব নাইয়া চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো।

  ১) ‘ভাত’ গল্প অবলম্বনে উৎসব নাইয়া চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো। ‘ভাত’ গল্প অবলম্বনে উৎসব নাইয়া চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো অথবা, “পেটে ভাত নেই বলে উৎসব প্রেত হয়ে আছে” — উদ্ধৃত অংশের আলোকে উৎসবের চরিত্র বিশ্লেষণ করো। ভূমিকা : মহাশ্বেতা দেবী র ছোটগল্প ‘ ভাত ’। তার কেন্দ্রীয় চরিত্র উৎসব নাইয়া নিম্নবর্গীয় সমাজ ব্যবস্থার একজন প্রতিনিধি। তার চাহনি উগ্র, চেহারাটা বুনো বুনো। পরনে অত্যন্ত ছোট ও ময়লা লুঙ্গি। চেহারা ও চাহনি দেখেই বাড়ির বড় বউ-সহ পাঠকেরও সন্দেহ হয়েছিল তার স্বভাব চরিত্র সম্পর্কে। মন জুড়ে মনুষ্যত্ববোধ : অথচ উৎসবের জীবনে বিপর্যয় নেমে আসার আগে পর্যন্ত তার মধ্যে কোমলতার স্পর্শ ছিল। সতীশ মিস্ত্রির ধানে মড়ক লাগলে ধানের প্রতি পরম মমতায় সে কেঁদে ভাসায়। ভেসে যাওয়া ঘরের চালের নিচে আপন জনের স্বর শোনার আশায় সে খাওয়া-দাওয়া ভুলে বসে থাকে। অসম্ভব জেনেও পাগলের মত বলতে থাকে, “রা কাড় অ চুন্নুনির মা।” কঠোর পরিশ্রমী : উৎসব আগা গোড়াই অত্যন্ত পরিশ্রমী। বাদা বনে থাকতেই তার এই পরিশ্রমী মানসিকতার পরিচয় পাওয়া মেলে। গ্রাম সম্পর্কিত বোন বাসিনীর মনিবের বাড়িতে এসেও সে তার পরিশ্রম

ছোটগল্প : ভাত — মহাশ্বেতা দেবী

 দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা ছোটগল্প : ভাত — গল্পকার মহাশ্বেতা দেবী ছোটগল্প : ভাত — মহাশ্বেতা দেবী   লোকটার চাহনি বড় বাড়ির বড় বউয়ের প্রথম থেকেই ভালো লাগেনি। কিরকম যেন উগ্র চাহনি। আর কোমর পর্যন্ত ময়লা লুঙ্গিটা অত্যন্তই ছোট। চেহারাটা বুনুবুণু। কিন্তু বামুন ঠাকুর বলল, ভাত খাবে কাজ করবে। কোথা থেকে আনলে? এ সংসারে সবকিছুই চলে বড় পিসিমার নিয়মে। বড় পিসিমা বড় বউয়ের পিসি শাশুড়ি হন। খুবই অদ্ভুত কথা। তার বিয়ে হয়নি। সবাই বলে, সংসার খেলবার কারণে অমন বড়লোক হয়েও ওরা মেয়ের দিয়ে দেয়নি। তখন বউ মরে গেলে বুড়ো কর্তা সংসার নিয়ে নাটা-ঝামটা হচ্ছিল। বড় বাড়ির লোকেরা বলে, ওর বিয়ে ঠাকুরের সঙ্গে। উনি হলেন দেবতার সেবিকা। বড় বাড়িতে শিবমন্দিরও আছে একটা। বুড়ো কর্তা এ রাস্তার সবগুলো বাড়িই শিব-মহেশ্বর-ত্রিলোচন-উমাপতি, এমন বহু নামে শিবকে দিয়ে রেখেছিলেন। দূরদর্শী লোক ছিলেন। তার জন্যই এরা করে খাচ্ছে। বড় পিসিমা নাকি বলেছিলেন, উনি আমার পতিদেবতা। মানুষের সঙ্গে বিয়ে দিও না। এসব কথা সত্যি না মিথ্যে কে আনে। বড়ো পিসিমা চিরকাল এ সংসারে হেঁশেল দেখেছেন, ভাড়াটে বাড়িতে মিস্তিরি লাগিয়েছেন এবং তাঁর বাবার সেবা ক